আনসার আল ইসলামের রিক্রুটিং প্রধানসহ ৩ সদস্য গ্রেপ্তার
ঢাকার গুলিস্তান ও নারায়ণগঞ্জের সিদ্ধিরগঞ্জের সাইনবোর্ড এলাকা থেকে নিষিদ্ধ জঙ্গি সংগঠন আনসার আল ইসলামের রিক্রুটিং শাখার প্রধান ও দুই আঞ্চলিক প্রশিক্ষকসহ তিন জনকে গ্রেপ্তার করেছে র্যাপিড অ্যাকশন ব্যাটালিয়ন (র্যাব)।
আজ রাজধানীর কারওয়ান বাজারে র্যাব মিডিয়া সেন্টারে এক প্রেস ব্রিফিংয়ে এ তথ্য জানানো হয়।
র্যাবের লিগ্যাল অ্যান্ড মিডিয়া উইংয়ের পরিচালক কমান্ডার আরাফাত ইসলাম জানান, যৌথ অভিযানে র্যাব সদর দপ্তর ও র্যাব-৩-এর টিম গতকাল শুক্রবার আনসাল আল ইসলামের রিক্রুটিং শাখার প্রধান ইসমাইল হোসেন (২৫) এবং আঞ্চলিক প্রশিক্ষক জিহাদ হোসেন ওরফে হুজাইফা (২৪) ও আমিনুল ইসলামকে (২৫) গ্রেপ্তার করে।
তারা আনসার আল-ইসলাম মতাদর্শে 'শাহাদাত' নামে একটি নতুন জঙ্গি সংগঠন তৈরি করেছে এবং নতুন সদস্য নিয়োগ শুরু করেছে বলেও জানায় র্যাব।
র্যাব কর্মকর্তা আরাফাত ইসলাম জানান, নতুন এই সংগঠনের সদস্য সংখ্যা শতাধিক। ইসমাইল আনসার আল-ইসলামের রিক্রুটিং শাখার প্রধান এবং শাহাদাত গ্রুপের প্রধানও ছিলেন।
র্যাব জানায়, গ্রেপ্তারকৃত ইসমাইল জানিয়েছেন, গ্রুপটি সালাহউদ্দিন নামে একজন পরিচালনা করেন এবং বর্তমানে তিনি বিদেশে অবস্থান করছেন। এই গ্রুপের অন্য সদস্যরা ঢাকাসহ দেশের বিভিন্ন স্থানে অবস্থান করছে।
বিভিন্ন সময় অনলাইনে বিভিন্ন উগ্রবাদী নেতাদের বক্তব্য দেখে উগ্রবাদে উদ্বুদ্ধ হয়ে সংগঠনের সদস্যদের মাধ্যমে এই সংগঠনে যোগ দেয় তারা। পরবর্তীতে তারা আনসার আল ইসলামের নাম ব্যবহার না করে 'শাহাদাত' গ্রুপের নামে সদস্য সংগ্রহ ও দাওয়াতি কার্যক্রম পরিচালনা করছিল বলে জানায় র্যাব।
তারা বাংলাদেশের বিভিন্ন অঞ্চল বিশেষ করে চট্টগ্রাম, কক্সবাজার, যশোর, সাতক্ষীরা এবং ঢাকার আশেপাশের বিভিন্ন এলাকাকে প্রশিক্ষণ দেওয়ার জন্য নির্ধারণ করে।
র্যাবের এই কর্মকর্তা জানান, এ সংগঠনের অধিকাংশ সদস্যই মাদ্রাসার ছাত্র-শিক্ষক। তারা গোপনে সংগঠনের সদস্যদের শারীরিক প্রশিক্ষণ দিতেন। তারা বিভিন্ন দেশের সমমনা ব্যক্তিদের সঙ্গে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে নিয়মিত যোগাযোগ রাখত এবং উগ্রবাদী গ্রুপে তাদের বিচরণ ছিল বলে জানা গেছে।
আরাফাত জানান, ইসমাইল নারায়ণগঞ্জের একটি মাদ্রাসায় দাওরায়ে হাদিস পড়ছেন। এক বছর আগে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে বিদেশে অবস্থানরত জঙ্গি নেতা সালাহউদ্দিন নামের এক ব্যক্তির সঙ্গে তার পরিচয় হয়। তিনি চরমপন্থায় উদ্বুদ্ধ হন এবং আনসার আল-ইসলামে যোগদান করেন।
এক পর্যায়ে তাকে সংগঠনের রিক্রুটিং শাখার প্রধান হিসেবে দায়িত্ব দেওয়া হয়। গোপন অ্যাপের মাধ্যমে সংগঠনের সব বাংলাদেশি সদস্যের সঙ্গে যোগাযোগ রাখতেন এবং বিভিন্ন নির্দেশনা দিতেন। এছাড়া তিনি সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে বিভিন্ন দেশের সমমনা মানুষের সঙ্গে যোগাযোগ রাখতেন বলেও জানা গেছে। সংগঠনের নতুন সদস্যদের শারীরিক কসরতসহ বিভিন্ন বিষয়ে প্রশিক্ষণ দেওয়া হয়েছে বলেও জানা গেছে।
গ্রেপ্তারকৃত জিহাদ একজন মাদ্রাসা শিক্ষক এবং আমিনুল পেশায় একজন গার্মেন্টস শ্রমিক। সংগঠনে আঞ্চলিক প্রশিক্ষক হিসেবে তাদের দায়িত্ব দেওয়া হয়। তারা সংগঠনের সব সদস্য ও তাদের এলাকায় নতুন সদস্যদের শারীরিক প্রশিক্ষণসহ বিভিন্ন বিষয়ে প্রশিক্ষণ দিতেন।
Comments