১০ বছরে এমপি শিমুলের সম্পদ বেড়েছে ১৪ গুণ, স্ত্রীর ৬৯ গুণ
গত ১০ বছরে নাটোর-২ আসনের আওয়ামী লীগের সংসদ সদস্য শফিকুল ইসলাম শিমুলের স্থাবর ও অস্থাবর সম্পদ বেড়েছে প্রায় ১৪ গুণ। এই সময়ের মধ্যে তার স্ত্রী শামীমা সুলতানা জান্নাতীর সম্পদ বেড়েছে ৬৯ গুণের বেশি।
২০১৩ সালে দাখিল করা হলফনামা অনুযায়ী শিমুলের নিজের মোট সম্পদ ছিল ৩১ লাখ ৩৭ হাজার ৩৩৬ টাকা। আর তার স্ত্রীর ছিল ১৫ ভরি সোনাসহ ১০ লাখ ৭৫ হাজার টাকা।
এবারের হলফনামায় শিমুলের মোট সম্পদ দেখানো হয়েছে ৪ কোটি ৬৫ লাখ ৩১ হাজার ৬৪৮ টাকা এবং তার স্ত্রীর ৭ কোটি ৫৭ লাখ ৭১ হাজার ৭০৬ টাকা।
দশম, একাদশ ও দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচন উপলক্ষে দাখিল করা হলফনামা থেকে শিমুল দম্পতির সম্পদবৃদ্ধির এই চিত্র পাওয়া যায়।
শফিকুল ইসলাম শিমুল নাটোর সদর উপজেলা চেয়ারম্যান থেকে ২০১৪ সালের একতরফা নির্বাচনে তিনি এমপি নির্বাচিত হন। এর পর থেকে লাফিয়ে লাফিয়ে বেড়েছে এই দম্পতির সম্পদ।
২০১৮ সালে শিমুলের স্থাবর-অস্থাবর সম্পদ বেড়ে দাঁড়ায় ৩ কোটি ৮৩ লাখ ২৮ হাজার ৯০৮ টাকা। ২০১৮ সালের হলফনামায় শিমুলের স্ত্রীর সম্পদের পরিমাণ বেড়ে হয় ১ কোটি ৮৫ লাখ ১৭ হাজার ৬৯৯ টাকা।
শিমুল ২০১৩ সালের হলফনামায় পেশা হিসেবে দেখিয়েছিলেন ঠিকাদারি এবং সরবরাহকারী। ব্যবসা থেকে বার্ষিক আয় দেখানো হয়েছিল ৩ লাখ ২৩ হাজার ৯২০ টাকা। উপজেলা চেয়ারম্যান হিসেবে সম্মানী বাবদ আয় ছিল ২ লাখ ৪৬ হাজার টাকা। তবে তখন স্ত্রীর কোনো পেশা উল্লেখ করেননি তিনি।
তখন শিমুলের অস্থাবর সম্পত্তি হিসেবে ছিল নগদ ১১ লাখ ১২ হাজার ৩৩৬ টাকা। নিজের নামে ব্যাংকে জমা দেখিয়েছিলেন ৭ লাখ টাকা। স্থাবর সম্পত্তির মধ্যে ছিল শুধু ২৫ হাজার টাকা মূল্যের ৩৩ শতাংশ কৃষি জমি।
অন্যদিকে তার স্ত্রীর বাৎসরিক আয় ছিল শূন্য। তার কোনো স্থাবর সম্পত্তিও ছিল না।
২০১৮ সালে শিমুলের নগদ টাকার পরিমাণ বেড়ে হয় ১ কোটি ১৫ হাজার ৪৩ লাখ ৩০৪ টাকা। ব্যাংক এবং আর্থিক প্রতিষ্ঠানে ছিল ১ কোটি ২৬ লাখ ৬৭ হাজার ৪০৪ টাকা, পোস্টাল সেভিংস সার্টিফিকেট ৩৩ লাখ টাকার এবং সঞ্চয়পত্রে ছিল ৪০ লাখ টাকা। তখন শিমুলের ব্যক্তিগত ঋণ ছিল ৫০ লাখ টাকা এবং ব্যাংক ঋণ ছিল ১০ লাখ ১ হাজার ৩৮৪ টাকা।
স্থাবর সম্পত্তির মধ্যে শিমুলের ছিল ১ লাখ ১৩ হাজার হাজার টাকার ৬৪ দশমিক ৩৭ শতাংশ কৃষি জমি এবং ৩ শতাংশ অকৃষি জমি, যার মূল্য ১ লাখ ২৩ হাজার ২০০ টাকা। স্ত্রীর নামে ছিল ১৬ লাখ ৩৫ হাজার ২০০ টাকার মূল্যের ১৪ দশমিক ১১ শতাংশ অকৃষি জমি। তবে বাড়ি, ফ্ল্যাট, দালান কিছু ছিল না তার।
২০২৩ সালের হলফনামা অনুযায়ী, শিমুলের স্ত্রীর নামে ৪ কোটি ৪১ লাখ টাকার বাড়ি এবং ফ্ল্যাট আছে। এর মধ্যে তিনতলা বাড়ি মূল্য ৩ কোটি ৫৯ লাখ ৪২ হাজার ৫০ টাকার এবং ফ্ল্যাটের মূল্য ৮১ লাখ ৭৫ হাজার টাকা। তার নগদ টাকা আছে ১ কোটি ৫৬ লাখ ৬৯ হাজার ৪৭০ টাকা। ব্যাংক এবং আর্থিক প্রতিষ্ঠানে আছে ৭৮ হাজার ৮৭১ টাকা, ৫০ লাখ টাকার শেয়ার, এফডিআর ৬৯ লাখ ৬ হাজার ৩১৫ টাকা, ৩৪ লাখ ৫০ হাজার টাকার ব্যক্তিগত গাড়ি, ৩৫ ভরি সোনা।
এখন শিমুলের নগদ টাকার পরিমাণ ১ কোটি ৫৬ লাখ ৬৯ হাজারর ৪৭০ টাকা, ব্যাংক এবং আর্থিক প্রতিষ্ঠানে আছে ৩৩ লাখ ৩২ হাজার ১৫০ টাকা, শেয়ার বাজারে সামির ইমপ্যাক্ট লিঃ প্রতিষ্ঠানে নিজের ৫০ লাখ, এফডিআর ২১ লাখ ৪৭ হাজার ৬৭৩ টাকা, সেভিংস সার্টিফিকিটে ৪০ লাখ টাকা, দুইটি গাড়ি ১ কোটি ৫৩ লাখ ৩৬ হাজার টাকা স্বর্ণালংকার ১ লাখ টাকা, ইলেকট্রনিক্স ২০ হাজার টাকা এবং আসবাবপত্র ১ লাখ টাকা।
২০১৩ সালে শিমুলের ৯ লাখ টাকার একটি গাড়ি ছিল তবে স্ত্রীর নামে কোনো গাড়ি ছিল না। এখন তার নিজের দুটি জীপ ১ কোটি ৫৩ লাখ ৩৬ হাজার টাকার এবং স্ত্রীর ৩৪ লাখ ৫০ হাজার টাকা মূল্যের একটি জিপ আছে।
Comments