ডিবি তুলে নেওয়ার পর নোয়াখালী জাসদ সভাপতি পারভেজ কারাগারে

নোয়াখালী জেলা জাসদ (ইনু) সভাপতি নুর আলম চৌধুরী পারভেজকে বাসা থেকে তুলে নেওয়ার পর ৫৪ ধারায় গ্রেপ্তার দেখিয়ে আদালতে পাঠিয়েছে গোয়েন্দা পুলিশ (ডিবি)। পরে আদালত তাকে কারাগারে পাঠানোর নির্দেশ দেন।
নোয়াখালী জেলা জাসদ (ইনু) সভাপতি নুর আলম চৌধুরী পারভেজ। ছবি: সংগৃহীত

নোয়াখালী জেলা জাসদ (ইনু) সভাপতি নুর আলম চৌধুরী পারভেজকে বাসা থেকে তুলে নেওয়ার পর ৫৪ ধারায় গ্রেপ্তার দেখিয়ে আদালতে পাঠিয়েছে গোয়েন্দা পুলিশ (ডিবি)। পরে আদালত তাকে কারাগারে পাঠানোর নির্দেশ দেন।

এর আগে, গতকাল সন্ধ্যায় জেলা শহর মাইজদীর বাসা থেকে ডিবি পুলিশ তাকে তুলে নেয় বলে অভিযোগ করে পরিবার।

পরিবার জানায়, পারভেজ পরিচ্ছন্ন রাজনীতির সঙ্গে যুক্ত ও নিজে ব্যবসা করেন। বিনা কারণে তাকে তুলে নিয়ে যায় ডিবি। তবে এ বিষয়ে রাতভর কোনো তথ্য দেয়নি তারা।

এ ঘটনায় পারভেজের পরিবার, বন্ধু মহলে দেখা দেয় চরম উদ্বেগ-উৎকণ্ঠা। তাৎক্ষণিক এ বিষয়ে গণমাধ্যমকর্মীরা পুলিশ সুপারসহ ডিবি কর্মকর্তাদের কাছে জানতে চাইলে তারা কোনো তথ্য দেননি। তবে তুলে নেওয়ার কয়েক ঘণ্টা পর বিষয়টি স্বীকার করে ডিবি, কিন্তু বিস্তারিত কোনো তথ্য দেয়নি।

পরিবার জানায়, অ্যাডভোকেট বাদশা আলমের (মৃত) ছেলে প্রগতিশীল বাম রাজনৈতিক ব্যক্তিত্ব পারভেজ এলাকায় সজ্জন ব্যক্তি হিসেবে পরিচিত। তার বিরুদ্ধে অতীতে কোনো মামলা কিংবা জিডি নেই।

পরিবারের অভিযোগ, গতকাল সন্ধ্যার পর পারভেজ জেলা শিল্পকলা একাডেমির কাছে নিজ বাসায় অবস্থান করছিলেন। রাত আনুমানিক সাড়ে ৮টার দিকে জেলা ডিবি পুলিশের ১৫-১৬ সদস্য সেখান থেকে তাকে তুলে নিয়ে যান। সেসময় পরিবারের সদস্যরা তাকে তুলে নেওয়ার কারণ জানতে চাইলে ডিবি কোনো কারণ বলেনি।

হঠাৎ করে কোনো কারণ ছাড়াই পারভেজকে তুলে নিয়ে যাওয়ায় বিষয়টি নিয়ে শহরে ধোঁয়াশার সৃষ্টি হয়েছে। মঙ্গলবার রাতভর এবং আজ বুধবার দুপুর পর্যন্ত পারভেজকে ডিবি কার্যালয়ে জিজ্ঞাসাবাদ করা হয়েছে। জিজ্ঞাসাবাদ শেষে আজ বিকেলে তাকে ৫৪ ধারায় গ্রেপ্তার দেখিয়ে নোয়াখালী চীফ জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট কোর্টে হাজির করা হয়। শুনানি শেষে আদালত তাকে কারাগারে পাঠানোর নির্দেশ দেন।

 জাসদ (ইনু) নোয়াখালী জেলা শাখার সাধারণ সম্পাদক অ্যাডভোকেট আজিজুল হক বকসি দ্য ডেইলি স্টারকে বলেন, 'পারভেজকে ৫৪ ধারায় গ্রেপ্তার দেখিয়ে আদালতের মাধ্যমে কারাগারে পাঠানো হয়েছে।'

তবে এ নিয়ে বেশি কিছু বলতে অপারগতা প্রকাশ করেন তিনি।

স্থানীয় সূত্রে জানা গেছে, পারভেজের ছোট ভাই লন্ডন প্রবাসী শামছুল আলম লিটন বিএনপির রাজনীতির সঙ্গে জড়িত। তিনি দৈনিক দিনকাল পত্রিকার ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় প্রতিনিধি এবং বিএনপির সাবেক প্রেসিডেন্ট ইয়াজউদ্দিন আহমেদের ডেপুটি প্রেস সেক্রেটারি হিসেব দায়িত্ব পালন করেছিলেন। বর্তমানে তিনি সুরমা নামে একটি সাপ্তাহিক পত্রিকার সম্পাদনা করছেন। সম্প্রতি ওই পত্রিকায় বাংলাদেশ সরকারের বিরুদ্ধে বিভিন্ন লেখা প্রকাশ এবং প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার যুক্তরাজ্য সফর উপলক্ষে অপপ্রচার চালানোর অভিযোগ রয়েছে লিটনের বিরুদ্ধে।

 জেলা গোয়েন্দা পুলিশের (ডিবি) ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) নাজিম উদ্দিন আহমেদ ডেইলি স্টারকে বলেন, 'একটি বিশেষ কারণে পারভেজকে প্রথমে আটক এবং পরবর্তীতে ৫৪ ধারায় গ্রেপ্তার দেখিয়ে আদালতের মাধ্যমে কারাগারে পাঠানো হয়েছে। তাকে জিজ্ঞাসাবাদে বেশ কিছু গুরুত্বপূর্ণ তথ্য পাওয়া গেছে। পুলিশ এ নিয়ে কাজ করছে।'

পারভেজকে রিমান্ডে নেওয়া হবে কি না, জানাতে চাইলে তিনি বলেন, 'এ বিষয়ে পরবর্তীতে সিদ্ধান্ত নেওয়া হবে।'

নোয়াখালীর পুলিশ সুপার মো. শহীদুল ইসলাম ডেইলি স্টারকে বলেন, 'একটি গোয়েন্দা সংস্থার তথ্যের ভিত্তিতে পারভেজকে প্রথমে আটক পরে ৫৪ ধারায় গ্রেপ্তার দেখিয়ে আদালতের মাধ্যমে কারাগারে পাঠানো হয়েছে। তার বিরুদ্ধে পাওয়া তথ্যগুলো পুলিশ খতিয়ে দেখছে।' 

Comments

The Daily Star  | English
Bangladeshi-Americans eager to help build new Bangladesh

July uprising and some thoughts of Bangladeshi-Americans

NRBs gathered in New Jersey showed eagerness to assist in the journey of the new Bangladesh forward.

5h ago