ফারদিনের আত্মহত্যার সলিড প্রমাণ দেখাতে পারেনি ডিবি: বুয়েট শিক্ষার্থীরা

সাংবাদিকদের সঙ্গে কথা বলছেন বুয়েট শিক্ষার্থীরা। ছবি: সিরাজুল ইসলাম রুবেল/স্টার

বাংলাদেশ প্রকৌশল বিশ্ববিদ্যালয়ের (বুয়েট) শিক্ষার্থী ফারদিন নূর পরশের 'আত্মহত্যা'র বিষয়ে ঢাকা মহানগর পুলিশের গোয়েন্দা শাখা (ডিবি) সলিড কোনো প্রমাণ দেখাতে পারেনি বলে জানিয়েছেন বিশ্ববিদ্যালয়টির শিক্ষার্থীরা।

আজ বৃহস্পতিবার সাংবাদিকদের তারা এ তথ্য জানান।

গতকাল সন্ধ্যায় বুয়েট শিক্ষার্থী ফারদিনের মৃত্যুর ঘটনাকে 'আত্মহত্যা' বলে উল্লেখ করেছে ডিবি। সংবাদ ব্রিফিংয়ে ফারদিনের 'আত্মহত্যা'র পেছনের কিছু কারণের কথাও উল্লেখ করেন ডিবি প্রধান মোহাম্মদ হারুন অর রশীদ।

ডিবির এ বক্তব্যের পর বুয়েট শিক্ষার্থীরা আজ ক্যাম্পাসে মানববন্ধন কর্মসূচি ঘোষণা করেন। তখন শিক্ষার্থীদের কর্মসূচিতে যাওয়ার আগে ডিবি কার্যালয়ে গিয়ে তথ্য-প্রমাণ ও সিসিটিভি ফুটেজ দেখার আমন্ত্রণ জানায় ডিবি। পরে আজ সকাল সোয়া ১১টার দিকে ডিবি কার্যালয়ে যান শিক্ষার্থীদের ১০ জনের প্রতিনিধিদল।

পরে যেসব তথ্য-প্রমাণের ভিত্তিতে ডিবি দাবি করছে যে, ফারদিন আত্মহত্যা করেছে, সেসব তথ্য-প্রমাণের বিস্তারিত বুয়েট শিক্ষার্থীদের দেখানো হয়েছে। ডিবি প্রধান হারুন অর রশীদের উপস্থিতিতে প্রায় ২ ঘণ্টা ধরে শিক্ষার্থীদের প্রতিনিধিদলকে তথ্যপ্রমাণ দেখানো হয়৷ ডিবির কার্যালয় থেকে বের হয়ে বুয়েট শিক্ষার্থীরা সাংবাদিকদের জানান, যে আলামতগুলো ছিল, সেগুলো ডিবি কর্মকর্তারা তাদের দেখিয়েছেন৷

যে তথ্য-প্রমাণ দেখানো হয়েছে, সেগুলো দেখে কি মনে হয়েছে ফারদিন আত্মহত্যা করেছে?, শিক্ষার্থীদের কাছে জানতে চাইলে তারা বলেন, ফারদিন আসলেই আত্মহত্যা করেছে কি না, সেই মোটিভ এখনো পরিষ্কার না৷ গোয়েন্দা সংস্থার কর্মকর্তারা ওই রকম সলিড বা কনক্রিট কোনো তথ্য প্রমাণ আমাদের দেখাতে পারেনি৷ তদন্তের বিষয়ে ডিবি কর্মকর্তারা বলেছেন, তারাও শতভাগ নিশ্চিত নন যে ফারদিন আত্মহত্যা করেছে৷ আলামতের মধ্যে কিছুটা গ্যাপ আছে৷ সেগুলো নিয়ে তারা কাজ করছেন৷'

'তবে, যেসব আলামত আমাদের দেখানো হয়েছে, সেগুলো আমাদের কাছে প্রাসঙ্গিক বলে মনে হয়েছে৷ এগুলোর খুঁজে বের করতে তাদের অনেক প্রচেষ্টা ছিল৷ কিন্তু, এসব আলামতের মধ্যেও কিছু কিছু জায়গায় গ্যাপ আছে৷ গ্যাপগুলো নিয়ে সামনে তারা আরও কাজ করবেন বলে আমাদের আশ্বস্ত করেছেন', বলেন শিক্ষার্থীরা।

তারা আরও বলেন, 'একটি গ্যাপ ছিল এরকম যে, ব্রিজের যে পাড়ে ফারদিনকে নামিয়ে দেওয়া হয়েছিল, সেখান থেকে সে যে ব্রিজের মাঝে গিয়েছে, তখন তার সঙ্গে কে ছিল বা সে একা ছিল কি না, এ জায়গাটাতে গ্যাপ আছে৷ ফারদিন যে লেগুনা থেকে নেমেছে, সেই লেগুনার চালক তদন্তকারী কর্মকর্তাদের বলেছিলেন, ফারদিন ও তার সঙ্গে আরেকজন নেমেছিলেন৷ কিন্তু কে নেমেছে, সেটি এখন পর্যন্ত পরিষ্কার না৷ এর বাইরে অন্যান্য বিষয়ে তদন্তকারী কর্মকর্তারা কিছু কনক্রিট প্রমাণ আমাদের দেখিয়েছেন৷ তদন্তকারী কর্মকর্তাদের কাজে আমরা সন্তুষ্ট৷ এজন্য তাদের ধন্যবাদ জানাই৷'

শিক্ষার্থীদের বক্তব্যের পর ডিবি কার্যালয়ে সাংবাদিক সঙ্গে কথা বলেন সংস্থাটির প্রধান হারুন অর রশীদ৷ তিনি বলেন, 'ফারদিন যে আত্মহত্যা করেছেন, সে তথ্য-প্রমাণগুলো বুয়েটের শিক্ষার্থীদের দেখিয়েছি৷ তারা মোটামুটি সন্তুষ্ট হয়েছেন৷ আর এ ঘটনার সঙ্গে তার ফারদিনের বান্ধবী আমাতুল্লাহ বুশরার কোনো সংশ্লিষ্টতা নেই৷ এ বিষয়টি আদালতকে জানিয়ে দেবো৷'

Comments

The Daily Star  | English
Reforms vs election

Reforms vs election: A distracting debate

Those who place the election above reforms undervalue the vital need for the latter.

16h ago