গায়ে পেট্রল ঢেলে আগুন দেন দেবর, ৪ দিন পর ভাবির মৃত্যু
ব্রাহ্মণবাড়িয়ার নবীনগর উপজেলায় দেবরের দেওয়া আগুনে দগ্ধ গৃহবধূ লতিফা বেগম মারা গেছেন।
আজ বুধবার বিকেল পৌনে ৩টার দিকে রাজধানীর শেখ হাসিনা জাতীয় বার্ন অ্যান্ড প্লাস্টিক সার্জারি ইনস্টিটিউটের আইসিইউতে চিকিৎসাধীন অবস্থায় মারা যান তিনি।
নবীনগর থানায় কর্মরত পুলিশ পরিদর্শক (তদন্ত) সোহেল আহমেদ দ্য ডেইলি স্টারকে বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন।
মাদক সেবনের কথা পরিবারের লোকজনের কাছে ফাঁস করে দেওয়ার ক্ষোভে গত রোববার দুপুরে জালাল মিয়া তার বড় ভাইয়ের স্ত্রীর গায়ে পেট্রল ঢেলে আগুন দিয়ে তার অর্ধেক শরীর ঝলসে দিয়েছিলেন। লতিফা বেগম উপজেলার রসুল্লাহবাদ ইউনিয়নের উত্তর দাররা গ্রামের মো. জাকারিয়া আল আমিনের স্ত্রী।
লতিফার স্বামী জাকারিয়া ডেইলি স্টারকে জানান, তার ছোট ভাই মাদকাসক্ত জালাল মিয়া গত রোববার দুপুরে এক প্রতিবেশীর ঘরে বসে পিঠা তৈরির সময় সেখানে গিয়ে লতিফাকে মারধর শুরু করেন এবং একপর্যায়ে তার গায়ে পেট্রল ঢেলে আগুন ধরিয়ে দেন। আগুনে লতিফার শরীরের ৫৪ শতাংশ ঝলসে যায়। সংকটাপন্ন অবস্থায় সোমবার রাতেই তাকে লাইফ সাপোর্টে নেওয়া হয়।
পারিবারিক সূত্রে জানা যায়, প্রায় ২৭ বছর আগে উত্তর দাররা গ্রামের জিন্নত আলী ব্যাপারীর ছেলে জাকারিয়ার সঙ্গে একই উপজেলার কালঘরা গ্রামের হেলাল সরকারের মেয়ে লতিফার বিয়ে হয়। তাদের দুই ছেলে রয়েছে। বড় ছেলে মো. ইয়াছিন দুবাই প্রবাসী। ছোট ছেলে ফাহিম এ বছর উচ্চমাধ্যমিক পাস করেছেন। জাকারিয়া নিজেও দুবাইয়ে ছিলেন। দেড় বছর আগে তিনি দেশে চলে আসেন।
পরিবার জানায়, জালাল ৪-৫ বছর ধরে মাদকাসক্ত। পরিবারের লোকজন তাকে একাধিকবার পুনর্বাসনকেন্দ্রে চিকিৎসাও করিয়েছেন। কিন্তু পুনর্বাসনকেন্দ্র থেকে বেরিয়ে আবারও মাদক সেবন শুরু করেন তিনি।
মাদকের টাকা যোগাতে নিজের স্ত্রী, বোন ও ভাবি লতিফাকে একাধিকবার মারধর করেছেন জালাল। কয়েক দিন আগে লতিফা তার মাদক সেবন অব্যাহত রাখার বিষয়টি পরিবারের সদস্যদের জানান। এতে জালাল তার ওপর ক্ষুব্ধ হয়ে এ ঘটনা ঘটান।
পুলিশ পরিদর্শক সোহেল আহমেদ বলেন, 'এ ঘটনায় পরিবারের পক্ষ থেকে থানায় মামলা দায়ের করা হয়। আমরা জালালকে গ্রেপ্তার করতে একাধিকবার অভিযান চালিয়েছি। সে মুঠোফোন ব্যবহার করে না বলে তাকে এখনো ধরা সম্ভব হয়নি।'
তাকে ধরতে অভিযান অব্যাহত রয়েছে বলেও জানান তিনি।
Comments