‘অন্য মার্কার এজেন্ট কেন্দ্রে ঢুকলে হাত ভেঙে যমুনায় নিক্ষেপ করা হবে’
জামালপুরের সরিষাবাড়ী উপজেলা পরিষদ নির্বাচনে নিজেদের প্রার্থী ছাড়া অন্য প্রার্থীর এজেন্টকে কোনো কেন্দ্রে ঢুকতে দেওয়া হবে না এবং কেউ ঢুকলে তার হাত ভেঙে যমুনা নদীতে নিক্ষেপ করা হবে বলে হুঁশিয়ারি দিয়েছেন আওয়ামী লীগের এক নেতা।
চেয়ারম্যান পদপ্রার্থী রফিকুল ইসলামের (আনারস) নির্বাচনী পথসভায় এ কথা বলেন উপজেলা আওয়ামী লীগের সদস্য এবং সাবেক ইউপি চেয়ারম্যান খন্দকার মোতাহার হোসেন জয়।
মঙ্গলবার (২৩ এপ্রিল) রাতে উপজেলার পিংনা ইউনিয়ন পরিষদের সামনে মিছিল পরবর্তী এ পথসভা অনুষ্ঠিত হয়। বুধবার এ সংক্রান্ত ভিডিও সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে ছড়িয়ে পড়লে এলাকায় প্রতিক্রিয়ার সৃষ্টি হয়।
খন্দকার মোতাহার হোসেন জয় বলেন, 'অন্য কোনো মার্কার এজেন্ট কোনো কেন্দ্রে দিতে দেবো না। এজেন্ট দিলে তার হাত বাড়ি দিয়ে ভেঙে আমরা যমুনা নদীতে নিক্ষেপ করব।'
একই পথসভায় উপজেলা আওয়ামী লীগের শিক্ষা ও মানবসম্পদ বিষয়ক সম্পাদক এবং সুজাত আলী কলেজের অধ্যক্ষ সাইদুল হাসান সাইদ বলেন, 'আমাদের বিরুদ্ধে যারা কথা বলে, তাদের জবান আমরা বন্ধ করে দেবো। আমরা আগামী ৮ মের নির্বাচনে ঐক্যবদ্ধ থাকব, আমরা অন্য কোনো মার্কার কোনো এজেন্ট দিতে দেবো না। রফিক সাহেবকে উপজেলা চেয়ারম্যান হিসেবে আজকেই ঘোষণা দিলাম।'
তিনি প্রতিপক্ষের লোকদের হুঁশিয়ারি দিয়ে বলেন, 'সাবধান হয়ে যান, আমাদের মাঝে অসন্তোষ ও হানাহানির চেষ্টা করবেন না। আপনাদের দাঁত ভেঙে দেওয়া হবে। যাদের দাঁত নেই, তাদের চাপার হাড্ডি ভেঙে দেওয়া হবে।'
সভায় প্রধান অতিথির বক্তব্য দেন উপজেলা আওয়ামী লীগের সাংগঠনিক সম্পাদক ও চেয়ারম্যান পদপ্রার্থী রফিকুল ইসলাম।
দুই নেতার বক্তব্যের ব্যাপারে মন্তব্য জানতে তার মোবাইলে ফোন দেওয়া হলে তাকে পাওয়া যায়নি।
বক্তব্যের বিষয়ে উপজেলা আওয়ামী লীগের শিক্ষা ও মানবসম্পদ বিষয়ক সম্পাদক এবং সুজাত আলী কলেজের অধ্যক্ষ সাইদুল হাসান সাইদ বলেন, 'এ ব্যাপারে মন্তব্যের প্রয়োজন নাই। আমরা যা বলছি, বলছিই। অনলাইনে যেহেতু দেখছেন, বলে ফেললে তো আর কিছু করা যাবে না।'
তিনি আরও বলেন, 'ওই বক্তব্যের আগে আরও কথা বলেছি। সরকারে আওয়ামী লীগ, এমপি আমাদের। সামস উদ্দিন এবং অ্যাডভোকেট আব্দুল্লাহ্ উপজেলা চেয়ারম্যান পদে রফিকুল ইসলামকে সমর্থন দিয়ে প্রার্থিতা প্রত্যাহার করেছেন, তাদের অভিনন্দন। পিংনা বাজারে খাজনা মওকুফ করা হয়েছে, সৌন্দর্যবর্ধন ও অবৈধ দখলদার মুক্ত করা হচ্ছে। এসব কাজে যারা বাধা দেবে তাদের দাঁতভাঙা জবাব দেওয়া হবে।'
এ বিষয়ে উপজেলা আওয়ামী লীগের সদস্য এবং সাবেক ইউপি চেয়ারম্যান খন্দকার মোতাহার হোসেন জয়ের বক্তব্য জানতে তার মোবাইলে কল করা হলে তা বন্ধ পাওয়া যায়।
উল্লেখ্য, আসন্ন উপজেলা পরিষদ নির্বাচনে চেয়ারম্যান পদে চারজন প্রার্থী ছিলেন। এরমধ্যে পোগলদিঘা ইউনিয়ন আওয়ামী লীগের সভাপতি ও সাবেক ইউপি চেয়ারম্যান সামস উদ্দিন এবং জেলা আওয়ামী লীগের আইন বিষয়ক সম্পাদক অ্যাডভোকেট মো. আব্দুল্লাহ্ নানা নাটকীয়তা ও দেনদরবার শেষে তাদের প্রার্থিতা প্রত্যাহার করেন। শেষ পর্যন্ত রফিকুল ইসলাম (আনারস) ও তালেব উদ্দিন (দোয়াতকলম) প্রতিদ্বন্দ্বিতা করছেন।
Comments