পররাষ্ট্রমন্ত্রীর পদ থেকে কিন গ্যাংকে অপসারণের পর সব তথ্য মুছে দিলো বেইজিং

চীনের সাবেক ও বর্তমান পররাষ্ট্রমন্ত্রী। ছবি; স্ট্রেইটস টাইমস
চীনের সাবেক ও বর্তমান পররাষ্ট্রমন্ত্রী। ছবি; স্ট্রেইটস টাইমস

হঠাৎ করেই পররাষ্ট্রমন্ত্রী কিন গ্যাংকে সরিয়ে তার পূর্বসূরি ওয়াং ইকে স্থলাভিষিক্ত করেছে চীন। তবে এখানেই থেমে থাকেনি দেশটি, কিন গ্যাংয়ের ৬ মাসের মেয়াদের সকল তথ্য সরকারি নথি থেকে মুছে ফেলার সিদ্ধান্তও নিয়েছে বেইজিং।

আজ বুধবার মার্কিন সংবাদমাধ্যম সিএনএন এ তথ্য জানিয়েছে

৫ সপ্তাহ আগেই কিন গ্যাং যুক্তরাষ্ট্রের পররাষ্ট্রমন্ত্রী অ্যান্টনি ব্লিঙ্কেনের সঙ্গে বেইজিং এ বৈঠক করেন।

তবে চীনের পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের ওয়েবসাইটে এই বৈঠক নিয়ে কিছু খুঁজতে গেলে হতাশ হতে হবে, কারণ এই বৈঠক এবং পররাষ্ট্রমন্ত্রী হিসেবে কিনের সব কার্যক্রমের তথ্য সব নথি থেকে মুছে ফেলা হচ্ছে।

গত ২৫ জুন বেইজিং সফররত কূটনীতিকদের সঙ্গে দেখা করার পর থেকে কিন গ্যাংকে জনসমক্ষে দেখা যায়নি। যার ফলে, পররাষ্ট্রমন্ত্রী হিসেবে তার ভবিষ্যত নিয়ে জল্পনা কল্পনা চলছিল।

মঙ্গলবার হঠাত করেই আসে তাকে স্থলাভিষিক্তের ঘোষণা।

চীন সরকারের সর্বশেষ এই তথ্য মুছে ফেলার উদ্যোগে কিন গ্যাংকে নিয়ে রহস্য আরও ঘণীভূত হয়েছে।

এর আগে প্রায় ১ দশক পররাষ্ট্রমন্ত্রীর দায়িত্ব পালন করে ওয়াং ই।

কিন এখন কোথায় আছেন, তাকে কেন সরানো হয়েছে এবং চীনের কমিউনিস্ট পার্টির সদস্য হিসেবে তার ভবিষ্যত কী—এ পুরো বিষয়টিকে রহস্যময় বলে অভিহিত করেছেন বিশ্লেষকরা।

সিএনএন জানিয়েছে, এর আগেও চীনের শীর্ষ কর্মকর্তারা উধাও হয়েছেন। কয়েক মাস পর আবারও জনসম্মুখে ফিরে তারা জানান, তাদের বিরুদ্ধে গোপন তদন্ত চলছিল।

তবে চীনের নেতা শি জিন পিংয়ের বিশ্বস্ত সহযোগী হিসেবে পরিচিত মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রে চীনের সাবেক রাষ্ট্রদূত কিন গ্যাং এর এ ধরনের পরিণতি বিশ্লেষকদের বিস্মিত করেছে এবং চীনের রাজনৈতিক ব্যবস্থা নিয়ে নতুন করে অনেক প্রশ্ন তুলেছেন তারা।

ওয়াশিংটন ভিত্তিক গবেষণা সংস্থা স্টিমসন সেন্টারের চীন প্রকল্পের পরিচালক ইউন সান বলেন, 'চীনের আমলাতন্ত্রে স্বচ্ছতার অভাব নতুন কিছু নয়।'

'এরকম দ্রুত গতিতে পররাষ্ট্রমন্ত্রী বদলের বিষয়টি শি'র জন্য ভালো কোনো লক্ষণ নয়। আর কিছু না হলেও মানুষ জানতে চাইবে, (কিন গ্যাংয়ের) ভুল কী ছিল এবং কেন তাকে বদলানো অত্যাবশ্যক হয়ে পড়লো। কিন্তু একইসঙ্গে এটাও জানা গেলো, (কিন) গুরুতর কিছু না করে থাকলে এরকম হতো না', যোগ করেন ইউন।

কিনকে পররাষ্ট্রমন্ত্রীর পদ থেকে সরিয়ে দেওয়া নিয়ে তৈরি করা হ্যাশট্যাগগুলো চীনের সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম ওয়েবো থেকে মুছে দেওয়া হয়েছে। এমন কী, চীনের প্রাচীন কিন রাজবংশ নিয়ে নির্মিত এক টেলিভিশন অনুষ্ঠানের নামে দেওয়া হ্যাশট্যাগ ব্যবহার করে মানুষ এ বিষয়টি নিয়ে আলোচনা শুরু করলে সেটিও মুছে দেওয়া হয়।

তবে ওয়াং ই'র নিয়োগ নিয়ে হ্যাশট্যাগগুলো চালু ছিল। তবে এক্ষেত্রে সাধারণ ব্যবহারকারীদের মন্তব্য দৃশ্যমান ছিল না, শুধু ভেরিফায়েড অ্যাকাউন্টের পোস্ট ও কমেন্ট দেখা যায় ওয়েবোতে।

কিনকে সরিয়ে ওয়াংকে নিয়োগ দেওয়ার বিষয়ে আদৌ আর কোন তথ্য জানানো হবে কি না, বা হলেও কবে, এ বিষ্যগুলো নিয়ে এখনো কিছু জানা যায়নি। যার ফলে বিভিন্ন গুজব ছড়িয়ে পড়ছে চীনে।

বুধবার মন্ত্রণালয়ের নিয়মিত ব্রিফিং এর সময় এক মুখপাত্রকে কিনকে সরিয়ে দেওয়ার কারণ জানাতে অস্বীকার করেন। কিন সংক্রান্ত তথ্য মুছে ফেলার বিষয়ে প্রশ্ন করা হলে তিনি বলেন, 'প্রাসঙ্গিক নীতিমালা অনুযায়ী ওয়েবসাইট আপডেট করা হয়েছে।"

ইন্দোনেশিয়ায় একটি আন্তর্জাতিক কূটনৈতিক শীর্ষ সম্মেলনে যোগ দিতে না পারায়, পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয় থেকে পরে জানানো হয় যে, স্বাস্থ্যগত কারণে কাজ থেকে বিরত আছেন কিন। এরপর থেকেই তাকে নিয়ে জল্পনা-কল্পনা শুরু হয়। 

Comments

The Daily Star  | English

BNP struggles to rein in the rogues

Over the past 11 months, 349 incidents of political violence took place across the country, BNP and its affiliated organisations were linked to 323 of these

9h ago