রেলবিভাগ মোদি সরকারের অবহেলার শিকার: মমতা বন্দোপাধ্যায়
দার্জিলিংয়ে কাঞ্চনজঙ্ঘা এক্সপ্রেস ট্রেন দুর্ঘটনায় নয় জন নিহতের ঘটনায় কেন্দ্র সরকারের তীব্র সমালোচনা করেছেন পশ্চিমবঙ্গের মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। তিনি অভিযোগ করেন, কেন্দ্র সরকারের অবহেলার শিকার হচ্ছে রেল বিভাগ।
গতকাল সোমবার এই তথ্য জানিয়েছে ভারতের সংবাদমাধ্যম স্টেটসম্যান।
এই দুর্ঘটনার বিষয়ে সাংবাদিকদের সঙ্গে কথা বলেন মমতা। তিনি জানান, রেলমন্ত্রী থাকাকালীন সময় তিন নিজে অনেক নতুন উদ্যোগ নিয়েছিলেন। কিন্তু বর্তমান সরকার শুধু প্রচারণাই চালাচ্ছে, কাজের কাজ কিছু করছে না।
'আমি অনেক নতুন উদ্যোগ নিয়েছি, কিন্তু তারা শুধু বন্দে ভারত ট্রেনের প্রচারণা চালাচ্ছে। কোথায় গেল দুরন্ত এক্সপ্রেস? রাজধানী এক্সপ্রেসের পর দুরন্তই ছিল দ্রুততম ট্রেন। আজ সমগ্র রেল বিভাগ অবহেলার শিকার হচ্ছে। আমি মনে করি রেল মন্ত্রণালয়ের উপযুক্ত যত্ন নেওয়া উচিৎ', যোগ করেন মমতা।
পশ্চিমবঙ্গের মুখ্যমন্ত্রী জানান, এই দুর্ঘটনার পর রাজ্য সরকার পরিস্থিতি স্বাভাবিক করার জন্য সব ধরনের সহযোগিতা দিয়েছে।
তিনি বলেন, 'পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে রাজ্য সরকার চিকিৎসাকর্মী, দুর্যোগ ব্যবস্থাপনাকর্মী ও অ্যাম্বুলেন্স পাঠানোসহ সাধ্যের মধ্যে সবধরনের ব্যবস্থা নিয়েছে।'
ট্রেন দুর্ঘটনায় নয় জন নিহত ও ৫০ জন আহত হওয়ায় নরেন্দ্র মোদির নেতৃত্বাধীন এনডিএ জোট সরকার সমালোচিত হয়েছে।
সোমবার সকালে একটি মালবাহী ট্রেন পেছন থেকে কাঞ্চনজঙ্ঘা এক্সপ্রেসকে ধাক্কা দেয়। দার্জিলিং জেলার শিলিগুড়ি সাবডিভিশনের রাঙ্গাপানি রেল স্টেশনে এই দুর্ঘটনা ঘটে।
এই দুর্ঘটনায় যাত্রিবাহী ট্রেনের অন্তত তিনটি বগি লাইনচ্যুত হয়।
ভারতের রেলওয়ে বোর্ডের চেয়ারম্যান ও প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা জয়া ভার্মা সিনহা জানান, উদ্ধার কার্যক্রম শেষ হয়েছে।
তিনি আরও জানান, প্রাথমিক তদন্তে দেখা গেছে, পণ্যবাহী ট্রেনের চালকের ভুলের কারণে এই দুর্ঘটনা ঘটেছে। চালক সিগনাল অমান্য করেছিলেন।
জয়া ভার্মা এই ভুলকে 'মানবিক ভুল' বলে অভিহিত করেন।
'গুরুতর আহতদের উত্তরবঙ্গ মেডিকেল কলেজ ও হাসপাতালে উন্নত চিকিৎসার জন্য পাঠানো হয়েছে', যোগ করেন তিনি।
দুর্ঘটনার শিকার কাঞ্চনজঙ্ঘা এক্সপ্রেস ট্রেনটি কলকাতার শিয়ালদহ স্টেশন থেকে ছেড়ে গিয়েছিল। গন্তব্য ছিল ত্রিপুরার আগরতলা। এ সময় পেছন থেকে মালবাহী ট্রেনটি এসে এই ট্রেনকে ধাক্কা দেয়। নিউ জলপাইগুড়ি লাইনের রাঙ্গাপানি স্টেশনের কাছে সকাল পৌনে নয়টার দিকে এই দুর্ঘটনা ঘটে।
ভারতের প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি এই দুর্ঘটনায় শোক প্রকাশ করেছেন। তিনি নিহতদের পরিবার ও নিকটজনদের প্রতি সমবেদনা জানান।
রেলমন্ত্রী অশ্বিনী বৈষ্ণব নিহতদের পরিবারের সদস্যদের জন্য ১০ লাখ ও গুরুতর আহতদের পরিবারের সদস্যদের জন্য আড়াই লাখ রুপি ক্ষতিপূরণের ঘোষণা দিয়েছেন। এ ছাড়া, যারা সামান্য আঘাত পেয়েছেন, তারাও ৫০ হাজার রুপি ক্ষতিপূরণ পাবেন।
Comments