সিলেট সিটি নির্বাচন

এবার পাল্টা মামলায় আসামি কাউন্সিলরপ্রার্থী সাঈদ

সাঈদ মো. আব্দুল্লাহ। ছবি: সংগৃহীত

সিলেট সিটি করপোরেশনের (সিসিক) বর্তমান কাউন্সিলর ও মহানগর স্বেচ্ছাসেবক লীগ সভাপতি আফতাব হোসেন খানের বিরুদ্ধে অস্ত্র প্রদর্শন ও ভয়ভীতি দেখানোর অভিযোগের মামলার দেওয়ার পর এবার মারধরের অভিযোগে করা মামলার অভিযুক্ত হলেন কাউন্সিলরপ্রার্থী সাঈদ মো. আব্দুল্লাহ।

সিসিক নির্বাচনে আওয়ামী লীগ প্রার্থীর পক্ষে প্রচারের সময় মহানগর স্বেচ্ছাসেবক লীগের অর্থ বিষয়ক সম্পাদক শাহানুর আলমকে বাধা ও মারধরের ঘটনায় সাঈদ মো. আব্দুল্লাহকে প্রধান আসামি করে ৯৭ জনের বিরুদ্ধে সিলেটের এয়ারপোর্ট থানায় একটি মামলা করা হয়েছে। এ ঘটনায় ২ জনকে গ্রেপ্তার করেছে পুলিশ।

বিষয়টি দ্য ডেইলি স্টারকে নিশ্চিত করে সিলেট মেট্রোপলিটন পুলিশের অতিরিক্ত উপ-কমিশনার (গণমাধ্যম) সুদীপ দাস বলেন, 'রোববার কাউন্সিলরপ্রার্থী সাঈদ আব্দুল্লাহ ও অন্যান্যদের বিরুদ্ধে রিটার্নিং কর্মকর্তার কাছে একটি অভিযোগ দায়ের করেন প্রতিদ্বন্দ্বী কাউন্সিলরপ্রার্থী আফতাব হোসেন খান। এ অভিযোগটি পুলিশের কাছে পাঠানো হয়েছে। এরই পরিপ্রেক্ষিতে আজ সোমবার এয়ারপোর্ট থানায় এই মামলাটি দায়ের করা হয়েছে।'

মামলার এজাহার থেকে জানা যায়, শাহানুর আলম গত ৬ জুন রাত সাড়ে ১০টায় আওয়ামী লীগ প্রার্থীর পোস্টার নিয়ে সিলেট নগরীর ৭ নম্বর ওয়ার্ডের জালালাবাদ আবাসিক এলাকায় গেলে সেখানে কাউন্সিলরপ্রার্থী সাঈদ আব্দুল্লাহ ও তার সঙ্গে থাকা অন্যান্যরা শাহানুরের ওপর হকিস্টিক-রডসহ দেশীয় অস্ত্র নিয়ে হামলা চালায়। এতে শাহানুরের হাতের হাড় ভাঙে এবং জখম হয়ে সিলেট এমএজি ওসমানী মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে ভর্তি হন।

সাঈদ মো. আব্দুল্লাহ জামায়াতে ইসলামীর রাজনীতির সঙ্গে যুক্ত এবং এজাহারেও তাকে জামায়াত নেতা হিসেবে উল্লেখ করা হয়েছে।

এদিকে কাউন্সিলরপ্রার্থী সাঈদ মো. আব্দুল্লাহ গত শুক্রবার নির্বাচন কমিশনে একটি অভিযোগ দায়ের করেন, যেখানে তিনি ‍উল্লেখ করেন, কাউন্সিলর ও স্বেচ্ছাসেবক লীগ নেতা আফতাব হোসেনের নেতৃত্বে একদল ব্যক্তি বুধবার সকাল ৬টা ১৬ মিনিটে তার বাসার সামনে অস্ত্রের মহড়া দিয়েছেন এবং তাকে ও তার পরিবারকে হত্যার হুমকি দিয়েছেন।

আফতাব হোসেন খান। ছবি: সংগৃহীত

অস্ত্রের মহড়ার একটি ভিডিও বৃহস্পতিবারই সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে ছড়িয়ে পড়ে, যাতে দেখা যায়, কাউন্সিলরপ্রার্থী সাঈদ আব্দুল্লাহর বাসার সামনে মোটরসাইকেল দাঁড় করিয়ে আগ্নেয়াস্ত্র প্রদর্শন করছেন ৭ নম্বর ওয়ার্ড ছাত্রলীগের সাবেক সভাপতি আবুল কালাম আজাদ তুহিন। এ সময় মোটরসাইকেল বহরে কাউন্সিলর আফতাব হোসেন খান উপস্থিত ছিলেন।

এ ঘটনায় শনিবার এয়ারপোর্ট থানায় আফতাব হোসেন খানসহ ২৫ জনকে অভিযুক্ত করে মামলা দায়ের করেন সাঈদ এবং পুলিশ এ ঘটনায় জড়িত ৩ জনকে গ্রেপ্তার করেছে।

তবে আজ সোমবার সকাল পর্যন্ত প্রদর্শিত অস্ত্রটি উদ্ধার হয়নি এবং অস্ত্র প্রদর্শন করা আবুল কালাম আজাদকেও গ্রেপ্তার করতে পারেনি পুলিশ।

শনিবার সিসিক নির্বাচনের প্রার্থীদের সঙ্গে প্রধান নির্বাচন কমিশনার কাজী হাবিবুল আউয়ালের মতবিনিময় সভায়ও অস্ত্রের মহড়ার বিষয়টি উত্থাপন করা হয়।

সে সময় প্রধান নির্বাচন কমিশনার ঢাকায় ফিরে নির্বাচন কমিশনে বৈঠক করে পরবর্তী ব্যবস্থা নেওয়ার কথা জানালেও এখন পর্যন্ত কাউন্সিলরপ্রার্থীর বিষয়ে কোনো সিদ্ধান্ত নেয়নি নির্বাচন কমিশন।

সিলেট আঞ্চলিক নির্বাচন কার্যালয়ের গণমাধ্যম বিষয়ক সেলের (সিটি নির্বাচন) কর্মকর্তা সৈয়দ কামাল হোসেন ডেইলি স্টারকে বলেন, 'কাউন্সিলরপ্রার্থী আফতাব হোসেন খানের অভিযোগটি যথাযথ ব্যবস্থা গ্রহণের জন্য পুলিশ কমিশনারের কাছে পাঠানো হয়েছে। আর সাঈদ আব্দুল্লাহর অভিযোগ বিষয়ে প্রধান নির্বাচন কমিশনার অবগত আছেন। তবে এখন পর্যন্ত আমরা কোনো নির্দেশনা পাইনি।'

এ বিষয়ে জানতে আফতাব হোসেন খান ও সাঈদ মো. আব্দুল্লাহর নম্বরে একাধিকবার ফোন করলেও তারা ধরেননি।

Comments

The Daily Star  | English
Income inequality in Bangladesh

Growth obsession deepened rich-poor divide

Income inequality in Bangladesh has seen a steep rise over the past 12 years till 2022, according to official data, as economists blame a singular focus on growth rather than sorting out income disparities.

15h ago