জমি নিয়ে বিরোধে সৎভাইকে মাটিচাপা দিয়ে হত্যা, ১ বছর পর হাড়গোড় উদ্ধার

লালমনিরহাটের আদিতমারী উপজেলার পলাশী ইউনিয়নের পশ্চিম রামদেব গ্রামে গর্ত থেকে হত্যাকাণ্ডের শিকার একজনের দেহাবশেষ উদ্ধার করা হয়। ছবি: সংগৃহীত

একবছর ধরে নিখোঁজ থাকার পর লালমনিরহাটের আদিতমারী উপজেলায় আলমগীর হোসেন (৪৫) নামে এক ব্যক্তির হাড় উদ্ধার করেছে পুলিশ। বৃহস্পতিবার বিকেলে আদিতমারীর পলাশী ইউনিয়নের পশ্চিম রামদেব গ্রামে একটি গর্ত থেকে তার দেহাবশেষ উদ্ধার করা হয়।

নিহত আলমগীর হোসেন লালমনিরহাটের কালীগঞ্জ উপজেলার কাকিনা ইউনিয়নের সিরাজুল মার্কেট এলাকার মৃত জহর উদ্দিনের ছেলে।

এই ঘটনায় ৩ জনকে গ্রেপ্তার করেছে পুলিশ। তারা হলেন গাজীপুরের মাধবপুর গ্রামের রাশেদুল ইসলাম (৩০) ওরফে আজিজ ড্রাইভার, রংপুরের গঙ্গাচড়ার জয়রাম ওঝা গ্রামের মনারুল ইসলাম (৩৫) ও আদিতমারীর রামদেব হাজীপাড়া গ্রামের সেকেন্দার আলী (৫৫)।

আদিতমারী থানার ওসি মোজাম্মেল হক ও কালীগঞ্জ থানার ওসি ইমতিয়াজ কবীর জানান, জমি ভোগদখল নিয়ে আলমগীরের সঙ্গে তার বৈমাত্রেয় ভাই খেলান উদ্দিন ও আব্দুস সাত্তারে মনোমালিন্য চলছিল। এ কারণে তারা আলমগীরকে হত্যার পরিকল্পনা করেন। পরিকল্পনা অনুযায়ী ২০২২ সালের ১৩ আগস্ট সন্ধ্যায় আলমগীরকে কৌশলে আদিতমারীর পশ্চিম রামদেব গ্রামে ডেকে নিয়ে যাওয়া হয়। সেখানে ভাড়াটে খুনিদের দিয়ে আলমগীরকে কোমল পানীয়ের সঙ্গে চেতনানাশক খাওয়ানো হয়। পরে রাতে ওই গ্রামে একটি বাঁশ ঝাড়ের পাশে গর্তে আলমগীরকে জীবন্ত পুঁতে ফেলা হয়। এর পর থেকেই আলমগীরের কোনো হদিস পায়নি তার পরিবারের সদস্যরা।

এর পর গত ২৬ জুন আলমগীরের ছোট ভাই সাদ্দাম হোসেন ৭ জনের বিরুদ্ধে কালীগঞ্জ থানায় মামলা করেন। পুলিশ ৩ আসামিকে গ্রেপ্তার করে স্বীকারোক্তি আদায় করে। তাদের দেওয়া তথ্য অনুযায়ী আজ আলমগীরের গলিত মরদেহ উদ্ধার করা হয়।

সাদ্দাম হোসেন দ্য ডেইলি স্টারকে বলেন, 'আমরা জেনেছিলাম ভাই নিখোঁজ হয়েছেন। দীর্ঘদিন তার খোঁজ পাওয়া যায়নি। পরে জানতে পারি তাকে অপহরণ করা হয়েছে। তাই দীর্ঘদিন পর মামলা করেছি।'

তিনি বলেন, 'আমার ভাইকে জীবন্ত মাটিচাপা দিয়ে হত্যা করা হয়েছে। শুধু জমি পাওয়ার লোভে আমাদের সৎভাইয়েরা ভাড়াটে খুনি এই নির্মম হত্যাকাণ্ড ঘটিয়েছেন।'

লালমনিরহাট পুলিশ সুপার সাইফুল ইসলাম দ্য ডেইলি স্টারকে বলেন, 'মামলাটি রেকর্ড হওয়ার পর পুলিশ প্রযুক্তি ব্যবহার করে আসামিদের অবস্থান নিশ্চিত করেন। গ্রেপ্তার ৩ জন পুলিশের কাছে স্বীকারোক্তি দেন। স্বীকারোক্তি অনুযায়ী গলিত দেহের হাড় উদ্ধার করা হয়। আলমগীরকে জীবন্ত মাটিচাপা দেওয়া হয়েছিল।'

Comments

The Daily Star  | English
rise of foreign investment in Bangladesh

Bangladesh draws growing attention of foreign investors

Says Uber official in an interview with The Daily Star

12h ago