মালিক সমিতির বাধায় বোয়ালমারী ফিরে গেল ঢাকাগামী বিআরটিসি বাস
ফরিদপুরের বোয়ালমারী থেকে ছেড়ে আসা ঢাকাগামী একটি বিআরটিসি বাস ভাঙ্গায় মালিক সমিতির বাধার মুখে পড়ে। ফরিদপুর জেলা বাস মালিক সমিতির লোকজনের বাধায় যাত্রী নামিয়ে বাসটি বোয়ালমারী ফিরে যেতে বাধ্য হয়।
আজ বুধবার সকালে ঢাকা-খুলনা মহাসড়কে ভাঙ্গা পৌর কার্যালয়ের সামনের সড়কে এ ঘটনা ঘটে।
বিআরটিসি বাসটি সকাল ৭টায় বোয়ালমারী থেকে ছেড়ে আসে। সহস্রাইল, ব্যাসপুর, মাঝিগাতি, ভাটিয়াপাড়া হয়ে সেটি ভাঙ্গা চৌরাস্তা এলাকায় পৌঁছালে ফরিদপুর বাস মালিক সমিতির লোকজনের বাধার মুখে পড়ে। পরে বাসটি থেকে সব যাত্রী নামিয়ে দেওয়া হয়।
গতকাল মঙ্গলবার বিকেলে আওয়ামী লীগের সভাপতিমণ্ডলীর সদস্য ফরিদপুর-১ আসনের সাবেক সংসদ সদস্য আব্দুর রহমান এ রুটে বিআরটিসি বাস চলাচল ভার্চুয়ালি উদ্বোধন করেন।
ভাঙ্গা হয়ে ঢাকার গুলিস্তানের উদ্দেশে ছেড়ে যাওয়া এ এসি বাসটিতে যাত্রীপ্রতি ভাড়া নির্ধারণ করা হয়েছিল সাড়ে ৫০০ টাকা।
বাসটির এক যাত্রী ও বোয়ালমারী বাজারের ব্যবসায়ী আশিকুর রহমান (৩০) দ্য ডেইলি স্টারকে জানান, বোয়ালমারী থেকে ভাঙ্গা যাওয়ার পর যাত্রীদের নামিয়ে দেওয়া হয়।
ওই বাসের কর্মী তারিকুল ইসলাম ডেইলি স্টারকে বলেন, 'বাসটি ভাঙ্গা পৌরসভার সামনে এক্সপ্রেসওয়েতে প্রবেশের আগমুহূর্তে তাদের গতিরোধ করা হয়। ফরিদপুর জেলা বাস মালিক গ্রুপের সাধারণ সম্পাদক আনিসুর রহমানের নেতৃত্বে প্রায় ১০০ জন মহাসড়কে দাঁড়িয়ে বাসটি থামিয়ে দেয়। এরপর তারা বাসের চালক রাকিবুল ইসলামের ওপর চড়াও হয় এবং বাসের চাবি ছিনিয়ে নেয়।'
তিনি বলেন, 'আমি বাধা দিতে গেলে তারা আমাকেও হুমকি দেয়। এ সময় যাত্রীদের সঙ্গে চরম অসৌজন্যমূলক আচরণ করে তাদের বাস থেকে নামিয়ে দিতে বাধ্য করে তারা।'
বিআরটিসি বাসটির চালক রাকিবুল হাসান ডেইলি স্টারকে বলেন, 'মালিক সমিতির লোকজন আমাদের বাস থেকে নামিয়ে মারধর করে। এই লাইনে বাস চালালে হাত-পা কেঁটে দেওয়ার হুমকিও দেয় তারা।'
স্থানীয় সূত্র জানায়, পদ্মা সেতু চালু হওয়ার পর ফরিদপুরের বিভিন্ন উপজেলা থেকে বিআরটিসি বাস চলাচলের দাবি ওঠে। এ দাবির পরিপ্রেক্ষিতে বিআরটিসি কর্তৃপক্ষ এর আগে ফরিদপুরের নগরকান্দা থেকে বাস চালু করে।
জানতে চাইলে ফরিদপুর জেলা বাস মালিক গ্রুপের সাধারণ সম্পাদক আনিসুর রহমান ডেইলি স্টারকে বলেন, 'কোনো আলোচনা ছাড়াই বোয়ালমারী থেকে বিআরটিসি বাসটি চলাচল শুরু করে। এ কারণে ভাঙ্গা থেকে যাত্রীদের নামিয়ে ওই বাস চলাচল বন্ধ করে দেওয়া হয়েছে। বিষয়টি প্রশাসনও জানে।'
তিনি বলেন, 'বিআরটিএ দক্ষিণবঙ্গের ২৩ জেলায় পদ্মা সেতু হয়ে বিআরটিসি বাস চলাচলের যে তালিকা দিয়েছে, সেখানে কোনো উপজেলাভিত্তিক বাস চলাচলের অনুমতি নেই। আর ফরিদপুরে বিআরটিসির কোনো ডিপো নেই৷ কুমিল্লা ডিপোর বাস এখানে এনে ওই ডিপোর ম্যানেজারের নামে লিজ নিয়ে বাস চালানো হচ্ছিল।'
জানতে চাইলে বিআরটিসির ম্যানেজার (অপারেশন-কুমিল্লা ডিপো) মো. কামরুজ্জামান ডেইলি স্টারকে জানান, জেলা বাস মালিক গ্রুপের বিআরটিসি বাস বন্ধ করার কোন এখতিয়ার নেই। ওই রুটে বিআরটিসির বাস চলাচল বন্ধ করা ঠিক হয়নি।
ফরিদপুরের পুলিশ সুপার মো. আলিমুজ্জামান বলেন, 'বাস চলাচলের বিষয়ে একটি ঝামেলা হয়েছে। বিষয়টি গুরুত্ব সহকারে দেখা হচ্ছে। আশা করছি এ সমস্যার সমাধান হয়ে যাবে।'
Comments