জন্মদিন

দেশের উন্নতির সঙ্গে সংস্কৃতির অবনতি ঘটেছে : ড. অনুপম সেন

জন্মদিনের আনন্দ প্রকাশ করার মতো না। এটা অনুভূতির বিষয়। দীর্ঘ জীবনে অনেক কিছু দেখেছি, অনেক বিষয়ে জেনেছি। দেখার ও জানার দুনিয়া অন্যরকম।
ছবি: সংগৃহীত

খ্যাতিমান সমাজবিজ্ঞানী, একুশে পদকপ্রাপ্ত শিক্ষাবিদ অধ্যাপক ড. অনুপম সেন। আজ তার ৮৪ তম জন্মদিন। 

দীর্ঘ জীবনে সমাজ দেখার অভিজ্ঞতা সম্পর্কে জানতে চাইলে দ্য ডেইলি স্টারকে একুশে পদকপ্রাপ্ত এই শিক্ষাবিদ বলেন, 'আমি জন্মেছি এক শতাব্দীতে, আছি এক শতাব্দীতে। এই সময়ে অনেক দেশ অনেক মানুষের সঙ্গ পেয়েছি। দায়িত্ব পালন করেছি দেশের নানান প্রতিষ্ঠানে। অভিজ্ঞতায় বলা যায়, পরাধীন দেশ থেকে স্বাধীন দেশের অনেক বাঁক পরিবর্তন কাছ থেকে দেখেছি।'
 
'আজকে দেশের অনেক উন্নতি হয়েছে, একই সঙ্গে সংস্কৃতির অবনতি ঘটেছে। সাহিত্য সংস্কৃতির এতো অবনতি হবে আশা করিনি,' বলেন তিনি।

জন্মদিনের অনুভূতি প্রসঙ্গে বলেন, 'জন্মদিনের আনন্দ প্রকাশ করার মতো না। এটা অনুভূতির বিষয়। দীর্ঘ জীবনে অনেক কিছু দেখেছি, অনেক বিষয়ে জেনেছি। দেখার ও জানার দুনিয়া অন্যরকম। এই দুনিয়ায় খারাপ আছি বলা যায় না।'

দেশের শিক্ষাব্যবস্থার বিষয়ে জানতে চাইলে তিনি বলেন, 'দেশে এখন অনেক মানুষ, অনেক শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান। এত মানুষের জন্য যথাযথ শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান যেমন নেই, তেমনি নেই উপযুক্ত প্রতিষ্ঠান প্রধান বা দায়িত্বশীল উপাচার্য। তবে আমি আশাবাদী ধীরে ধীরে একদিন সংকট কেটে যাবে।'

১৯৪০ সালের ৫ আগস্ট চট্টগ্রাম মহানগরীতে জন্মগ্রহণ করেন ড. অনুপম সেন। তার বাবা বিরেন্দ্রলাল সেন ও মা স্নেহলতা সেন। বিরেন্দ্রলাল সেন চট্টগ্রাম কোর্টে ওকালতি পেশায় নিযুক্ত ছিলেন।

অনুপম সেন ১৯৬২ সালে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় থেকে সমাজবিজ্ঞানে স্নাতক ও ১৯৬৩ সালে স্নাতকোত্তর করেন। কানাডার ম্যাকমাস্টার বিশ্ববিদ্যালয় থেকে তিনি ১৯৭৪ সালে সমাজবিজ্ঞান এমএ ডিগ্রি এবং ১৯৭৯ সালে এই বিশ্ববিদ্যালয় থেকে পিএইচডি ডিগ্রি লাভ করেন। বিশ্বের অন্যতম শ্রেষ্ঠ প্রকাশনা প্রতিষ্ঠান রাউটলেজ অ্যান্ড কেগানপল থেকে তাঁর 'দ্য স্টেট, ইন্ডাস্ট্রিয়ালাইজেশন অ্যান্ড ক্লাশ ফরমেশন ইন ইন্ডিয়া' বইটি ১৯৮২ সালে প্রকাশিত হওয়ার পর উত্তর আমেরিকার বহু বিশ্ববিদ্যালয় যেমন, কানাডার টরেন্টো বিশ্ববিদ্যালয়, আমেরিকার ফ্লোরিডা বিশ্ববিদ্যালয় ও নিউইয়র্ক বিশ্ববিদ্যালয়; সুইডেনের টিনবারজেন বিশ্ববিদ্যালয় রাষ্ট্র্রবিজ্ঞানের পাঠ্যতালিকায় অন্তর্ভুক্ত হয়।

শিক্ষকতা করেছেন পাকিস্তান প্রকৌশল ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ে (বর্তমান বুয়েট), ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে, চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ে। ১৯৭৩ সালের সেপ্টেম্বর থেকে ১৯৭৯ সালের এপ্রিল পর্যন্ত তিনি কানাডার ম্যাকমাস্টার বিশ্ববিদ্যালয়ে শিক্ষা সহায়ক ও টিউটর হিসেবে দায়িত্ব পালন করেন। ১৯৭৯ সালে দেশে ফিরে চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ের সমাজতত্ত্ব বিভাগে পুনরায় যোগদান করেন। বর্তমানে তিনি প্রিমিয়ার ইউনিভার্সিটির উপাচার্য হিসেবে দায়িত্ব পালন করছেন।

তার রচিত বইয়ের মধ্যে রয়েছে 'দ্য পলিটিক্যাল এলিটস অব পাকিস্তান অ্যান্ড আদার সোশিওলজিক্যাল এসেস, বাংলাদেশ: রাষ্ট্র ও সমাজ, সামাজিক অর্থনীতির স্বরূপ, বাংলাদেশ ও বাঙালি রেনেসাঁস: স্বাধীনতা চিন্তা ও আত্মানুসন্ধান, ব্যক্তি ও রাষ্ট্র: সমাজ-বিন্যাস ও সমাজ-দর্শনের আলোকে, কবি শশাঙ্কমোহন সেন, সমাজ, সংস্কৃতি, সাহিত্য: নানা কথা, আদি-অন্ত বাঙালি, বাঙালি সত্তার ভূত-ভবিষ্যৎ, বাংলাদেশ: ভাবাদর্শগত ভিত্তি ও মুক্তির স্বপ্ন, বাঙালি-মনন প্রভৃতি।

Comments

The Daily Star  | English
Impact of esports on Bangladeshi society

From fringe hobby to national pride

For years, gaming in Bangladesh was seen as a waste of time -- often dismissed as a frivolous activity or a distraction from more “serious” pursuits. Traditional societal norms placed little value on gaming, perceiving it as an endeavour devoid of any real-world benefits.

16h ago