গারো শিশুকে পিটিয়ে জোরপূর্বক বিয়ে দেওয়ার অভিযোগ ইউপি সদস্যের বিরুদ্ধে

শিশুটিকে চুলের মুঠি ধরে পেটাচ্ছেন ইউপি সদস্য জাহাঙ্গীর আলম। মোবাইলে এই দৃশ্য ভিডিও করছেন আরেক ব্যক্তি। ছবি: ভিডিও থেকে নেওয়া

গাজীপুরের কালিয়াকৈর উপজেলার শিমুলিয়া এলাকায় এক গারো মেয়েশিশুকে (১৪) অপবাদ দিয়ে পেটানোর অভিযোগ উঠেছে ইউনিয়ন পরিষদের (ইউপি) এক সদস্যের বিরুদ্ধে।

অভিযুক্ত ফুলবাড়ীয়া ইউনিয়ন পরিষদের ৪ নম্বর ওয়ার্ডের সদস্য মো. জাহাঙ্গীর আলম শিশুটিকে বেধড়ক পেটানোর পর জোর করে এক তরুণের সঙ্গে বিয়ে দেন। এরপর আরও বিপাকে পড়েছে শিশুটির পরিবার।

গারো শিশুটি স্থানীয় একটি বেসরকারি বিদ্যালয়ের অষ্টম শ্রেণির শিক্ষার্থী। তাকে পেটানোর ভিডিওটি এরমধ্যে সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে ছড়িয়ে পড়েছে।

ওই শিশু, শিশুটির মা এবং স্থানীয়দের সঙ্গে কথা বলে জানা যায়, গত ২৬ মে বিকেলে প্রতিবেশী এক তরুণ শিশুটির বাড়িতে আসে। সে সময় শিশুটির মাও বাড়িতে ছিলেন। ওই তরুণের সঙ্গে শিশুটির সম্পর্ক মামা-ভাগনির।

তারা বলছেন, ওই তরুণ শিশুটির বাড়িতে থাকা অবস্থাতেই ইউপি সদস্য জাহাঙ্গীর সেখানে লোকজন নিয়ে আসেন। এসেই তিনি শিশুটিকে মারধর শুরু করেন। ওই তরুণের সঙ্গে জোর করে বিয়ে দিতে বাধ্য করেন। জানান, পরে বিয়ে নিবন্ধন করা হবে।

অভিযুক্ত ইউপি সদস্য জাহাঙ্গীর আলম। ছবি: সংগৃহীত

শিশুটির বাবা একজন দিনমজুর। তিনি জানান, ঘটনার দিন তিনি বাড়িতে ছিলেন না। বলেন, '২ দিন আমার মেয়ের সঙ্গে থাকার পর ওই ছেলের কোনো খোঁজ পাওয়া যাচ্ছে না। আমার মেয়ে নাবালিকা। বিয়ের কাগজপত্রের জন্য মেম্বারের (জাহাঙ্গীর আলম) কাছে কয়েকবার আমার বউকে পাঠিয়েছি। সেটাও পাইনি।'

এ ব্যাপারে থানায় অভিযোগ করা হলেও কোনো সুরাহা হয়নি জানিয়ে অসহায় এই বাবা বলেন, 'আমরা গরিব মানুষ। একদিন কাজ না করলে ভাত জোটে না। এ অবস্থায় কার বিরুদ্ধে কথা বলব? কার বিচার চাইব? সে সাহস আমাদের নেই।'

সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে ছড়িয়ে পড়া ভিডিওটিতে দেখা গেছে, ঘরে খাটের ওপর বসে থাকা শিশুটিকে চুলের মুঠি ধরে বেধড়ক পেটাচ্ছেন জাহাঙ্গীর আলম। এ সময় তাকে বলতে শোনা যায়, 'এসব কাজ কবে থেকে শুরু করেছিস? আর করবি?'

অভিযোগের বিষয়ে জানতে চাইলে কালিয়াকৈর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) আকবর আলী খান দ্য ডেইলি স্টারকে বলেন, 'অভিযোগ প্রদানের বিষয়টি আমার জানা নেই। খোঁজ নিচ্ছি।'

ডেইলি স্টারের সঙ্গে কথোপকথনে শিশুটিকে মারধরের বিষয়টি স্বীকার করেন অভিযুক্ত ইউপি সদস্য জাহাঙ্গীর আলম। এ সংক্রান্ত ভিডিওটি ভাইরাল হওয়ায় আফসোস করে তিনি বলেন, 'কে কখন ভিডিও করেছে বুঝতে পারিনি। আমি একটি আইডিতে ফুটেজটি দেখেছি। নিউজ করলে বুঝে করেন।'

Comments

The Daily Star  | English
Reforms vs election

Reforms vs election: A distracting debate

Those who place the election above reforms undervalue the vital need for the latter.

7h ago