সেতু থেকে স্বেচ্ছায় শীতলক্ষ্যায় ঝাঁপ দেন ফারদিন: র্যাব
বুয়েটশিক্ষার্থী ফারদিন নুর পরশ স্বেচ্ছায় সুলতানা কামাল সেতু থেকে শীতলক্ষ্যা নদীতে ঝাঁপ দিয়ে মারা গেছেন বলে দাবি করেছে র্যাপিড অ্যাকশন ব্যাটালিয়ন (র্যাব)।
আজ বুধবার র্যাব সদরদপ্তরে এক সংবাদ ব্রিফিংয়ে র্যাবের আইন ও গণমাধ্যম শাখার পরিচালক কমান্ডার খন্দকার আল মঈন এ দাবি করেন।
ফারদিনের মৃত্যুর ঘটনার তদন্তে সিসিটিভি ফুটেজসহ স্থানীয় বিভিন্ন সূত্র ধরে র্যাব তদন্ত করেছে উল্লেখ করে তিনি বলেন, 'সিসিটিভি ফুটেজ, ডিজিটাল ফুটপ্রিন্টসহ অন্যান্য সব সংশ্লিষ্ট আলামত বিবেচনা করে আমাদের তদন্তে বের হয়ে এসেছে যে বুয়েটশিক্ষার্থী ফারদিন স্বেচ্ছায় সুলতানা কামাল ব্রিজ থেকে নদীতে ঝাঁপ দিয়ে মারা যান।'
তিনি বলেন, 'সিসিটিভি ফুটেজ বিশ্লেষণ করে জানা যায় ঘটনার রাত ২টা ১ মিনিটে যাত্রাবাড়ীর বিবিরবাগিচা থেকে ফারদিনকে লেগুনায় উঠতে দেখা যায়। রাত আনুমানিক ২টা ২০ মিনিটে তিনি সুলতানা কামাল ব্রিজের অপর পাশে তারাবো বিশ্বরোড বাসস্ট্যান্ড এলাকায় লেগুনা থেকে নেমে যান।'
'তথ্য প্রযুক্তির মাধ্যমে জানা যায় রাত ২টা ২৬ মিনিটে সুলতানা কামাল ব্রিজের তারাবো প্রান্তে ফারদিনের অবস্থান করছিলেন। পরে রাত ২টা ৩৪ মিনিটে তিনি ৪০০-৫০০ মিটার দীর্ঘ সুলতানা কামাল ব্রিজের প্রায় মাঝখানে পৌঁছান। পরে রাত ২টা ৩৪ মিনিটে ফারদিন ব্রিজের রেলিং ক্রস করেন এবং ২টা ৩৪ মিনিট ১৬ সেকেন্ডে ব্রিজ থেকে স্বেচ্ছায় নদীতে ঝাঁপ দেন,' বলেন তিনি।
এই র্যাব কর্মকর্তা আরও জানান, পানিতে পড়ার পর রাত ২টা ৩৫ মিনিটে ফারদিনের মোবাইল ফোন বন্ধ হয়ে যায় এবং ২টা ৫১ মিনিটে ফারদিনের হাতঘড়িতে পানি ঢুকে অকার্যকর হয়ে পড়ে।
গত ৭ নভেম্বর নারায়ণগঞ্জের শীতলক্ষ্যা নদী থেকে ফারদিনের মরদেহ উদ্ধার করে নৌ পুলিশ।
র্যাব জানায়, গত ৪ নভেম্বর বিকেল ৩টায় রাজধানী ডেমরার কোনাপাড়ায় নিজ বাসা থেকে পরীক্ষার কথা বলে বুয়েটের হলের উদ্দেশে বের হন ফারদিন। বিকেল আনুমানিক ৫টায় ফারদিন সায়েন্স ল্যাব মোড়ে তার বন্ধুর সঙ্গে দেখা করেন। পরে সেখান থেকে নীলক্ষেত ও ধানমন্ডিসহ আশেপাশের এলাকায় ঘোরাঘুরি করে। ফারদিন সাত মসজিদ রোডে একটি রেস্টুরেন্টে খাবার খেয়ে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের উদ্দেশে রওনা হন।
রাত আনুমানিক ৮টার দিকে ফারদিন ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের টিএসসিসহ আশেপাশের এলাকায় ঘোরাঘুরি করেন। পরে তিনি রিকশায় করে রামপুরার দিকে যায়। রাত পৌনে ১০টার দিকে তিনি রামপুরা ব্রিজ এলাকায় রিকশা থেকে নেমে যান এবং ওই এলাকায় ঘোরাফেরা করেন।
প্রযুক্তিগত বিশ্লেষণের বরাত দিয়ে র্যাব আরও জানায়, 'রামপুরা থেকে পরে ফারদিন কেরানীগঞ্জের জিনজিরা, বাবুবাজার ব্রিজ সংলগ্ন এলাকা, পুরান ঢাকার জনসন রোড, গুলিস্তানের পাতাল মার্কেট এলাকায় যান।'
'তদন্তকারী কর্মকর্তা তদন্ত কার্যক্রম চালিয়ে যাচ্ছেন' উল্লেখ করে কমান্ডার খন্দকার আল মঈন বলেন, 'ফারদিনের মৃত্যু সংক্রান্ত অন্য কোনো সূত্র বা আলামত পাওয়া গেলে, তা বিবেচনায় নিয়ে মামলার তদন্তকারী কর্মকর্তা তদন্ত কার্যক্রম পরিচালনা করবেন।'
Comments