ভারতের সাধারণ নির্বাচন: ছয় সপ্তাহ ধরে কেন ভোটগ্রহণ

লোকসভা নির্বাচনে পশ্চিমবঙ্গের আলিপুরদুয়ার জেলার একটি ভোটকেন্দ্রে ভোটাররা ভোট দিচ্ছেন। ছবি: রয়টার্স

ভারতের সাধারণ নির্বাচন শুরু হয়েছে আজ শুক্রবার। ভারতের নির্বাচনকে বলা হয় বিশ্বের সবচেয়ে বড় নির্বাচন।

প্রায় ৯৭ কোটি ভোটার ভোট দেওয়ার মাধ্যমে দেশটির পার্লামেন্টের নিম্নকক্ষের ৫৪৩ জন সদস্যকে বেছে নেবেন।

আজ ভোটগ্রহণ শুরু হলেও ভোটগণনা পর্যন্ত সময় লাগবে ছয় সপ্তাহের বেশি।

কেন এত সময় লাগছে, তার ব্যাখ্যা করা হয়েছে রয়টার্সের প্রতিবেদনে।

১৯৪৭ সালে ব্রিটিশ ঔপনিবেশিক শাসকের কাছ থেকে স্বাধীন হওয়ার পর প্রথম নির্বাচন চার মাস ধরে চলেছিল। ১৯৫১ সালের ২৫ অক্টোবর থেকে ১৯৫২ সালের ২১ ফেব্রুয়ারি পর্যন্ত চলেছিল ওই নির্বাচন।

ওই নির্বাচনের পর এবার হতে যাচ্ছে ভারতের দ্বিতীয় দীর্ঘতম নির্বাচন। ২০১৯ সালের নির্বাচনে সময় লেগেছিল ৩৯ দিন।

এবারের নির্বাচনের ভোটগ্রহণ থেকে শুরু করে ফলাফল ঘোষণা পর্যন্ত ৪৪ দিন সময় নিয়েছে ভারতের নির্বাচন কমিশন।

এ বছর ভোটগ্রহণ হবে মোট সাত দিন। শুক্রবার প্রথম ধাপে দেশটির ১০২টি নির্বাচনী এলাকায় ভোটাররা ভোট দেবেন।

১ জুন শেষ ভোটগ্রহণের দিন ৫৭টি নির্বাচনী এলাকায় ভোটাররা ভোট দেবেন। ৪ জুন একসঙ্গে সব ভোট গণনা হবে।

ভারতের লোকসভা নির্বাচনে উত্তরপ্রদেশ রাজ্যের মোজাফফরনগর জেলার কুতবা কুতবি গ্রামের একটি ভোটকেন্দ্রে ভোট দিচ্ছেন ভোটাররা। ছবি: রয়টার্স

ভোটার সংখ্যা

দেশের আয়তন ও ভোটার সংখ্যা অনেক বেশি হওয়ায় নির্বাচনে এত সময় লাগছে বলে রয়টার্সের প্রতিবেদনে উল্লেখ করা হয়েছে।

ভারতের মোট জনসংখ্যা প্রায় ১৪০ কোটি। গত বছর বিশ্বের সবচেয়ে জনবহুল দেশ হিসেবে চীনকে ছাড়িয়ে যায় ভারত।

ভারতের ভোটার সংখ্যা ৯৬ কোটি ৮৬ লাখ, যা ইউরোপীয় ইউনিয়নের মোট জনসংখ্যার দ্বিগুণের বেশি।

২০১৯ সালের নির্বাচনের তুলনায় ভোটার সংখ্যা চার শতাংশ বেড়েছে।

ভারতের ২৮ রাজ্য ও আট ফেডারেল অঞ্চলের মধ্যে শুধু কয়েকটিতে এক ধাপে ভোটগ্রহণ সম্পন্ন করা হবে। তবে বড় রাজ্য ও কিছু নির্বাচনী এলাকায় কয়েক ধাপে ভোটগ্রহণ অনুষ্ঠিত হবে।

যেমন: উত্তরের রাজ্য উত্তর প্রদেশের জনসংখ্যা ২৩ কোটির বেশি এবং পার্লামেন্টে এ রাজ্যের সদস্য সংখ্যা ৮০, যা ভারতের অন্য যেকোনো রাজ্যের চেয়ে বেশি। এই রাজ্যে সাত ধাপে ভোটগ্রহণ হবে।

নির্বাচন কমিশন বিশাল এই নির্বাচন আয়োজন করতে প্রতিটি নির্বাচনী এলাকাকে ছোট ছোট অংশে ভাগ করে ভোটকেন্দ্র বসিয়েছে, প্রতিটি ভোটকেন্দ্রে প্রায় দেড় হাজার ভোটার ভোট দিতে পারবেন।

এভাবে এ বছর প্রায় ১০ লাখের বেশি ভোটকেন্দ্র স্থাপন করতে হবে নির্বাচন কমিশনকে। বিভিন্ন সরকারি ভবন ও স্কুলভবনকে ভোটকেন্দ্র করা হচ্ছে।

উত্তরে হিমালয় থেকে মধ্য ভারতীয় জঙ্গলাকীর্ণ এলাকা, পশ্চিমের রাজস্থানের মরুভূমিতে পর্যন্ত এভাবে ভোটগ্রহণ হবে।

সহিংসতা ও ভোট কারচুপির ঘটনা এড়াতে এবং অবাধ ও সুষ্ঠু নির্বাচন নিশ্চিত করতে দেশব্যাপী তিন লাখের বেশি কেন্দ্রীয় নিরাপত্তাবাহিনীর সদস্য বিভিন্ন রাজ্যের পুলিশকে সহায়তা করবে।

ভোটের এক ধাপ থেকে আরেক ধাপের মধ্যে ট্রেনে করে এই নিরাপত্তা কর্মীরা এক রাজ্য থেকে আরেক রাজ্যে যাবেন।

এই কর্মীরা নির্বাচন কর্মকর্তাদের ভোটকেন্দ্রে ভোটিং মেশিন নিয়ে যাওয়া থেকে শুরু করে গণনার দিন নিরাপত্তা দেবেন।

Comments

The Daily Star  | English
consensus commission bicameral parliament proposal

Consensus commission: Talks stall over women’s seats, upper house

The National Consensus Commission proposed establishing an upper house comprising elected representatives from each district and city corporation, and suggested abolishing the current system of reserved seats for women in parliament.

3h ago