‘সব পুড়ে যাচ্ছে দেখার চেয়ে মরে যাওয়া ভালো’

সাইফুল ইসলাম তার দোকান থেকে কাপড় বের করতে না পেরে হাউমাউ করে কাঁদছেন। ছবি: সাজ্জাদ হোসেন/স্টার

রাজধানীর নিউ সুপার মার্কেটের ৩টি দোকানের মালিক সাইফুল ইসলাম। আজ শনিবার ভোরে মার্কেটে অগ্নিকাণ্ডের ঘটনায় তিনি তার দোকান থেকে কাপড় উদ্ধারের যথাসাধ্য চেষ্টা করেন।

কিন্তু ব্যর্থ হন।

হতবাক সাইফুল দ্য ডেইলি স্টারকে বলেন, 'আমার কষ্টার্জিত সব পুড়ে যাচ্ছে, এটা দেখার চেয়ে মরে যাওয়া ভালো।'

সাইফুল জানান, নিউ মার্কেটে তার ও তার নিকটাত্মীয়দের মোট ৮টি দোকান রয়েছে। আগুনে সব দোকান পুড়ে গেছে এবং সব মিলিয়ে প্রায় ৮ কোটি টাকার ক্ষয়ক্ষতি হয়েছে।

মিশু ফ্যাশনের মালিক আরিফুজ্জামান আরিফ জানান, তার ৩টি দোকানে ৫০ লাখ টাকার ঈদের পাঞ্জাবি রয়েছে। গতকালই তিনি ৩ লাখ টাকার নতুন মালামাল হাতে পেয়েছেন। 'দোকানের ভেতরেই সব পুড়ে শেষ হয়ে গেছে।'

ঈদ উপলক্ষে মালামাল কিনতে ১০ লাখ টাকা ঋণ করেছিলেন আরিফ। কিন্তু আগুনে সব পুড়ে গেছে। এই ঋণ পরিশোধ নিয়ে দুশ্চিন্তায় পড়েছেন তিনি।

আলামিন গার্মেন্টস নামে ৩টি দোকানের মালিক জাহিদ হোসেন বলেন, 'ঈদের ২ লাখ টাকার কাপড় ছিল, সবকিছু পুড়ে গেছে।'

নিউ মার্কেটে ২টি দোকানের মালিক রাজ বলেন, 'আমার ৬ জনের পরিবারের একমাত্র আয়ের উৎস এই দোকান। পুড়ে গেছে ভাই।'

তিনি বলেন, 'বিক্রি শেষ করে আজ ভোররাত ৩টার দিকে মার্কেট থেকে বের হয়েছি। গত কয়েকদিনের বিক্রির টাকা দোকানেই রাখা ছিল। মালামালের সঙ্গে দোকানে আমার মোট ১২ লাখ টাকা ক্যাশ ছিল। কিছুই অবশিষ্ট নেই।'

অগ্নিকাণ্ডে ব্যাপক ক্ষয়ক্ষতি হওয়া মার্কেটের দ্বিতীয় তলার সুলতান ফ্যাশনের মালিক আমেনা বেগম। চোখ মুছতে মুছতে তিনি বলেন, 'একদিন আগে কালীগঞ্জ ও মিরপুর থেকে ১০ লাখ টাকার মালামাল তোলা হয়েছে দোকানে। কিছুই আর থাকল না। আমার ছেলে কাঁদছে। তাকে সান্ত্বনা দেবো কীভাবে?'

মার্কেটের দ্বিতীয় তলার একটি দোকানের মালিক অমিত জানান, ঈদের জন্য তিনি ৮ লাখ টাকার পণ্য কিনেছেন। 'গতকালের মালামাল বিক্রির টাকাও সব দোকানেই ছিল। আগুনে সব পুড়ে গেছে।'

অগ্নিকাণ্ডে ক্ষতিগ্রস্ত আরও বেশ কয়েকজন ব্যবসায়ীকে দেখা যায় মার্কেটের পাশে দাঁড়িয়ে অসহায়ভাবে কাঁদছেন।

Comments

The Daily Star  | English

Beximco workers' protest turns violent in Gazipur

Demonstrators set fire to Grameen Fabrics factory, vehicles, vandalise property

1h ago