নলডাঙ্গা পৌর মেয়রের ওপর হামলা: এমপি শিমুলের বিরুদ্ধে মামলা নেয়নি পুলিশ
নাটোরের নলডাঙ্গা উপজেলায় সংসদ সদস্য শফিকুল ইসলাম শিমুলের উপস্থিতিতে নলডাঙ্গা পৌরসভার মেয়র মনিরুজ্জামান মনিরের ওপর হামলার ঘটনায় থানায় লিখিত অভিযোগ দেওয়া হলেও সেটি মামলা হিসেবে নথিভুক্ত করেনি পুলিশ।
গতকাল সোমবার রাতে নলডাঙ্গা থানায় নাটোর-২ আসনের সংসদ সদস্য শিমুলকে প্রধান আসামি করে ১৮ জনের নাম উল্লেখ এবং অজ্ঞাত ১০-১২ জনের বিরুদ্ধে লিখিত অভিযোগ দেন মেয়র মনিরের বড় ভাই শরিফুল ইসলাম বকুল।
লিখিত অভিযোগ মামলা হিসেবে নথিভুক্ত না করার বিষয়ে নলডাঙ্গা থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মো. আবুল কালাম দ্য ডেইলি স্টারকে বলেন, 'এ বিষয়ে একটি অভিযোগ পেয়েছি। ঘটনা কী ঘটেছিল সেটি যাচাই-বাছাই চলছে। বিষয়টি ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষকে অবহিত করা হয়েছে। যাচাই-বাছাই করে ঊর্ধ্বতনদের সিদ্ধান্ত সাপেক্ষে ব্যবস্থা নেওয়া হবে।'
মামলা নিতে ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষের অনুমতি লাগে কি না? জানতে চাইলে ওসি বলেন, 'এ প্রশ্নের কোনো উত্তর আমার কাছে নেই।'
এ বিষয়ে নাটোরের পুলিশ সুপার মো. সাইফুর রহমান ডেইলি স্টারকে বলেন, 'অভিযোগ একটা দিয়েছে। ওসি তদন্ত করে দেখবে। ঘটনা ঘটলে মামলা নেবে।'
রোববার সন্ধ্যা ৭টার দিকে নলডাঙ্গা পৌরসভার সামনে সংসদ সদস্য শফিকুল ইসলাম শিমুলের উপস্থিতিতে নলডাঙ্গা পৌরসভার মেয়র মনিরুজ্জামান মনিরের ওপর হামলার ঘটনা ঘটে।
মনিরুজ্জামান মনির নলডাঙ্গা পৌর আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক এবং নাটোর জেলা আওয়ামী লীগের নির্বাহী সদস্য।
অভিযোগকারী শরিফুল ইসলাম বকুল ডেইলি স্টারকে বলেন, 'এমপি শিমুলের হুকুমে আমার ছেলে শিশির ও ভাই মনিরের ওপর হামলা হয়। এ ঘটনায় এমপি শিমুলসহ ১৮ জনের বিরুদ্ধে থানায় লিখিত অভিযোগ দিয়েছি। কিন্তু পুলিশ মামলা না নিয়ে শুধু সময় পার করছে।'
পৌরসভা মেয়র মনিরুজ্জামান মনির ডেইলি স্টারকে জানান, সন্ধ্যার পর অনুষ্ঠান থেকে ফেরার পথে উপজেলা আওয়ামী লীগের কার্যালয়ের সামনে সংসদ সদস্য শিমুলের সঙ্গে তিনি ও তার অনুসারীরা দেখা করার চেষ্টা করেন। এসময় তৌহিদুর রহমান লিটন, কোয়েল ও জনিসহ শিমুলের অনুসারীরা তার ও পুলিশের উপস্থিতিতেই লাঠিসোটা, হাসুয়া এবং অন্যান্য দেশীয় অস্ত্র নিয়ে তার ওপর হামলা করে।
পরে প্রাণ রক্ষায় পৌরসভা কার্যালয়ে আশ্রয় নেন বলেও জানান তিনি।
মেয়র মনির আরও জানান, তার ও ভাতিজার ওপর হামলা এবং থানায় মামলা না নেওয়ার প্রতিবাদে আজ নলডাঙ্গায় স্থানীয় আওয়ামী লীগের পক্ষ থেকে প্রতিবাদ সমাবেশ করা হয়েছে।
এরপরও থানায় মামলা না নিলে আদালতের শরণাপন্ন হবেন বলেও জানান তিনি।
এ বিষয়ে জানতে সংসদ সদস্য শফিকুল ইসলাম শিমুলের সঙ্গে একাধিকবার যোগাযোগের চেষ্টা করা হলেও তার ফোন বন্ধ পাওয়া যায়।
Comments