জয়পুরহাট আ. লীগের সংগঠনিক সম্পাদককে তুলে আনার অভিযোগ পিবিআইয়ের বিরুদ্ধে

আ ন ম শওকত হাবিব তালুকদার। ছবি: সংগৃহীত

জয়পুরহাট জেলা আওয়ামী লীগের সাংগঠনিক সম্পাদক এবং কালাই উপজেলার মাত্রাই ইউনিয়ন পরিষদের বর্তমান চেয়ারম্যান আ ন ম শওকত হাবিব তালুকদারকে (লজিক) গতকাল রোববার তার ইউনিয়ন পরিষদের সামনে থেকে তুলে  আনার অভিযোগ উঠেছে বগুড়া পুলিশ ব্যুরো অব ইনভেস্টিগেশন (পিবিআই)-এর বিরুদ্ধে।

কেন, কী কারণে, কোন মামলায় তাকে ধরে আনা হয়েছে এই বিষয়ে বগুড়া পিবিআইয়ের সঙ্গে যোগাযোগ করা হলে সাংবাদিকদের কোনো তথ্য দেওয়া হয়নি। 

এমনকি সাংবাদিকরা রোববার দিনগত রাত পৌনে ১০টার দিকে বগুড়া পিবিআই অফিসে গেলে তাদের ভেতরে ঢুকতে দেওয়া হয়নি। অফিসের গেটে সাংবাদিকদের আধা ঘণ্টা দাঁড় করিয়ে রাখার পর জানানো হয়, আজ কেউ কথা বলবে না। কাল দিনের বেলায় আসেন।

এর আগে এ বিষয়ে একাধিকবার মোবাইল ফোনে কল করা হলে রিসিভ করেননি বগুড়া পিবিআই এসপি কাজী এহসানুল কবির। পরে তাকে হোয়াটসঅ্যাপে মেসেজ পাঠানো হলে তিনি দেখেছেন। তবে কোনো সাড়া দেননি।

ফোনে সাড়া না পেয়ে সাংবাদিকরা বগুড়া পিবিআই কার্যালয়ে যান। ভেতরে ঢুকতে চাইলে সেখানে কর্তব্যরত সাব-ইনস্পেক্টর মো. মাইনুল ইসলাম সাংবাদিকদের কাছে জানতে চান, এত রাতে কেন এসেছেন। পরিচয় দিয়ে এসপির সঙ্গে কথা বলতে চাইলে ওই সাব-ইন্সপেক্টর সাংবাদিকদের ভিজিটিং কার্ড নিয়ে ওপরে গিয়ে আধা ঘণ্টা পরে এসে বলেন, 'এসপি স্যার চেয়ারম্যানেরকে জিজ্ঞাসাবাদ করছেন। এ বিষয়ে আজ স্যার (এসপি) আপনাদের সঙ্গে কোনো কথা বলবেন না। কাল দিনের বেলা আসেন।'

কার্যালয়ে কেন সাংবাদিকদের ঢুকতে দেওয়া হবে না, জানতে চাইলে এই এসআই মাইনুল বলেন ওপরের নির্দেশ আছে।

গেটে দাঁড়িয়ে থাকা বগুড়া জেলা প্রেসক্লাবের সাবেক সাধারণ সম্পাদক এবং দ্য বিজনেস স্ট্যান্ডার্ডের উত্তরাঞ্চলের প্রতিনিধি খোরশেদ আলম দ্য ডেইলি স্টারকে বলেন, 'পিবিআইয়ের অফিস একটি সরকারি অফিস। অথচ অফিসের ভেতরে ঢুকতে না দিয়ে গেটে দাঁড় করিয়ে রাখা হলো। সাংবাদিক কেন যেকোনা মানুষই তো বিপদে পড়লে তাদের শরনাপন্ন হতে পারেন। কিন্তু একটি সরকারি অফিসের কর্মরত কর্মকর্তা-কর্মচারীদের এমন আচরণ দুঃখজনক। সরকারি অফিসে এই ধরনের ঘটনা অপ্রত্যাশিত এবং নজিরবিহীন।'

চেয়ারম্যান আ ন ম শওকত হাবিব তালুকদার (লজিক)-এর স্ত্রী সাবিনা ইয়াসমিনের সঙ্গে যোগাযোগ করা হলে তিনি বলেন, 'রোববার (২২ অক্টোবর) রাত আনুমানিক ৮টার সময় আমার স্বামী নেতা-কর্মীদের নিয়ে পূজামণ্ডপ পরিদর্শনে যাচ্ছিলেন। ঠিক ওই সময় বগুড়া পিবিআইয়ের দুটি গাড়ি ইউনিয়ন পরিষদের সামনে উপস্থিত হয়। তাৎক্ষণিকভাবে তারা চেয়ারম্যানকে একটি কাগজ দেখিয়ে বলেন, 'আমাদের সঙ্গে আপনার যেতে হবে। এই বিষয় কাউকে কিছু না বলে তাকে গাড়িতে তুলে বগুড়া নিয়ে যাওয়া হয়।'

চেয়াম্যানের নামে কোনো মামলা আছে কি না জানতে চাইলে সাবিনা ইয়াসমিন বলেন, 'অনেক আগে তার নামে রাজনৈতিক প্রতিপক্ষরা ষড়যন্ত করে একটি হত্যা মামলা দিয়েছিল। ওই মামলায় তিনি জামিনে আছেন। দুই বছর আগে এলাকায় জমি-জমা নিয়ে বিরোধে একজনকে হত্যা করা হয়। সেই মামলায় তাকে যড়যন্ত্র করে ফাঁসানো হয়েছিল। পুলিশের তদন্তের পরে চার্জশিট থেকে তার নাম বাদ দেওয়া হয়। এখন কী কারণে তাকে পুলিশ ধরে নিয়ে গেল সেই বিষয়ে স্পষ্ট করে পুলিশ কিছু বলেনি।'

'তবে জয়পুরহাটে তার নিজের দলের মধ্যে একটি শক্ত প্রতিপক্ষ আছে। তারা বর্তমানে সামনের জাতীয় নির্বাচনকে ঘিরে আমার স্বামীর বিরুদ্ধে একটি ষড়যন্ত্র করছে', বলেন সাবিনা ইয়াসমিন।

Comments

The Daily Star  | English
US attack on Iran nuclear sites

Iran denounces US attack as ‘outrageous’

Iran says 'no signs of contamination' after US attacks on key nuclear sites

8h ago