শিশুকে ধর্ষণ-হত্যার পর লাশ লুকিয়ে খোঁজাখুঁজির নাটক করছিল হত্যাকারী: পিবিআই

শিশু নিখোঁজের ঘটনায় স্থানীয় সবজি বিক্রেতা মো. রুবেলকে সন্দেহভাজন হিসেবে উল্লেখ করে সাধারণ ডায়রিও করেছিল শিশুর পরিবার।
গ্রেপ্তার রুবেল। ছবি: সংগৃহীত

১০ বছর বয়সী শিশুটিকে ধর্ষণের পর শ্বাসরোধ করে হত্যা করা হয়। লাশ গুম করতে ত্রিপল দিয়ে ঢেকে ভ্যানে তোলা হয়। পরে সেই ভ্যান রেখে দিয়েই নিখোঁজ শিশুর পরিবারের সঙ্গে খোঁজাখুঁজির নাটক করেছিল অভিযুক্ত সবজি বিক্রেতা মো. রুবেল (৩৫)।

অভিযুক্তের স্বীকারোক্তির বরাত দিয়ে আজ বুধবার পুলিশ ব্যুরো অব ইনভেস্টিগেশন (পিবিআই) চট্টগ্রাম মেট্রোর পুলিশ সুপার নাইমা সুলতানা এসব তথ্য জানান। 

চট্টগ্রামের পাহাড়তলী এলাকা থেকে গত ২১ মার্চ থেকে নিখোঁজ ছিল ১০ বছর বয়সী ওই শিশু। আজ বুধবার সকালে তার বস্তাবন্দি মরদেহ উদ্ধার করা হয়। 

নিখোঁজের ঘটনায় প্রতিবেশী সবজি বিক্রেতা মো. রুবেলকে সন্দেহভাজন হিসেবে উল্লেখ করে সাধারণ ডায়রিও করেছিল শিশুর পরিবার। তবে পরিবারের দাবি, থানা পুলিশ কোনো ব্যবস্থা নেয়নি।

পরে গত মঙ্গলবার আদালতে মামলা করলে রুবেলকে হেফাজতে নেয় পিবিআই। ১৭ ঘণ্টা জিজ্ঞাসাবাদের পর আজ বুধবার ভোরে হত্যা ও লাশ গুম করার কথা স্বীকার করেছেন তিনি।

বুধবার দুপুরে নিজ কার্যালয়ে সংবাদ সম্মেলনে পিবিআই পুলিশ সুপার নাইমা সুলতানা বলেন, 'অভিযুক্ত রুবেলের একটি ভ্রাম্যমাণ তরকারির দোকান আছে এবং শিশুটির পরিবার প্রায়ই তার কাছে থেকে তরকারি কিনত। ঘটনার দিন বিকেলে শিশুটিকে রুবেল একটি বাসায় নিয়ে ধর্ষণ করে। পরে তার গলা চেপে ও বালিশ চাপা দিয়ে হত্যা করে।'

পুলিশ সুপার বলেন, 'জিডির পর ২৩ তারিখ থেকে আমরা ঘটনার ছায়াতদন্ত শুরু করি। গতকাল অভিযুক্তকে হেফাজতে নেওয়ার পর বিভিন্নভাবে তিনি তদন্ত ভুল পথে পরিচালিত করার চেষ্টা করেন। আমরা সিসিটিভি বিশ্লেষণ করেও কিছু পাইনি। এরপর টানা জিজ্ঞাসাবাদের এক পর্যায়ে তিনি ঘটনার বিবরণ দেন।'

মামলার তদন্তকারী কর্মকর্তা ইনস্পেক্টর সাইফুল ইসলাম বলেন, 'হত্যার পর লাশ গুম করার রাস্তা খুঁজছিল রুবেল। ধর্ষণ ও হত্যাকাণ্ডের পুরো ঘটনাটি আধাঘণ্টা থেকে ৪৫ মিনিটের মধ্যে হয়েছে। শিশুটিকে খুঁজে পাওয়া যাচ্ছে না, শুনলে সে নিজেও খোঁজার অভিনয় করতে থাকে।'

নিহত শিশুর পরিবারের দাবি নিখোঁজের পর পাহাড়তলী থানায় ডায়রি করে পরিবার। পুলিশকে রুবেলের কথা বলা হলেও, তাকে শুধু জিজ্ঞাসাবাদ করে পরবর্তীতে ছেড়ে দেয় পুলিশ। 

শিশুর মা বিবি ফাতেমা সাংবাদিকদের বলেন, 'থানা থেকে বলেছে আমার মেয়ে নাকি চলে গেছে। এতটুকু মেয়ে কোথায় যাবে।'

এ বিষয়ে জানতে চাইলে নগর পুলিশের পশ্চিম বিভাগের উপপুলিশ কমিশনার মুহাম্মদ জসিম উদ্দিন দ্য ডেইলি স্টারকে বলেন, 'পুলিশের কাছে জিডি আসার পর অভিযুক্ত রুবেলকে জিজ্ঞাসাবাদ করে ছেড়ে দেওয়া হয়েছে। আমি বিষয়টি নিয়ে ওসির সঙ্গে কথা বলব।'
 

Comments