পশ্চিমবঙ্গে কাঞ্চনজঙ্ঘা এক্সপ্রেসে দুর্ঘটনায় নিহতের সংখ্যা বেড়ে ৮
পশ্চিমবঙ্গের দার্জিলিং জেলায় একটি মালবাহী ট্রেন ও যাত্রীবাহী ট্রেনের সংঘর্ষে তিন রেলকর্মীসহ মোট আটজন নিহত ও আরও অন্তত ৫০ জন আহত হয়েছেন।
আজ সোমবার এই তথ্য জানিয়েছে ভারতীয় গণমাধ্যম স্টেটসম্যান ও এনডিটভি।
ভারতের রেলওয়ে বোর্ডের চেয়ারম্যান ও প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা জয়া ভার্মা সিনহা জানান, উদ্ধার কার্যক্রম শেষ হয়েছে।
তিনি আরও জানান, প্রাথমিক তদন্তে দেখা গেছে, পণ্যবাহী ট্রেনের চালকের ভুলের কারণে এই দুর্ঘটনা ঘটেছে। চালক সিগনাল অমান্য করেছিলেন।
জয়া ভার্মা এই ভুলকে 'মানবিক ভুল' বলে অভিহিত করেন।
'গুরুতর আহতদের উত্তরবঙ্গ মেডিকেল কলেজ ও হাসপাতালে উন্নত চিকিৎসার জন্য পাঠানো হয়েছে', যোগ করেন তিনি।
দুর্ঘটনার শিকার কাঞ্চনজঙ্ঘা এক্সপ্রেস ট্রেনটি কলকাতার শিয়ালদহ স্টেশন থেকে ছেড়ে গিয়েছিল। গন্তব্য ছিল ত্রিপুরার আগরতলা। এ সময় পেছন থেকে মালবাহী ট্রেনটি এসে এই ট্রেনকে ধাক্কা দেয়। নিউ জলপাইগুড়ি লাইনের রাঙ্গাপানি স্টেশনের কাছে সকাল পৌনে নয়টার দিকে এই দুর্ঘটনা ঘটে।
সংঘর্ষের ফলে কাঞ্চনজঙ্ঘা এক্সপ্রেসের দুইটি বগি লাইনচ্যুত হয়।
দার্জিলিং জেলার কুরসেওং থানার অতিরিক্ত পুলিশ সুপার অভিষেক রায় শুরুতে জানিয়েছিলেন, 'কাঞ্চনজঙ্ঘা এক্সপ্রেসের চালকসহ পাঁচ ব্যক্তি ঘটনাস্থলেই নিহত হন। আরও অন্তত ২৫ জন আহত হয়েছেন।'
তিনি আরও জানান, পুলিশ আটকে পড়া যাত্রীদের উদ্ধারের চেষ্টা চালাচ্ছে।
পশ্চিমবঙ্গের মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় জানান, ঘটনাস্থলে ডাক্তার ও দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা দলের সদস্যরা ছুটে গেছেন।
তিনি সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম এক্সে বলেন, 'দার্জিলিং জেলার ফাঁসিদেওয়া এলাকায় মর্মান্তিক ট্রেন দুর্ঘটনার বিষয়ে জানতে পেরে আমি মর্মাহত। বিস্তারিত তথ্য না পাওয়া গেলেও এটুকু জানা গেছে যে কাঞ্চনজঙ্ঘা এক্সপ্রেসকে পেছন থেকে একটি মালবাহী ট্রেন আঘাত করেছে।'
পশ্চিমবঙ্গের সঙ্গে শিলচর ও আগরতলার সংযোগ স্থাপন করেছে কাঞ্চনজঙ্ঘা এক্সপ্রেস। এই ট্রেনটি প্রতিদিনই চলে।
শিলিগুড়িতে সকাল থেকেই ভারী বৃষ্টিপাত হচ্ছে, যার ফলে উদ্ধার কার্যক্রম বিঘ্নিত হয়েছে। এই দুর্ঘটনার কারণে কলকাতা-শিলিগুড়ি রুটে দূরপাল্লার রেলযোগাযোগ বন্ধ রয়েছে।
দার্জিলিং যাত্রার জন্য এই ট্রেন পর্যটকদের কাছে এই ট্রেন বেশ জনপ্রিয়। এমন সময় এই দুর্ঘটনা ঘটল যখন কলকাতা ও দক্ষিণের প্রতিবেশী শহরগুলো থেকে মানুষ প্রচণ্ড তাপদাহ থেকে বাঁচার জন্য গণহারে দার্জিলিং যাচ্ছিলেন।
ভারতের প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি এই দুর্ঘটনায় শোক প্রকাশ করেছেন। তিনি নিহতদের পরিবার ও নিকটজনদের প্রতি সমবেদনা জানান।
রেলমন্ত্রী অশ্বিনী বৈষ্ণব নিহতদের পরিবারের সদস্যদের জন্য ১০ লাখ ও গুরুতর আহতদের পরিবারের সদস্যদের জন্য আড়াই লাখ রুপি ক্ষতিপূরণের ঘোষণা দিয়েছেন। এ ছাড়া, যারা সামান্য আঘাত পেয়েছেন, তারাও ৫০ হাজার রুপি ক্ষতিপূরণ পাবেন।
Comments