আয়াত হত্যা মামলা: আসামির মা-বাবা ৩ দিনের রিমান্ডে

চট্টগ্রাম
স্টার অনলাইন গ্রাফিক্স

আয়াত হত্যা মামলায় গ্রেপ্তার আসামি আবীরের মা ও বাবার ৩ দিনের রিমান্ড মঞ্জুর করেছেন আদালত।

আজ মঙ্গলবার তদন্ত কর্মকর্তা তাদেরকে ৭ দিনের রিমান্ডে নেওয়ার আবেদন করলে শুনানি শেষে চট্টগ্রাম মেট্রোপলিটন ম্যাজিস্ট্রেট অলি উল্লাহ ৩ দিনের রিমান্ড মঞ্জুর করেন।

মামলার তদন্ত কর্মকর্তা পিবিআইয়ের এসআই মনোজ দে জানান, এ মামলায় আসামি আবির মিয়ার বাবা আজহারুল ইসলাম ও মা আলো বেগম ছাড়াও আবিরের বোনকে (১৫) গ্রেপ্তার করা হয়েছে।

আবিরের বোনকে নারী ও শিশু নির্যাতন দমন ট্রাইব্যুনাল-৬ এ তোলা হলে আদালত তাকে কিশোর সংশোধনাগারে রেখে জিজ্ঞাসাবাদের অনুমতি দেন।

একাধিক সূত্র নিশ্চিত করেছে, আজহারুল, আলো ও তাদের মেয়েকে র‌্যাব গ্রেপ্তার করে পিবিআইয়ের সোপর্দ করেছে।

চট্টগ্রামের ইপিজেড থানা এলাকা থেকে ৫ বছর বয়সী আলিনা ইসলাম আয়াত নিখোঁজের ১০ দিন পর ২ জনকে গ্রেপ্তার করে পিবিআই।

পিবিআই মেট্রোর পুলিশ সুপার নাইমা সুলতানা দ্য ডেইলি স্টারকে বলেন, 'মুক্তিপণ আদায়ের জন্য শিশুটিকে অপহরণ করেছিল আবীর। একপর্যায়ে শ্বাসরোধে হত্যা করে। মরদেহ গুম করতে টুকরো করা হয় এবং প্যাকেটে মুড়িয়ে সাগর ও খালের ২টি জায়গায় ছড়িয়ে দিয়েছে। ভারতীয় টিভি শো ক্রাইম পেট্রোল ও সিআইডি দেখে হত্যাকাণ্ড ও আলামত লুকিয়ে ফেলার এমন নৃশংস ও ভয়ঙ্কর কৌশল রপ্ত করেছে বলে জিজ্ঞাসাবাদে পুলিশকে জানিয়েছে আবীর।'

পিবিআই মেট্রোর পরিদর্শক ইলিয়াস খান বলেন, 'আবীরের উদ্দেশ্যে ছিল অপহরণ করে আয়াতের পরিবারের কাছ থেকে টাকা আদায় করা। এজন্য সে পরিকল্পনা করছিল। কয়েক মাস আগে রাস্তায় একটি সিম খুঁজে পায় আবীর। নতুন ফোন কিনে মুক্তিপণ দাবির জন্য সে মোবাইলে সিমটি ঢোকায়। কিন্তু সিমটি কাজ না করায় আর মুক্তিপণ চাইতে পারেনি।'

'সিসিটিভি ফুটেজে আবীরকে ২টি ব্যাগ নিয়ে যেতে দেখা যায়। পিবিআই কর্মকর্তারা তার মায়ের বাসায় গিয়ে ব্যাগ ২টি খোঁজেন। একটি ব্যাগ পেলেও অন্যটি পাননি। তখন তাদের সন্দেহ হয়। জিজ্ঞাসাবাদের জন্য আবীরকে নিয়ে পিবিআই কার্যালয়ে নিয়ে আসা হয়। একপর্যায়ে হত্যাকাণ্ডের কথা স্বীকার করে আবীর,' বলেন ইলিয়াস।

পিবিআই কর্মকর্তারা জানিয়েছে আবীর জিজ্ঞাসাবাদে জানিয়েছে, সে ২০ লাখ টাকা মুক্তিপণ নিতে চেয়েছিল। তার বাবা-মার মধ্যে সমস্যা আছে। আর বেকার থাকা অবস্থায় তার টাকার দরকার ছিল। সে সিএনজি কিনে তা দিয়ে ব্যবসা করার পরিকল্পনা করেছিল।

আবীরের দেওয়া তথ্য অনুযায়ী তার আরেক বন্ধু হাসিবকেও আটক করে পিবিআই। হাসিব চায়ের দোকানে কাজ করে।

জানা গেছে, নিহত শিশু আয়াত ইপিজেড থানার দক্ষিণ হালিশহর বন্দরটিলা নয়ারহাট ওয়াজ মুন্সীর নতুন বাড়ির সোহেল রানার মেয়ে। সে স্থানীয় মাদ্রাসার শিক্ষার্থী ছিল। গত ১৫ নভেম্বর বিকেলে বাসা থেকে বের হয় আয়াত। তারপর বিভিন্ন জায়গায় খুঁজেও তার সন্ধান পাওয়া যায়নি। পরে ইপিজেড থানায় একটি জিডি করে তার পরিবার।

আয়াতদের ভবনের নিচতলায় দীর্ঘদিন ধরে পরিবার নিয়ে ভাড়া থাকতেন রংপুরের আবীরের পরিবার। চলতি মাসের শুরুতে তার মা আকমল আলী রোডের পকেট গেট এলাকায় আলাদা বাসা নেন। সেখানে মায়ের সঙ্গে আবীর থাকত।

Comments

The Daily Star  | English

Protests disrupt city life, again

Protests blocking major thoroughfares in Karwan Bazar and Shahbagh left the capital largely paralysed

1h ago