মারমা নারীকে ধর্ষণের প্রতিবাদে বিক্ষোভ, অভিযুক্তকে দ্রুত গ্রেপ্তারের দাবি

ছবি: মংসিং হাই মারমা/স্টার

বান্দরবানের লামা উপজেলায় এক মারমা নারীকে ধর্ষণের অভিযোগে অভিযুক্ত যুবককে দ্রুত গ্রেপ্তারের দাবিতে মানবন্ধন কর্মসূচি পালন ও বিক্ষোভ মিছিল করেছে বান্দরবান জেলা সচেতন ছাত্র সমাজ ও উইমেনস অ্যাক্টিভিস্ট ফোরাম নামে ২টি সংগঠন।

আজ বুধবার সকালে বান্দরবান জেলা প্রেসক্লাবের সামনে এই মানববন্ধন কর্মসূচি অনুষ্ঠিত হয়।

মানববন্ধন থেকে বক্তারা এ ঘটনায় অভিযুক্ত যুবকের বিচার করার কথা বলে তাকে 'পালানোর সুযোগ করে দেওয়ার জন্য' ফাঁসিয়াখালি ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান মো. নূর হোসেন ও সংরক্ষিত ওয়ার্ডের নারী সদস্য জোৎন্সা আক্তারকেও দায়ী করেন।

তাদের ভাষ্য, এ অপরাধে ধর্ষকের পাশাপাশি এই ২ জনপ্রতিনিধিও সমান অপরাধী।

গত শুক্রবার ধর্ষণের এ ঘটনা ঘটে। শনিবার রাতে অভিযুক্ত মো. কায়সারকে (৩৫) আসামি করে লামা থানায় মামলা করেন ভিকটিম নারী। তবে মামলার জন্য ভিকটিমের পরিবারকে দুপুর থেকে রাত পর্যন্ত অপেক্ষা করতে হয় বলে অভিযোগ তোলা হয়।

মামলা হওয়ার ৩ দিন পেরিয়ে গেলেও অভিযুক্ত গ্রেপ্তার না হওয়ায় ক্ষোভ প্রকাশ করে মানববন্ধন থেকে আইনজীবী উবাথোয়াই মারমা বলেন, 'ঘটনার পরপরই ধর্ষককে নিজের হেফাজতে নিয়ে বিচারের নামে তাকে পালানোর সুযোগ করে দেওয়ার জন্য চেয়ারম্যান নূর হোসেন ও সংরক্ষিত ওয়ার্ডের নারী সদস্য জোৎন্সা আক্তার কোনোভাবেই দায় এড়াতে পারেন না। এ ঘটনায় তারা ২ জনও সমান অপরাধী।'

ছবি: মংসিং হাই মারমা/স্টার

এ অবস্থায় অভিযুক্ত কায়সারসহ এই ২ জনপ্রতিনিধিকেও গ্রেপ্তারের দাবি জানান উবাথোয়াই মারমা। তিনি আরও বলেন, 'পার্বত্য এলাকায় সংঘটিত প্রায় সব অপরাধের ক্ষেত্রেই অপরাধীরা কোনো না কোনোভাবে রাজনৈতিক ছত্রছায়ায় পার পেয়ে যায়। ফলে পাহাড়ে দিন দিন ধর্ষণের মতো অপরাধও বেড়ে চলেছে।'

এই বক্তব্যের সঙ্গে সহমত পোষণ করেন আইনজীবী ও উইমেনস অ্যাক্টিভিস্ট ফোরামের সদস্য মাধবী মারমা।

এছাড়া মামলা করার পর ভিকটিমের পরিবারের সদস্য ও স্বজনদের হুমকি দেওয়ার অভিযোগ এনে মংসেসিং মারমা বলেন, 'কোনো বিবেকবান মানুষ কোনোভাবে একজন ধর্ষকের পক্ষে কথা বলতে পারেন না।'

মানবন্ধন শেষে অভিযুক্ত কায়সারসহ তার 'আশ্রয়দাতাদের' গ্রেপ্তারের স্লোগান তুলে একটি বিক্ষোভ মিছিল শহরের প্রধান সড়ক প্রদক্ষিণ করে।

এ ব্যাপারে লামা থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) এস এম শহিদুল ইসলাম দ্যা ডেইলি স্টারকে বলেন, 'অভিযুক্ত কায়সারকে গ্রেপ্তারে আমাদের অভিযান অব্যাহত আছে।'

ছবি: মংসিং হাই মারমা/স্টার

এ ছাড়া চেয়ারম্যান নূর হোসেন ও সংরক্ষিত ওয়ার্ডের নারী সদস্য জোৎন্সা আক্তারের বিরুদ্ধে ওঠা অভিযোগের বিষয়ে তার বক্তব্য, 'এই অভিযোগেরও তদন্ত চলছে। প্রমাণিত হলে প্রচলিত আইনের আওতায় তাদেরও বিচার করা হবে।'

ভিকটিমের পরিবারের সদস্যরা জানান, শুক্রবার দুপুরে গ্রামের পাশের ঝিরি থেকে চিৎকার শুনতে পেয়ে পাশের জমিতে কাজ করতে থাকা গ্রামবাসী জঙ্গলে আহত নারীকে দেখতে পায়। এসময় অভিযুক্ত কায়সারকে (৩৫) পালিয়ে যেতে দেখলে গ্রামবাসীরা তাকে ধরে পিটুনি দিয়ে বেঁধে রাখে।

গ্রামবাসীদের ভাষ্য, ঘটনাস্থল থেকে পালিয়ে যাওয়ার সময় কায়সারকে ধরে পিটুনি দিয়ে পুলিশের কাছে দেওয়ার আগেই সংরক্ষিত ওয়ার্ডের নারী সদস্য জোৎন্সা আক্তার চেয়ারম্যান কার্যালয়ে তার বিচার করবেন বলে কায়সারকে নিয়ে যান। চেয়ারম্যান কায়সারকে চিকিৎসার জন্য হাসপাতালে পাঠাতে বলেন এবং সুস্থ হয়ে আসার পর বিচার করা হবে জানান।

এদিকে ভিকটিমের নিরাপত্তা নিশ্চিতে যথাযথ ব্যবস্থা নেওয়ার জন্য উপজেলার প্রশাসনের প্রতি অনুরোধ জানিয়েছেন তার পরিবারের সদস্যরা।

 

Comments

The Daily Star  | English

Tax officials protest at NBR headquarters over draft revenue law

Several hundred tax and customs officials staged a demonstration at the National Board of Revenue (NBR) headquarters in Dhaka today, demanding revisions to a draft ordinance that proposes dividing the board into two separate divisions and allowing top appointments from outside the revenue cadre.

1h ago