দিল্লি সীমান্তে কড়া নিরাপত্তার মধ্যে নতুন করে শুরু হচ্ছে কৃষকদের লংমার্চ

ভারতে কৃষকদের বিক্ষোভ। ছবি: রয়টার্স (২৩ ফেব্রুয়ারি, ২০২৪)
ভারতে কৃষকদের বিক্ষোভ। ছবি: রয়টার্স (২৩ ফেব্রুয়ারি, ২০২৪)

ভারতের রাজধানী দিল্লি অভিমুখে আবারও হাজারো কৃষক যাত্রা শুরু করতে যাচ্ছে। তবে এবার আর লং মার্চ নয়, বরং গণপরিবহনে করে তারা সেখানে যাবেন।

আজ বুধবার বিবিসি জানিয়েছে, কৃষকরা মূলত তাদের উৎপাদিত শস্যের ন্যুনতম মূল্য নিশ্চিতের দাবিতে এই কর্মসূচি পালন করতে যাচ্ছেন।

এর আগে কৃষকরা তাদের 'দিল্লি চলো' লংমার্চ কর্মসূচি ফেব্রুয়ারির শেষে অনির্দিষ্টকালের জন্য স্থগিত করেছিল। বিক্ষোভ চলাকালীন এক তরুণ কৃষকের মৃত্যুর পর লংমার্চ স্থগিত করা হয়।

এই লংমার্চ ঠেকাতে দিল্লি সীমান্তে বড় আকারে ব্যারিকেড দেওয়া হয়েছে এবং অসংখ্য পুলিশ মোতায়েন করা হয়েছে।

ভারতে জাতীয় নির্বাচন শুরুর কয়েক মাস আগে কৃষকদের এই বিক্ষোভ আবারও নতুন করে চালু হতে যাচ্ছে।

দেশটিতে কৃষকরা গুরুত্বপূর্ণ ভোট ব্যাংক হিসেবে বিবেচিত। বিশ্লেষকদের মতে, প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদির কেন্দ্রীয় সরকার নির্বাচনের এতো অল্প সময় আগে কৃষকদের বিরাগভাজন হতে চায় না।

ফেব্রুয়ারির শুরুতে প্রথম এই বিক্ষোভ শুরু হলে সরকার কৃষক ইউনিয়নের সঙ্গে আলোচনা করে এই লং মার্চ বন্ধের চেষ্টা চালায়। প্রতিবেশী রাজ্য পাঞ্জাব, হরিয়ানা ও উত্তর প্রদেশ থেকে কৃষকরা দিল্লির দিকে রওনা হয়েছিলেন।

স্বেচ্ছাসেবকরা বিক্ষোভরত কৃষকদের বিনামূল্যে খাবার দিচ্ছেন। ছবি: রয়টার্স
স্বেচ্ছাসেবকরা বিক্ষোভরত কৃষকদের বিনামূল্যে খাবার দিচ্ছেন। ছবি: রয়টার্স

তবে দুই পক্ষের মধ্যে তিন দফা আলোচনার পরেও সরকার কৃষকদের সব দাবি মেনে নিতে রাজি হয়নি। যার ফলে আলোচনা ভেস্তে যায়।

ন্যুনতম মূল্য নিশ্চিতের পাশাপাশি কৃষকরা বর্ষীয়ানদের জন্য পেনশনে ও তাদের ঋণ মওকুফেরও আবেদন জানায়।

কৃষকদের অন্যান্য দাবির মধ্যে আছে পল্লী নিয়োগ নিশ্চয়তা স্কিমে কর্মদিবসের সংখ্যা ১০০ থেকে ২০০ দিনে উন্নীত করা, বিশ্ব বাণিজ্য সংস্থা (ডব্লিউটিও) থেকে ভারতের নাম প্রত্যাহার করে নেওয়া ও সব ধরনের মুক্ত বাণিজ্য চুক্তি বাতিল।

কৃষকদের দুই ইউনিয়নের দেওয়া কর্মসূচি অনুযায়ী আজ বুধবার সারা দেশের কৃষকরা মেট্রো ও বাসসহ বিভিন্ন ধরনের গণপরিবহন ব্যবহার করে দিল্লি পৌঁছানোর চেষ্টা করবে।

তাদের অপর কর্মসূচি হল 'রেল রোকো' (রেলযোগাযোগ বন্ধ কর)। এই কর্মসূচির আওতায় আগামী ১০ মার্চ চার ঘণ্টার জন্য কৃষকরা রেল যোগাযোগ বন্ধ রাখার চেষ্টা চালাবে।

কৃষকদের কর্মসূচি শুরুতে শান্তিপূর্ণ থাকলেও ফেব্রুয়ারির শেষ নাগাদ এটি সহিংসতায় রূপ নেয়। পুলিশ বিক্ষোভকারীদের ছত্রভঙ্গ করতে টিয়ার গ্যাস শেল নিক্ষেপ করে। পাঞ্জাব সীমান্তে প্রাণ হারান এক ২২ বছর বয়সী কৃষক। পাঞ্জাব কর্তৃপক্ষ বিবিসিকে জানায়, তরুণ কৃষক মাথায় বুলেটের আঘাতে নিহত হয়েছেন।

নিহত যুবকের পরিবার তার অন্ত্যেষ্টিক্রিয়া সম্পন্ন করতে অস্বীকার জানিয়েছে। যেসব পুলিশ বিক্ষোভকারীদের উদ্দেশ্যে গুলি ছুঁড়েছেন, তাদেরকে বিচারের আওতায় আনার দাবিতে তারা এই উদ্যোগ নিয়েছেন।

নিহত কৃষকের প্রতি সম্মান জানাতে ফেব্রুয়ারির শেষে দুই ইউনিয়ন বিক্ষোভ স্থগিত করে।

রবিবার এক প্রার্থণাসভায় নতুন করে বিক্ষোভ শুরুর সিদ্ধান্ত জানায় কৃষক ইউনিয়ন।

Comments

The Daily Star  | English

Yunus meets Chinese ambassador to review China visit, outline next steps

Both sides expressed a shared commitment to transforming discussions into actionable projects across a range of sectors

7h ago