অপহরণের পর হিমেলকে নেওয়া হয় মেঘালয়ে, ১ মাস পর উদ্ধার
প্রায় এক মাস আগে অপহরণ হওয়া বিশ্ববিদ্যালয় শিক্ষার্থী হাসিবুর রহমান হিমেলকে উদ্ধার করেছে র্যাব। অপহরণের পর তাকে নিয়ে ভারতের মেঘালয়ে নিয়ে যাওয়া হয়েছিল। আজ তাকে সুনামগঞ্জের তাহিরপুর থেকে উদ্ধার করা হয়েছে।
হিমেলকে অপহরণের ঘটনায় পাঁচ জনকে গ্রেপ্তার করেছে পুলিশ। নেত্রকোণা, সুনামগঞ্জের তাহিরপুর ও রাজধানীর উত্তরা থেকে অপহরণকারী চক্রের মূল হোতা মালেকসহ তাদেরকে গ্রেপ্তার করা হয়। তাদের কাছ থেকে আগ্নেয়াস্ত্র, গোলাবারুদ ও ওয়াকিটকি জব্দ করা হয়েছে।
ঢাকার উত্তরা থেকে শেরপুর যাওয়ার পথে ব্যবসায়ীর ছেলে হিমেলকে অপহরণ করা হয়েছিল। মুক্তিপণ আদায়ের জন্য তাকে মেঘালয় সীমান্ত এলাকায় নিয়ে গিয়ে নির্যাতন চালায় অপহরণকারীরা।
ডিবি, র্যাব, ও সুনামগঞ্জ পুলিশের একটি দল অবশেষে সুনামগঞ্জ ও ঢাকা থেকে পাঁচ অপহরণকারীকে শনাক্ত ও গ্রেপ্তার করতে সক্ষম হয়।
এক ভিডিও বার্তায় ডিএমপির গোয়েন্দা প্রধান হারুন অর রশীদ বলেন, বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থী হিমেল (২৮) ও তার গাড়ির চালক সামিদুল গত ২৬ ডিসেম্বর সকাল সাড়ে ৯টার দিকে পারিবারিক ব্যবসার প্রয়োজনে শেরপুরের উদ্দেশে রওনা হন।
তার মা তাহুরা হক সকাল সাড়ে ১১টার পর থেকে মোবাইল ফোনে তাদের সঙ্গে যোগাযোগ করতে না পারায় একই দিনে উত্তরা পশ্চিম থানায় সাধারণ ডায়েরি করেন।
ডিবি জানায়, এর মধ্যেই অপহরণকারীরা ভারতের একটি মোবাইল নম্বর থেকে ফোন করে হিমেলের মুক্তিপণ হিসেবে দুই কোটি টাকা দাবি করে। তারা হিমেলের ওপর অমানবিক নির্যাতন চালিয়ে মাকে এর ভিডিও পাঠায়। ৩০ লাখ টাকা না দিলে হিমেলকে হত্যার হুমকিও দেয় তারা।
অপহরণকারীদের ধরতে ছায়া তদন্ত শুরু করে ডিবির লালবাগ বিভাগ। তারা ময়মনসিংহের হালুয়াঘাট, ধোবাউড়া, নেত্রকোণার দুর্গাপুর, কলমাকান্দা এবং সুনামগঞ্জের তাহিরপুরে টাঙ্গুয়ার হাওর এলাকাতেও অভিযান চালায়।
মঙ্গলবার বিকেলে অপহরণকারী চক্রের সদস্য মাসুদকে শরীয়তপুরের গোসাইহাট থেকে তারা গ্রেপ্তার করতে সক্ষম হয়। পুলিশের নজরদারি এড়াতে হিমেলের গাড়িটি ময়মনসিংহ থেকে গাজীপুরের বাসনে এনেছিলেন মাসুদ।
ডিবি পরে মেঘালয়ের পুলিশের সঙ্গে যোগাযোগ করে সাউথ-ওয়েস্ট খাসি হিলস জেলার নাংলাম এলাকায় অভিযান চালানোর ব্যবস্থা করে। সেখানে হিমেলের জুতা, ব্যাগ, মোবাইল ফোন ও বেশ কিছু মোবাইল নম্বর খুঁজে পায় স্থানীয় পুলিশ।
ডিবির লালবাগ বিভাগের উপকমিশনার মশিউর রহমান বলেন, এর মধ্যেই পুলিশ তুরাগ এলাকা থেকে দুই নারীকে আটক করে পুলিশ। এই দুই নারী অপহরণকারী চক্রের দুই সদস্যের স্ত্রী। পরে তাহিরপুরে হাওর এলাকায় চার জন অপহরণকারীর অবস্থান শনাক্ত করতে সক্ষম হয় পুলিশ।
টাঙ্গুয়ার হাওরে অভিযান চালিয়ে সুনামগঞ্জ পুলিশ আব্দুল মালেক, চালক সামিদুল, মানিক মিয়া ও মোবারক হোসেনকে গ্রেপ্তার করে।
Comments