চনপাড়ায় আবারও গোলাগুলি, আহত ২
নারায়ণগঞ্জের রূপগঞ্জে চনপাড়া পুনর্বাসন কেন্দ্রে গোলাগুলির ঘটনা ঘটেছে। আজ শুক্রবার দুপুরে অফিস ঘাট এলাকায় স্থানীয় দুই পক্ষের মধ্যে পুরোনো দ্বন্দ্বের জেরে সংঘর্ষের সময় দুজন গুলিবিদ্ধ হন।
তারা হলেন-পুনর্বাসন কেন্দ্রের ৪ নম্বর ওয়ার্ডের বাবলু মিয়া (২০) ও ৬ নম্বর ওয়ার্ডের মো. মাসুম (২২) গুলিবিদ্ধ হন। তাদের ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছে।
কায়েতপাড়া ইউনিয়নের ৯ নম্বর ওয়ার্ডে সদস্য পদে সম্প্রতি অনুষ্ঠিত উপনির্বাচনে দুই প্রতিদ্বন্দ্বী সমসের আলী ও জয়নাল আবেদীনের সমর্থকদের মধ্যে এ সংঘর্ষ হয়।
সংঘর্ষে বাবলু মিয়ার পায়ে ও মাসুমের কোমরে গুলি লেগেছে বলে ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের পুলিশ ফাঁড়ির ইনচার্জ পরিদর্শক বাচ্চু মিয়া দ্য ডেইলি স্টারকে জানিয়েছেন।
গুলিবিদ্ধ বাবলু মিয়া ডেইলি স্টারকে বলেন, 'দুপুরে জুমার নামাজ শেষে ৬ নম্বর ওয়ার্ডের অফিস ঘাট এলাকায় বন্ধুদের সঙ্গে আড্ডা দিচ্ছিলাম। এ সময় মাদক ব্যবসায়ী মো. রায়হান ও তার সহযোগীরা আমাদের ওপর হামলা চালায়।'
'উপনির্বাচনে জয়নাল ভাইয়ের পক্ষে কাজ করছি বলে আমাদের ওপর হামলা করেছে। রায়হান নির্বাচনে বিজয়ী সমসের আলীর ঘনিষ্ঠজন,' বলেন তিনি।
প্রত্যক্ষদর্শীরা জানায়, রায়হান ও তার লোকজন নামাজের পরপরই এ হামলা চালায়। দৌড়ে পালানোর সময় হামলাকারীদের গুলিতে দুজন গুলিবিদ্ধ হয়।
গুলিবিদ্ধ দুজনকে নিজের অনুসারী বলে দাবি করেছেন উপনির্বাচনে পরাজিত জয়নাল আবেদীন।
মাদক ব্যবসা নিয়ে সমসের আলীর সঙ্গে তার দীর্ঘদিনের বিরোধ আছে বলে জানা গেছে। তার বিরুদ্ধে মাদকসহ বিভিন্ন অভিযোগে থানায় একাধিক মামলাও আছে।
জয়নাল ডেইলি স্টারকে বলেন, ;আমার সঙ্গে বিরোধের জেরেই আমার অনুসারীদের ওপর হামলা করা হয়েছে।'
রূপগঞ্জ থানা সূত্র জানায়, সদ্য নির্বাচিত ইউপি সদস্য সমসের আলীর বিরুদ্ধেও মাদক সংশ্লিষ্টতার অভিযোগ আছে। তার বিরুদ্ধেও থানায় মাদক, ডাকাতি, মারামারির অভিযোগে একাধিক মামলা আছে।
জয়নালের অনুসারী চিহ্নিত মাদক ব্যবসায়ী রায়হানকে বুয়েটশিক্ষার্থী ফারদিন নূর পরশ হত্যাকাণ্ডের ঘটনায় আটক করেছিল আইনশৃঙ্খলা বাহিনী।
পরে জামিনে বেরিয়ে আসার পর রায়হান এখন ইউপি সদস্য সমসের আলীর প্রভাব ব্যবহার করে এলাকায় পুরোনো আধিপত্য বিস্তার ও মাদক ব্যবসা নিয়ন্ত্রণের চেষ্টা করছে।
এর আগেও কয়েকবার সমসের আলী ও জয়নাল আবেদীন সমর্থকদের মধ্যে আধিপত্য বিস্তার ও মাদক ব্যবসা নিয়ন্ত্রণকে কেন্দ্র করে সংঘর্ষের ঘটনা ঘটেছে বলে জানা গেছে।
হামলার অভিযোগের বিষয়ে মন্তব্য জানতে অভিযুক্ত মো. রায়হানকে মোবাইল ফোনে একাধিকবার কল করার চেষ্টা করা হলেও তা বন্ধ পাওয়া যায়।
জানতে চাইলে সদ্য নির্বাচিত ইউপি সদস্য সমসের আলী ডেইলি স্টারকে বলেন, 'গোলাগুলির খবর শুনেছি। তবে এ ঘটনার সঙ্গে নির্বাচন বা আমার কোনো সম্পৃক্ততা নেই। রায়হানের বিষয়টিও আমি জানি না।'
এ ঘটনায় সন্ধ্যা সাড়ে ৭টা পর্যন্ত থানায় কেউ কোনো অভিযোগ করেনি।
নারায়ণগঞ্জ জেলা পুলিশের জ্যেষ্ঠ সহকারী পুলিশ সুপার (গ সার্কেল) আবির হোসেন ডেইলি স্টারকে বলেন, 'গুলিতে দু'জন আহত হয়ে হাসপাতালে ভর্তি আছেন। এ ঘটনায় অভিযুক্ত রায়হান একজন চিহ্নিত মাদক ব্যবসায়ী ও বিভিন্ন অপরাধমূলক কর্মকাণ্ডের সঙ্গে জড়িত। হামলার ঘটনার তদন্ত চলছে। জড়িতদের বিরুদ্ধে আইনি ব্যবস্থা নেওয়া হবে।'
এর আগে গত ১০ মে চনপাড়ায় দুই পক্ষের মধ্যে সংঘর্ষের সময় গোলাগুলিতে এক দিনমজুর গুলিবিদ্ধ হন। আহত হন উভয়পক্ষের আরও অন্তত ১০ জন।
Comments