হেফাজতে নির্যাতনের অভিযোগে ওসিসহ ৫ পুলিশের বিরুদ্ধে মামলার নির্দেশ
হেফাজতে নির্যাতনের অভিযোগে ঠাকুরগাঁও থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তাসহ (ওসি) ৫ পুলিশ কর্মকর্তার বিরুদ্ধে ২৪ ঘণ্টার মধ্যে মামলা নিতে পুলিশ সুপারকে নির্দেশ দিয়েছেন জেলার এক আদালত।
জেলা যুবলীগের সাংগঠনিক সম্পাদক আসাদুজ্জামান পুলকের আবেদনের পরিপ্রেক্ষিতে আজ বুধবার দুপুরে এ আদেশ দেন ঠাকুরগাঁও জেলা ও দায়রা জজ আদালতের বিচারক মো. মামুনুর রশিদ।
একইসঙ্গে আদেশ প্রদানের সময় থেকে পরবর্তী ২৪ ঘণ্টার মধ্যে আসাদুজ্জামান পুলকের চিকিৎসা প্রতিবেদন আদালতে দাখিল ও ভুক্তভোগীকে হস্তান্তরের জন্য সিভিল সার্জনকে নির্দেশ দেওয়া হয়েছে।
এ ছাড়া, এ ঘটনার বিচার বিভাগীয় তদন্তের জন্য জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট মো. আলাউদ্দীনকে দায়িত্ব দিয়েছেন আদালত।
আদালতে দাখিলকৃত আবেদনে জানা যায়, গত ২৯ এপ্রিল ঠাকুরগাঁও শহরের সাধারণ পাঠাগার চত্বরে আয়োজিত বৈশাখী মেলা থেকে জেলা যুবলীগের ক্রীড়া সম্পাদক খালিদ সিরাজ রকিকে আটক করে পুলিশ। এই খবর পেয়ে তাৎক্ষণিক জেলা যুবলীগের সাংগঠনিক সম্পাদক আসাদুজ্জামান পুলক ঘটনাস্থলে গিয়ে ঠাকুরগাঁও থানার ওসি কামাল হোসেনের কাছে জানতে চান, কী কারণে রকিকে আটক ও মারধর করা হয়েছে। এতে ওসি ক্ষিপ্ত হয়ে পুলককেও আটক করে থানায় নিয়ে আসেন।
এর কিছুক্ষণ পর ওসির কার্যালয়ের ভেতর পুলককে হাতকড়া পড়ানো হয় এবং তার চোখে গামছা বেঁধে লাঠি দিয়ে বেধড়ক পেটান ওসি কামাল হোসেন, ওসি (অপারেশন) মো. লতিফ, এসআই খোকা চন্দ্র রায় ও মোহাম্মদ হাফিজ এবং এএসআই মো. মোতালেব। মারধরের একপর্যায়ে পুলক নিস্তেজ হয়ে মাটিতে লুটিয়ে পড়লে তাকে হাজতখানায় রাখা হয়। পরদিন সকালে পুলিশ ১৫১ ধারায় একটি মামলা দিয়ে পুলক ও রকিকে আদালতের মাধ্যমে জেলা কারাগারে পাঠান।
২ মে যুবলীগের এই ২ নেতা জামিনে মুক্ত হন। সেদিনই অসুস্থ অবস্থায় পুলককে ঠাকুরগাঁও আধুনিক সদর হাসপাতালে ভর্তি করা হয়। সেখানে আজ সকাল পর্যন্ত পুলক চিকিৎসাধীন ছিলেন। মারধরের কারণে তার বাম হাত ভেঙে গেছে এবং শরীরের বিভিন্ন অংশে জখম হয়েছে।
আসামি পক্ষের আইনজীবী আব্দুর রহিম দ্য ডেইলি স্টারকে বলেন, 'ভুক্তভোগী পুলক ঠাকুরগাঁও জেলা ও দায়রা জজ আদালতে এই নির্মম নির্যাতনের বিচার চেয়ে আজ একটি আবেদন করেন। এরই পরিপ্রেক্ষিতে এ আদেশ দিয়েছেন আদালতের বিচারক।'
অভিযুক্ত ওসি কামাল হোসেন ডেইলি স্টারকে বলেন, '২৯ এপ্রিল রাত সোয়া ১০টার দিয়ে বৈশাখী মেলায় বিশৃঙ্খলার অভিযোগে পুলক ও রকিকে স্থানীয়রা আটক করে মারধর করেন। খবর পেয়ে তাদের উদ্ধার করে হাসপাতালে প্রাথমিক চিকিৎসা দেওয়ার পর পুলিশ হেফাজতে নেওয়া হয়।'
তিনি আরও বলেন, 'ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষের সঙ্গে কথা বলে ১৫১ ধারায় গ্রেপ্তার দেখিয়ে ৩০ এপ্রিল সকালে পুলক ও রকিকে আদালতে পাঠিয়ে দেওয়া হয়। যেহেতু রাতেই তাদের ছেড়ে দেওয়া হয়নি, তাই তারা এখন মারধরের অভিযোগ করছেন। তাদের এই অভিযোগ সত্য নয়।'
Comments