বগুড়া আইএইচটি

অবশেষে ‘অত্যাচারী’ সাবেক ছাত্রলীগ নেতা গ্রেপ্তার

মামলা দায়েরের ১০ দিন পর আজ মঙ্গলবার সকালে শেরপুর উপজেলার ছনকা বাজার এলাকা থেকে সজলকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে।
গ্রেপ্তার সজল ঘোষ। ছবি: সংগৃহীত

বগুড়ার সরকারি ইনস্টিটিউট অব হেলথ টেকনোলজিতে (আইএইচটি) শিক্ষার্থীদের করা নির্যাতন ও চাঁদাবাজি মামলায় সেই 'অত্যাচারী' সাবেক ছাত্রলীগ নেতা সজল ঘোষকে অবশেষে (৩৩) গ্রেপ্তার করেছে পুলিশ।

মামলা দায়েরের ১০ দিন পর আজ মঙ্গলবার সকালে শেরপুর উপজেলার ছনকা বাজার এলাকা থেকে সজলকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে বলে জানিয়েছে পুলিশ।

বগুড়া সদর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) সাইহান ওলিউল্লাহ দ্য ডেইলি স্টারকে বলেন, 'সজলকে গ্রেপ্তার করে প্রাথমিক জিজ্ঞাসাবাদ করা হয়েছে এবং আদালতে পাঠানো হয়েছে। তিনি আমাদেরকে কিছু তথ্য দিয়েছেন, সেগুলো যাচাই-বাছাই করছি।'

সজলকে রিমান্ডে নেওয়ার আবেদন করা হবে কি না, জানতে চাইলে ওসি বলেন, 'প্রয়োজন হলে রিমান্ডের আবেদন করব।'

সজলের গ্রেপ্তার দাবিতে আইএইচটির শিক্ষার্থীরা গত ২৯ আগস্ট থেকে আন্দোলন করছিলেন এবং গত রোববার পুলিশকে ২৪ ঘণ্টার আল্টিমেটাম দেওয়া হয়। পুলিশও আশ্বাস দিয়েছিল, এই সময়ের মধ্যেই গ্রেপ্তার করা হবে সজলকে।

গত ২ সেপ্টেম্বর এই প্রতিষ্ঠানের শিক্ষার্থী শাহরিয়ার হাসান বাদী হয়ে সজলের বিরুদ্ধে চাঁদাবাজি, হোস্টেলের মিলের অর্থ আত্মসাৎ, শিক্ষার্থীদের ওপর অত্যাচার করার অভিযোগে মামলা করেন।

সজল বগুড়া জেলা ছাত্রলীগের সাবেক সাংগঠনিক সম্পাদক। তিনি বগুড়ার রহমান নগরের বাসিন্দা এবং মৃত সুমেন কুমার ঘোষের ছেলে।

শিক্ষার্থীদের অভিযোগ, রাজনৈতিক ক্ষমতা ব্যবহার করে ১২ বছর আগে সজল আইএইচটি হোস্টেলের ২১৮ নম্বর কক্ষ দখল করে সেখানে বহিরাগতদের নিয়ে মাদক সেবন করতেন। তিনি শিক্ষার্থীদের দিয়ে তার পা টিপতে বাধ্য করতেন, সিগারেট কেনার জন্য মধ্যরাতে শহরের সাত মাথায় পাঠাতেন, নানা অজুহাতে শিক্ষার্থীদের মারধর করতেন এবং চাঁদা আদায় করতেন।

তাদের আরও অভিযোগ, কেউ তার এসব কাজের প্রতিবাদ করলে ধারালো অস্ত্র দিয়ে হত্যার হুমকি দিতেন। কলেজের অধ্যক্ষ (সদ্য বদলিকৃত) ডা. আমায়াত-উল-হাসিন তাকে প্রশ্রয় দিতেন বলেও অভিযোগ আছে। সজলের কোথায় তিনি শিক্ষার্থীদের পাশ বা ফেল করিয়ে দিতেন। হোস্টেলের মিল থেকে প্রতি মাসে অন্তত ২ লাখ টাকা আত্মসাৎ করতেন সজল। এমনকি নারী শিক্ষার্থীদের টিজ করলেও ভয়ে কেউ প্রতিবাদ করতে পারতেন না।

গত ২৯ আগস্ট আইএইচটির শিক্ষার্থী ও হোস্টেলের মিল ম্যানেজার আলামিনকে মারধর করলে শিক্ষার্থীরা আন্দোলন শুরু করেন। সজলকে গ্রেপ্তার, শিক্ষার্থীদের নিরাপত্তা এবং অধ্যক্ষ ডা. আমায়াত-উল-হাসিনের বদলির দাবিতে তারা এতদিন ক্লাস বর্জন করে বিক্ষোভ করে আসছিলেন।

শিক্ষার্থীদের দাবির পরিপ্রেক্ষিতে গতকাল অধ্যক্ষ ডা. আমায়াত-উল-হাসিনকে বাগেরহাট ম্যাটসে সিনিয়র লেকচারার হিসেবে বদলি করা হয়।

 

Comments