রাউজানে মুখোশধারীদের হামলায় গুলিবিদ্ধ ১৫, বাকলিয়ায় বিএনপির দুপক্ষের সংঘর্ষ
চট্টগ্রামের রাউজান উপজেলায় একদল মুখোশধারীর হামলায় ১৫ জন গুলিবিদ্ধ হয়েছেন। তাদের মধ্যে ১১ জন চট্টগ্রাম মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে চিকিৎসাধীন। বাকিরা বিভিন্ন বেসরকারি হাসপাতালে চিকিৎসা নিচ্ছেন।
শুক্রবার ভোররাতে রাউজান থানা পুলিশ দ্য ডেইলি স্টারকে এই তথ্য নিশ্চিত করেছে।
পুলিশ জানায়, বৃহস্পতিবার দিবাগত রাত সাড়ে ১০টার দিকে উপজেলার নোয়াপাড়া ইউনিয়নের নিরামিশপাড়া গ্রামের আসদ আলী মাতব্বরপাড়া মসজিদ এলাকায় এই হামলা ঘটনা ঘটে।
চট্টগ্রাম মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে চিকিৎসাধীন ব্যক্তিরা হলেন—মো. জসিম উদ্দিন (৫০), মো. মহিউদ্দিন (৩৮), জানে আলম (৪৪) ও তার ভাই মো. সাইফুদ্দিন (৩১), মো. লাভলু (২৮), নুরুদ্দিন (২৮) ও তার ভাই মো. মানিক (৩৬), মো. মাসুদ (৩৫), আলাউদ্দিন (৪০), মো. হুমায়ুন (৪৫) ও নুরুল আবসার (৫৫)। তারা ওই ইউনিয়নের নিরামিশপাড়া গ্রামের বাসিন্দা।
তবে বাকিদের পরিচয় এখনো জানা সম্ভব হয়নি।
ওই এলাকার বাসিন্দারা জানিয়েছেন, হামলার পর থেকে থেকে পুরো এলাকায় থমথমে অবস্থা বিরাজ করছে।
তারা আরও জানান, বৃহস্পতিবার দিবাগত রাত ৯টার দিকে আসদ আলী মাতব্বরপাড়া মসজিদ এলাকায় মুখোশ পরা ২০ থেকে ২৫ জন ব্যক্তি মো. মহিউদ্দিনকে প্রথমে মারধর করে। এরপর কুপিয়ে আহত করে। স্থানীয় লোকজন প্রতিবাদ করতে এগিয়ে গেলে মুখোশধারীরা তাদের লক্ষ্য করে এলোপাথাড়ি গুলি ছোড়ে।
ঘটনার প্রত্যক্ষদর্শী একাধিক ব্যক্তির মত, আধিপত্য বিস্তারকে কেন্দ্র করে এই ঘটনা ঘটেছে। তারা বলেন, রাউজানের নোয়াপাড়ায় বিএনপির দুই পক্ষের মধ্যে প্রায়ই হামলা-সংঘর্ষের ঘটনা ঘটছে। এই গুলির ঘটনাও তারই অংশ।
চট্টগ্রাম মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে চিকিৎসাধীন জসিম উদ্দিনের ভাই মুহাম্মদ ইলিয়াস গণমাধ্যমকে বলেন, আমার ভাই জসিম উদ্দিন সৌদিপ্রবাসী। কিছু দিন আগে তিনি দেশে এসেছেন। এলাকায় গুলির মধ্যে পড়ে তিনিও গুলিবিদ্ধ হয়েছেন।
এদিকে চট্টগ্রামের বাকলিয়ার এক্সেস রোড এলাকায় বিএনপির দুই পক্ষের দফায় দফায় সংঘর্ষের ঘটনা ঘটেছে।
প্রত্যক্ষদর্শীরা জানিয়েছেন, বৃহস্পতিবার দুপুরের পর থেকে কয়েক দফায় সংঘর্ষের ঘটনা ঘটে। উভয়পক্ষ একে অপরকে লক্ষ্য করে ইপাটকেল নিক্ষেপ করে, দেশীয় অস্ত্রশস্ত্র হাতে ধাওয়া দেয় এবং গুলিও চালায়। এর মধ্যে উভয়পক্ষ স্লোগান দেয় 'জিয়ার সৈনিক, এক হও লড়াই করো'। বৃহস্পতিবার দিবাগত রাত ১১টার দিকে পরে পুলিশ ও সেনাবাহিনীর সদস্যরা এসে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে নেয়।
পুলিশ জানিয়েছে, জমি নিয়ে বিরোধের জের ধরে স্থানীয় বিএনপির দুই পক্ষের মধ্যে সংঘর্ষের এই ঘটনা ঘটেছে।
নগর পুলিশের অতিরিক্ত উপকমিশনার (জনসংযোগ) কাজী মো. তারেক আজিজ বলেন, 'ওই এলাকায় স্থানীয় বিএনপির দুগ্রুপের মধ্যে জায়গা সংক্রান্ত বিরোধের জের ধরে কয়েক দফা সংঘর্ষের ঘটনা ঘটেছে। তবে সংঘর্ষের সময় গোলাগুলির কোনো ঘটনা ঘটেনি। তবে দুপক্ষ একে অপরকে ইট-পাটকেল নিক্ষেপ করেছে বলে জানতে পেরেছি।'
তিনি আরও বলেন, 'পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আইন-শৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর সদস্যরা সেখানে অবস্থান করছেন। এখন পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণ রয়েছে।'
Comments