গ্যাস সংযোগের নামে ৫০ লাখ টাকা আত্মসাৎ, কারাগারে ২
বাসাবাড়িতে গ্যাস সংযোগের প্রতিশ্রুতি দিয়ে ব্রাহ্মণবাড়িয়া সদর উপজেলার একটি গ্রাম থেকেই অন্তত ৫০ লাখ টাকা হাতিয়ে নিয়েছে একটি প্রতারক চক্র।
আজ বৃহস্পতিবার এ ঘটনায় দায়ের করা পৃথক চারটি মামলায় হাজিরা দিতে গেলে ২ জনকে কারাগারে পাঠিয়েছেন আদালত।
আসামিরা হলেন ব্রাহ্মণবাড়িয়া সদর উপজেলার কালিসীমা গ্রামের এলাই মিয়া (৬০) ও একই গ্রামের সাবেক ইউপি চেয়ারম্যান কাইয়ূম মিয়া।
ব্রাহ্মণবাাড়িয়া জেলা জজ আদালতের পুলিশ পরিদর্শক কাজী দিদারুল আলম ওই ২ জনকে কারাগারে পাঠানোর বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন।
তিনি জানান, আদালতে হাজিরা দিতে গেলে জ্যেষ্ঠ বিচারিক হাকিম আফরিন আহমেদ হ্যাপী তাদেরকে আটক করে কারাগারে পাঠানোর নির্দেশ দেন।
মামলার অভিযোগে বলা হয়েছে, এলাই মিয়া ও আব্দুল কাইয়ূম বসতবাড়িতে গ্যাস সংযোগ দেওয়ার কথা বলে কালিসীমা গ্রামের মোট ৫৮টি পরিবারের কাছ থেকে ৫০ লাখেরও বেশি টাকা হাতিয়ে নেন। টাকা নেওয়ার আগে তারা নিজেদের বাখরাবাদ গ্যাস ডিস্ট্রিবিউশন কোম্পানি লিমিটেডের বৈধ ঠিকাদার বলে মিথ্যা পরিচয় দিয়েছেন। প্রতি সংযোগের জন্য তারা প্রতিটি পরিবারের কাছ থেকে ৭০ হাজার টাকা করে নিয়ে যান। এরপর তারা ভূয়া গ্যাস বিল বই ছাপিয়ে তাতে ভুয়া হিসাব নম্বর বসিয়ে দুই মাসের অগ্রীম বিল দেওয়ার কথা বলে আরও টাকা হাতিয়ে নেন।
পরে গ্রামের কয়েকজন বাখরাবাদ কার্যালয়ে খোঁজ নিয়ে জানতে পারেন বিল বই ও হিসাব নম্বর জালিয়াতির মাধ্যমে তৈরি করা। এরপর বিষয়টি নিয়ে গ্রাম সালিশ বসানো হয়। সালিশে অভিযুক্তরা গ্যাস সংযোগ দিতে অপারগতার কথা স্বীকার করে নেন এবং সবার টাকা ফেরত দেওয়ার আশ্বাস দেন।
এরপরও তারা টাকা ফেরত না দেওয়ায় ভুক্তভোগীরা আদালতে মামলা করেন। মামলার পর অভিযুক্তরা মামলা প্রত্যাহার করে নিতে এলাকাবাসীকে বিভিন্নভাবে হুমকিও দেন।
এসব ঘটনার প্রতিবাদে গত বছর ২২ নভেম্বর কালিসীমা মধ্যপাড়া গ্রামে স্থানীয় ইউপি সদস্য আরজু মিয়ার সভাপতিত্বে গ্রামের কয়েকশ ভুক্তভোগী নারীপুরুষ মানববন্ধন করেছিলেন। মানববন্ধনে ভুক্তভোগীরা তাদের টাকা ফেরত এবং প্রতারকদের দ্রুত আইনের আওতায় এনে বিচারের দাবি জানান। মানববন্ধন শেষে একটি বিক্ষোভ মিছিল গ্রামের বিভিন্ন সড়ক প্রদক্ষিণ করে।
এদিকে মামলা দায়েরের পর ব্রাহ্মণবাড়িয়া সদর মডেল থানার উপপরিদর্শক (এসআই) মোহাম্মদ সাফায়েত উল্লাহ ঘটনাটির সরেজমিন তদন্ত করে গ্যাস সংযোগ দেওয়ার নামে টাকা আত্মসাতের সত্যতা পেয়েছেন মর্মে আদালতে প্রতিবেদন জমা দেন।
Comments