সুগন্ধায় তেলভর্তি জাহাজে বিস্ফোরণ: নিখোঁজ ১ জনের মরদেহ উদ্ধার

সুগন্ধায় তেলভর্তি জাহাজে বিস্ফোরণ: নিখোঁজ ১ জনের মরদেহ উদ্ধার
ছবি: স্টার

ঝালকাঠির সুগন্ধা নদীতে তেলভর্তি একটি জাহাজের ইঞ্জিনকক্ষে বিস্ফোরণের পর ওই জাহাজের ৯ জন কর্মীর মধ্যে ৪ জন নিখোঁজ ছিলেন। আজ রোববার তাদের মধ্যে আব্দুস সালাম হৃদয় নামে একজনের মরদেহ উদ্ধার করা হয়েছে।

আব্দুস সালাম জাহাজের গ্রিজারম্যান হিসেবে কর্মরত ছিলেন। তার বাড়ি হবিগঞ্জের মাধবপুরে।

আজ বিকেল সোয়া ৩টার দিকে তার মরদেহটি জাহাজের ইঞ্জিনরুম থেকে উদ্ধার করা হয়।

শনিবার দুপুর ২টার দিকে সুগন্ধা নদীতে ঝালকাঠি পৌর খেয়াঘাটের বিপরীত পাশে পদ্মা অয়েল কোম্পানির তেল বোঝাই 'সাগর নন্দিনী-২' জাহাজে এই বিস্ফোরণ ঘটে।

এ ঘটনায় ওই জাহাজের ইঞ্জিনকক্ষের ওপরে থাকা মাস্টার ব্রিজটি পুরোপুরি ছিটকে নদীতে পড়ে যায়। তবে যে অংশে তেল রয়েছে, সেই অংশটি অক্ষত থাকায় নদীতে তেল ছড়িয়ে পরেনি।

গত মঙ্গলবার চট্টগ্রাম থেকে ৭ লাখ লিটার ডিজেল এবং ৪ লাথ লিটার পেট্রল নিয়ে ঝালকাঠির উদ্দেশে জাহাজটি রওনা দিয়ে বৃহস্পতিবার পৌঁছায় বলে জানান বরিশালে কর্তব্যরত পদ্মা অয়েল কোম্পানির মার্কেটিং কর্মকর্তা শরিফুল ইসলাম। এরপরই জাহাজটি ঝালকাঠি শহরের পাশে সুগন্ধা নদীতে নোঙর করা ছিল।

আজই ঝালকাঠি ডিপোতে জাহাজ থেকে তেল নামানোর কথা ছিল বলে জানান শরিফুল ইসলাম। এর আগেই এ দুর্ঘটনা ঘটে।

দুর্ঘটনায় অগ্নিদগ্ধরা হলেন—বরিশালের বাকেরগঞ্জ উপজেলার মনিরুল ইসলামের ছেলে মাইনুল ইসলাম ওরফে হৃদয় (২৫), পাবনার সাঁধিয়া উপজেলার করমজা গ্রামের মোতাহার আলীর ছেলে শাকিল আহম্মেদ (২৩), চাঁদপুর সদর উপজেলার মহিষাধি গ্রামের ফরিদুল ইসলাম পাটোয়ারি (৬০) এবং পিরোজপুরের মঠবাড়িয়া উপজেলার ধানীসাফা গ্রামের সালাম বেপারীর ছেলে ইকবাল হোসাইন।

অগ্নিদগ্ধরা বর্তমানে বরিশাল শের-ই-বাংলা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের বার্ন ইউনিটে চিকিৎসাধীন রয়েছেন।

হাসপাতালে চিকিৎসাধীন শাকিল জানান, দুপুরে তারা সবাই একসঙ্গে মাস্টার ব্রিজের নিচে বসে ছিলেন। এ সময় ইঞ্জিনকক্ষে সৃষ্টি হওয়া গ্যাসের মাধ্যমে ইঞ্জিনকক্ষে আগুন ধরে বিস্ফোরণ হয়। এতে মাস্টার ব্রিজটি জাহাজ থেকে পুরোপুরি বিচ্ছিন্ন হয়ে নদীতে পড়ে যায়।

ঝালকাঠি ফায়ার সার্ভিসের কর্মীরা খবর পেয়ে তাৎক্ষণিক ঘটনাস্থলে গিয়ে অগ্নিদগ্ধ ৪ জনকে উদ্ধার করে ঝালকাঠি সদর হাসপাতালে নিয়ে যায়। এরপর সেখান থেকে উন্নত চিকিৎসার জন্য তাদের বরিশালে পাঠানো হয়।

এ সময় অক্ষত অবস্থায় জাহাজের বাবুর্চি ছাড়া বাকি ৪ জনকে উদ্ধার করতে পারেনি ফায়ার সার্ভিস। উদ্ধার হওয়া বাবুর্চি বর্তমানে পুলিশ তত্ত্বাবধানে রয়েছে।

এই ঘটনা তদন্তে ঝালকাঠির অতিরিক্ত জেলা প্রশাসক (সার্বিক) মো. রুহুল আমীনকে প্রধান করে ৩ সদস্যের একটি তদন্ত কমিটি গঠন করা হয়েছে।

তেল বোঝাই জাহাজটি ঝুঁকিপূর্ণ অবস্থায় থাকায় দ্রুত তেল সরানোর চেষ্টা চলছে বলে জানান ঝালকাঠির জেলা প্রশাসক ফারাহ গুল নিঝুম।

এর আগে ২০২১ সালের ২৪ ডিসেম্বর সুগন্ধা নদীতে যাত্রীবাহী এমভি অভিযান নামে একটি লঞ্চে আগুন লেগে প্রায় অর্ধশত মানুষ অগ্নিদগ্ধ হয়ে মারা গিয়েছিলেন।

Comments

The Daily Star  | English
The Indian media and Bangladesh-India relations

The Indian media and Bangladesh-India relations

The bilateral relationship must be based on a "win-win" policy, rooted in mutual respect, non-hegemony, and the pursuit of shared prosperity and deeper understanding.

15h ago