‘নভেম্বরের প্রথমার্ধে তফসিল, ব্যালট পেপার সকালে নাকি আগের রাতে পাঠানোর আলোচনা হয়নি’

‘নির্বাচন আয়োজনে এখন পর্যন্ত বড় ধরনের কোনো প্রতিবন্ধকতা নেই।’
দ্বাদশ জাতীয় নির্বাচনে ভোটার প্রায় ১২ কোটি

নভেম্বরের প্রথমার্ধে যেকোনো সময় দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনের তফসিল ঘোষণা করা হবে বলে জানিয়েছেন নির্বাচন কমিশন সচিবালয়ের সচিব মো. জাহাংগীর আলম।

আজ সোমবার আগারগাঁওয়ের নির্বাচন ভবনে আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর প্রধানদের সঙ্গে বৈঠক শেষে তিনি সাংবাদিকদের বলেন, 'বিএনপির অবরোধ কর্মসূচি নিয়ে আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনী সতর্ক অবস্থানে রয়েছে। এখন পর্যন্ত দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনের তফসিল ঘোষণার অনুকূল পরিবেশ রয়েছে। সামনে যে পরিস্থিতি থাকবে সেভাবেই প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেওয়া হবে।'

তিনি জানান, আসন্ন দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনে আইনশৃঙ্খলা রক্ষায় করণীয় ঠিক করতে বাহিনীগুলোর প্রধান, জননিরাপত্তা বিভাগের সিনিয়র সচিব, সশস্ত্র বাহিনীর প্রিন্সিপাল স্টাফ অফিসারের প্রতিনিধির সঙ্গে কমিশন সভা করেছেন।

নির্বাচন কমিশন সচিব মো. জাহাংগীর আলম | ছবি: ফাইল ফটো

নির্বাচনে কমিশন যেভাবে চিন্তা করে থাকে, নির্বাচন পূর্ব, নির্বাচনকালীন এবং নির্বাচন পরবর্তী শান্তিশৃঙ্খলা কীভাবে নিশ্চিত রাখা যাবে, কোন পদ্ধতিতে আইনশৃঙ্খলা বাহিনী দায়িত্ব পালন করবে, নির্বাচনের সঙ্গে সম্পৃক্ত দপ্তরগুলো কীভাবে নিরাপত্তা নিশ্চিত করবে—এই সার্বিক বিষয়গুলো আলোচনা হয়েছে আজকের সভায়।

সচিব বলেন, 'নির্বাচন আয়োজনে এখন পর্যন্ত বড় ধরনের কোনো প্রতিবন্ধকতা নেই। তবে বিএনপির ডাকা আগামী তিন দিনের অবরোধের বিষয়ে আইনশৃঙ্খলার কোনো অবনতি যেন না হয়, সে বিষয়ে তারা সতর্ক থাকবেন বলে আশ্বস্ত করেছেন। তফসিল ঘোষণার পর থেকে ভোট হওয়ার আগ পর্যন্ত আইনশৃঙ্খলা বাহিনী আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতি নিয়ে সময় সময় কমিশনকে জানাবে। তখন প্রয়োজন হলে কমিশন আবারও তাদের সঙ্গে বসে সিদ্ধান্ত নেবে।'

তিনি বলেন, 'নির্বাচনের আগে এই ধরনের আরও সভা করা হবে। যখন যে অবস্থা আসবে তখন সেভাবে করণীয় নির্ধারণ করা হবে। বিভিন্ন গোয়েন্দা সংস্থা তাদের তথ্য উপস্থাপন করেছে, বিভিন্ন বাহিনীর প্রধানরা তাদের সক্ষমতা কী আছে, অতীতের নির্বাচনের তাদের জনবলকে কীভাবে কেন্দ্রে এবং অন্যান্য কাজে নিয়োজিত করা হয়েছিল এবং দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনে দায়িত্বে নিয়োজিত করা হলে তারা কীভাবে দায়িত্ব পালন করবে—এই বিষয়গুলো কমিশনের কাছে তারা উপস্থাপন করেছে।'

তিনি আরও বলেন, 'কমিশন তাদের বক্তব্য শুনেছেন এবং কিছু নির্দেশনা দিয়েছেন। পরবর্তীতে বিভিন্ন পরিপত্র ঘোষণা করে বিভিন্ন বাহিনী কীভাবে নিয়োজিত করা হবে সেখানে সুস্পষ্ট উল্লেখ করা হবে। তারা সেভাবে যথাযথভাবে প্রতিপালন করবে বলে নির্বাচন কমিশনকে আশ্বস্ত করেছে।'

মো. জাহাংগীর আলম বলেন, 'ব্যালট পেপার ভোটকেন্দ্রে সকালে পাঠানো হবে, নাকি আগের দিন রাতে পাঠানো হবে তা নিয়ে কোনো আলোচনা হয়নি। এ কাজের জন্য অনেক সময় রয়েছে। আরও মিটিং হবে। ওই সময়ের পরিস্থিতির কেমন থাকবে তার ওপর নির্ভর করে সিদ্ধান্ত গ্রহণ করবে কমিশন।'

প্রধান নির্বাচন কমিশনার কাজী হাবিবুল আউয়ালের সভাপতিত্বে অনুষ্ঠিত বৈঠকে অন্য নির্বাচন কমিশনার, জননিরাপত্তা বিভাগের সিনিয়র সচিব মো. মোস্তাফিজুর রহমান, মহাপুলিশ পরিদর্শক চৌধুরী আবদুল্লাহ আল মামুন, জাতীয় নিরাপত্তা গোয়েন্দার (এনএসআই) মহাপরিচালক মেজর জেনারেল টিএম জোবায়ের, আনসার ও ভিডিপির মহাপরিচালক মেজর জেনারেল একেএম আমিনুল হক, বিজিবির মহাপরিচালক মেজর জেনারেল একেএম নাজমুল হাসান, পুলিশের স্পেশাল ব্রাঞ্চ (এসবি) প্রধান মো. মনিরুল ইসলাম, র‌্যাপিড অ্যাকশন ব্যাটেলিয়নের (র‌্যাব) মহাপরিচালক এম খুরশীদ হোসেন এবং সশস্ত্র বাহিনীর প্রিন্সিপাল স্টাফ অফিসার, ডাইরেক্টরেট জেনারেল অব ফোর্সেস ইন্টেলিজেন্স (ডিজিএফআই) ও বাংলাদেশ কোস্টগার্ডের মহাপরিচালকের প্রতিনিধিরা উপস্থিত ছিলেন।

Comments