সরকারি জমি বরাদ্দে দুর্নীতি

রাজউকের সাবেক চেয়ারম্যান হুমায়ুন খাদেমের জামিন

ব্রিটেনের আদালত

রাজধানীর গুলশানে সরকারি জমি বরাদ্দের মামলায় রাজধানী উন্নয়ন কর্তৃপক্ষের (রাজউক) সাবেক চেয়ারম্যান হুমায়ুন খাদেম আগামী ৪ জুন পর্যন্ত জামিন পেয়েছেন। শারীরিক অসুস্থতার কারণে স্ট্রেচারে শুয়ে তিনি আদালতে উপস্থিত হন। 

আদালতের বেঞ্চ সহকারী এ বিষয়ে দ্য ডেইলি স্টারকে জানান, রাজউকের সাবেক চেয়ারম্যান একটি স্ট্রেচারে করে আদালতে এসে আত্মসমর্পণ করেন এবং জামিনের আবেদন করেন।

এরপর ঢাকার বিশেষ জজ আদালত-৫-এর বিচারক ইকবাল হোসেন জামিন মঞ্জুর করেন।

গতকাল মঙ্গলবার অনুষ্ঠিত শুনানিতে হুমায়ুন খাদেমের আইনজীবী আদালতকে বলেন, তার মক্কেল এর আগে আদালতে হাজির হয়ে জামিন চাইতে পারেননি। অন্যের সাহায্য ছাড়া তিনি চলাফেরা করতে পারতেন না।

তিনি আরও যুক্তি দেন, আদালতের আদেশের প্রতি সম্মান দেখিয়ে তার মক্কেল আদালতে আত্মসমর্পণ করে জামিনের আবেদন করেছেন। তার শারীরিক অবস্থা বিবেচনা করে জামিন আবেদন মঞ্জুর করা উচিত।

বাদীপক্ষ এর বিরোধিতা করে জানায়, অভিযুক্ত ব্যক্তির বিরুদ্ধে আনা অভিযোগ প্রাথমিকভাবে প্রমাণিত হয়েছে।

উভয় পক্ষের শুনানি শেষে বিচারক পরবর্তী শুনানির দিন ৪ জুন পর্যন্ত আসামির জামিন মঞ্জুর করেন।

এর আগে গত বছরের ১০ মে ঢাকা মহানগর জ্যেষ্ঠ বিশেষ জজ আদালত হুমায়ুন খাদেমসহ অন্যান্য অভিযুক্ত ব্যক্তিদের বিরুদ্ধে আনা অভিযোগপত্র গ্রহণ করেন। 

অভিযোগপত্রে হুমায়ুন খাদেম ও আমির হোসেন দেওয়ানকে 'পলাতক' উল্লেখ করায় তাদের বিরুদ্ধে গ্রেপ্তারি পরোয়ানা দেন আদালত।

তদন্ত শেষে দুর্নীতি দমন কমিশনের (দুদক) উপপরিচালক সেলিনা আক্তার ২০২২ সালের ২৪ জানুয়ারি হুমায়ুন খাদেমসহ ৭ জনের বিরুদ্ধে অভিযোগপত্র জমা দেন।

২০১৮ সালের ২৯ জানুয়ারি রাজধানীর গুলশান এলাকায় কয়েকজন ব্যক্তির নামে ৪৮ দশমিক ৬০ শতাংশ সরকারি জমি বরাদ্দের অভিযোগে হুমায়ুন খাদেমসহ ৮ জনের বিরুদ্ধে মতিঝিল থানায় মামলা দায়ের করে দুদক।

মামলার অন্য অভিযুক্তরা হলেন, রাজউকের সাবেক পরিচালক আবদুর রহমান ভূঁইয়া (এ আর ভূঁইয়া), আমির হোসেন দেওয়ান, এ কে এম সহিউজ্জামান, তার স্ত্রী কামরুন নেসা, মোশাররফ হোসেন, জাকারিয়া চৌধুরী ও মশিউর রহমান। তারা সবাই উল্লেখিত জমির বরাদ্দ পেয়েছিলেন।

মামলার নথিতে বলা হয়, গুলশান মডেল টাউনের ৮৩ নম্বর রোডের ৪৮ দশমিক ৬০ শতাংশ প্লট (এনইজি প্লট নং-৬) প্রিন্স করিম আগা খানের পিপলস জুট মিলসের মালিকানাধীন ছিল।

১৯৭২ সালে রাষ্ট্রপতির আদেশে এই সম্পত্তিকে পরিত্যক্ত ঘোষণা করা হলে এটি সরকারের মালিকানায় চলে যায়।

এরপর ১৯৯২ সালে এখানে ২৮, ২৮ (এ), ২৮ (বি) এবং ২৮ (সি) নম্বরসহ ৪টি নতুন প্লট তৈরি করা হয়। অবৈধভাবে আমির হোসেন দেওয়ান, মোশাররফ হোসেন, জাকারিয়া চৌধুরী ও মশিউর রহমান, সাহিউজ্জামান ও তার স্ত্রী কানরুন্নেসাকে প্লট বরাদ্দ দেওয়া হয়। এদের মধ্যে জাকারিয়া চৌধুরী ও মশিউর রহমান প্লটের দখলে রয়েছেন। বাকি দুটি প্লট পরিবর্তন করা হয়েছে।

রাজউকের ২ কর্মকর্তা ক্ষমতার অপব্যবহার করে পরিত্যক্ত সরকারি সম্পত্তি ব্যক্তির নামে বরাদ্দ দেওয়ার প্রমাণ পাওয়া যায় দুদকের অনুসন্ধানে। রাজউকের এই জমি বরাদ্দের এখতিয়ার ছিল না, তাই তারা গোপনীয়তার সঙ্গে জমিটি বরাদ্দ দেয়। পরে গুলশান মডেল টাউনের অধীনে ভবনটি নির্মাণ করা হয়।

Comments

The Daily Star  | English
Nat’l election likely between January 6, 9

EC suspends registration of AL

The decision was taken at a meeting held at the EC secretariat

8h ago