রাজশাহীতে বাগান থেকে আম সংগ্রহ শুরু
রাজশাহীতে বাগান থেকে আম সংগ্রহ শুরু হয়েছে। গত বছরের তুলনায় এবার প্রায় দুই সপ্তাহ আগেই রাজশাহীতে আম সংগ্রহ শুরু হলো।
গতকাল বুধবার রাজশাহী জেলা প্রশাসকের সম্মেলনকক্ষে জেলায় বিভিন্ন জাতের আম সংগ্রহের তারিখ নির্ধারণ করা হয়। সিদ্ধান্ত অনুযায়ী আজ বৃহস্পতিবার থেকে গুটি আম সংগ্রহ শুরু হয়েছে। তবে বেশির ভাগ চাষি আম পরিপক্ব হওয়ার জন্য অন্তত আরও এক সপ্তাহ অপেক্ষা করার পক্ষে বলে জানিয়েছেন চাষি ও কৃষি কর্মকর্তারা।
তারা বলেন, গত মাসে তীব্র গরম ছিল। ওই সময় বৃষ্টি না হওয়ায় আম ঠিকমতো বড় হয়নি। গত সপ্তাহ থেকে বৃষ্টি শুরু হওয়ায় আমের ভালো ফলনের ব্যাপারে তারা আশাবাদী।
কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তর এ বছর ২ লাখ ৫৮ হাজার টন উৎপাদনের আমের আশা করছে যা গত বছরের চেয়ে বেশি। এ বছর ভালো ফলনের ব্যাপারে আশাবাদী আম উৎপাদন ও ব্যবসার সঙ্গে জড়িতরা। তাদের কাছে এখন একমাত্র আশঙ্কা শিলাবৃষ্টি নিয়ে।
রাজশাহী শহরের আম উৎপাদনকারী আনোয়ারুল হক বলেন, 'আমরা ঝড়ের ভয় করি না, কারণ ঝড়ে পড়া আম প্রক্রিয়াজাত করে ব্যবহার করা যায়।'
'কিন্তু শিলাবৃষ্টিতে ঝরে যাওয়া আম কোনো কাজে আসে না,' বলেন তিনি।
গত বছরের তুলনায় এবার ভালো ফল পেয়েছেন রাজশাহীর বাঘা উপজেলার আম উৎপাদনকারী শফিকুল ইসলাম সানা। তবে এবার আমের দাম কেমন হবে তা নিয়ে উদ্বিগ্ন তিনি।
তিনি বলেন, 'এ বছর আমার লক্ষ্য আম রপ্তানি করা। রপ্তানি না করতে পারলে লোকসান হবে।'
শফিকুল ইসলাম গত বছর প্রায় ৩৬ টন আম রপ্তানি করেছিলেন। তিনি এ বছর যুক্তরাজ্য, ডেনমার্ক, নরওয়ে, হংকং এবং ইতালিতে ২০০ টন আম রপ্তানির আশা করছেন।
তিনি বুধবার ৩০০ কেজি গুটি জাতের আম ইতালিতে এবং বৃহস্পতিবার ১৪০ কেজি আম হংকংয়ে পাঠিয়েছেন।
দেশের দ্বিতীয় বৃহত্তম আমের বাজার পুঠিয়া উপজেলার বানেশ্বরে বৃহস্পতিবার খালি দেখা গেছে। সংশ্লিষ্টরা জানান, ক্রেতা না থাকায় তারা বাজারে আম নিয়ে যাননি।
তবে পুঠিয়া, চারঘাট ও বাঘা উপজেলার কিছু কৃষক আজ গাছ থেকে আম সংগ্রহ করেছেন। বানেশ্বরের স্থানীয় এক ব্যবসায়ী জানান, কাঁচা মিঠা আম প্রতি কেজি ১২০ টাকায় বিক্রি হয়েছে।
রাজশাহী কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরের উপ-পরিচালক মোজদার হোসেন জানান, চলতি মৌসুমে দেড় হাজার কোটি টাকার আমের ব্যবসা হবে বলে তারা আশা করছেন।
রাজশাহীর জেলা প্রশাসক শামীম আহমেদ জানান, অপরিপক্ব আম যাতে বাজারে না আসে এবং চাষিরা যাতে কোনো সমস্যায় না পড়ে সে বিষয়ে উপজেলা পর্যায়ের কর্মকর্তাদের নির্দেশ দিয়েছেন তারা।
Comments