চট্টগ্রামে ৩ ব্যবসায়ীকে অপহরণের পর মুক্তিপণ দাবি, গ্রেপ্তার ৪
তিন ব্যবসায়ীকে অপহরণ করে ৯ লাখ টাকা মুক্তিপণ দাবি করার অভিযোগে চার জনকে দেশীয় অস্ত্রসহ গ্রেপ্তার করেছে চট্টগ্রাম মহানগরীর ডিবি (উত্তর-দক্ষিণ) বিভাগের সদস্যরা।
আজ রোববার পুলিশের সংবাদ সম্মেলনে এই চারজনকে গ্রেপ্তারের কথা জানানো হয়।
গত শনিবার রাতে পাঁচলাইশ থানার পূর্ব নাসিরাবাদ এলাকায় অভিযান চালিয়ে তিন অপহৃত ব্যবসায়ীকে উদ্ধার করা হয়েছে বলে জানিয়েছে পুলিশ।
গ্রেপ্তার ৪ জন হলেন বাছির আহম্মদ রানা (২৭), মো. জিহাদ (২৪), মো. আরিফ (২৪) ও মো. ইমন সাদ্দাম (২৩)। তাদের কাছ থেকে ১০টি ধারালো কিরিচ, একটি ড্যাগার, একটি চাকু এবং পাঁচটি মোটরসাইকেল জব্দ করা হয়েছে। অপহৃত ব্যবসায়ীরা হলেন সমীর দাশ (৪৫), কেশব মিত্র দাশ (৪৩) এবং রুবেল রুদ্র (৪২)।
পুলিশ জানায়, সমীর এবং রুবেলকে নিজ নিজ লন্ড্রির দোকান থেকে এবং কেশব মিত্র দাশকে শনিবার বিকেল সাড়ে ৪টার দিকে হিলভিউ ২ নম্বর রোডের মাথা থেকে অপহরণ করে প্রথমে হিলভিউ ১ নম্বর রোডের একটি নির্মাণাধীন বিল্ডিংয়ে এবং পরে পাঁচলাইশ থানাধীন পূর্ব নাসিরাবাদ পলিটেকনিক্যাল মোড়ের পেছনে বাগনে এনে মারধর করেন অভিযুক্ত চার জন। এ সময় ৯ লাখ টাকা মুক্তিপণ দাবি করেন তারা। খবর পেয়ে পাঁচলাইশ থানার একাধিক টিম মাঠে নামে এবং পরে ডিবি সদস্যরা টেকনিক্যাল মোড় এলাকা থেকে ব্যবসায়ীদের উদ্ধার করে।
আসামিসহ অপহৃতদের নিয়ে দেশীয় অস্ত্র উদ্ধার অভিযান শেষে আসার সময় পুলিশকে ঘিরে ধরে ২০০ থেকে ৩০০ জন লোক। তারা সেই সময় বিএনপির নামে বিভিন্ন স্লোগান দিচ্ছিল বলে জানিয়েছেন একাধিক প্রত্যক্ষদর্শী। পরে নগরীর পাঁচলাইশ এবং বায়েজিদ থানা থেকে অতিরিক্ত পুলিশ গিয়ে তাদের উদ্ধার করে।
সিএমপির ডিবির উত্তর বিভাগের উপ-পুলিশ কমিশনার মোস্তাফিজুর রহমান দ্য ডেইলি স্টারকে বলেন, 'অপহরণ এবং ছিনতাইয়ের অভিযোগে ডিবির একটি টিমে সেখানে গিয়েছিল। তিনজনকে উদ্ধার করে অস্ত্রসহ অভিযুক্তদের আটক করে নিয়ে আসার সময় তাদের সেখানে ঘেরাও করে স্থানীয় কয়েকজন। পরে অতিরিক্ত পুলিশ গিয়ে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনে।'
এই ঘটনায় পুলিশের দায়িত্বে বাধা দানের অভিযোগে থানায় মামলা দায়েরের প্রস্তুতি চলছে বলে জানান তিনি।
পুলিশ ও স্থানীয় সূত্রে জানা গেছে, গ্রেপ্তার বাছির নগর ছাত্রদলের নেতা সাইফুল ইসলাম ওরফে বার্মা সাইফুলের লোক। চট্টগ্রাম মহানগর ছাত্রদলের এক সময়ের সহ-সম্পাদক সাইফুল ইসলাম ওরফে বার্মা সাইফুল ২০২১ সালের ১৬ জুন পুলিশের সঙ্গে কথিত বন্দুক যুদ্ধে পা হারান। তিনি বায়েজিদ ও এর আশপাশের এলাকায় সন্ত্রাসী কর্মকাণ্ডে নেতৃত্ব দিয়ে আসছেন বলে পুলিশের ভাষ্য।
বাছিরসহ বাকিদের ছিনিয়ে নিতেই মানুষজন জড়ো হয়। তবে পুলিশ গিয়ে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে নেয়। তবে বার্মা সাইফুল তখন সেই এলাকায় ছিলেন না জানিয়েছে পুলিশ।
সিএমপির ডিসি (অপরাধ) রইছ উদ্দিন সংবাদ সম্মেলনে সাংবাদিকদের বলেন, 'গ্রেপ্তার চারজনই আমাদের তালিকাভুক্ত সন্ত্রাসী বার্মা সাইফুলের সহযোগী ছিলেন বলে জানা গেছে। বার্মা সাইফুলকেও অতি দ্রুত গ্রেপ্তারের চেষ্টা করব। তিনি আমাদের কাছে অপরাধী হিসেবে চিহ্নিত। তার রাজনৈতিক পরিচয় এখানে মুখ্য নয়। যাদের গ্রেপ্তার করা হয়েছে তাদের বিরুদ্ধে আইনানুগ ব্যবস্থা প্রক্রিয়াধীন।'
Comments