‘জুলাই গণঅভ্যুত্থানে ছড়াসাহিত্যের ভূমিকা’ শীর্ষক আলোচনা অনুষ্ঠিত

ছবি: সংগৃহীত

'জুলাই গণঅভ্যুত্থানে ছড়াসাহিত্যের ভূমিকা' শীর্ষক আলোচনা ও ছোটদের সময় জুলাই-বিপ্লব সংকলন' প্রকাশ করেছে শিশু কিশোর বিষয়ক পত্রিকা 'ছোটদের সময়'। গতকাল বৃহস্পতিবার বিকেলে আন্তর্জাতিক মাতৃভাষা ইনস্টিটিউটের (আমাই) হল রুমে এক জমজমাট অনুষ্ঠানের মাধ্যমে সংখ্যাটির মোড়ক ও  আলোচনা অনুষ্ঠিত হয়েছে।

শিশুসাহিত্যিক ও ছড়াকার ফারুক হোসেন সভাপতিত্বে অনুষ্ঠানে অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন আমাই মহাপরিচালক অধ্যাপক ও লেখক মুহাম্মদ আসাদুজ্জামান, কবি ও শিশুসাহিত্যিক মনসুর আজিজ, সাংবাদিক ও গবেষক ড. কাজল রশীদ শাহীন, আবিদ আজম, ইমরান মাহফুজ, আশিক মুস্তাফা ও  শামস আরেফিন। স্বাগত ভাষণ দেন ম্যাগাজিনটির সম্পাদক মামুন সারওয়ার। 

অনুষ্ঠানে 'জুলাই গণঅভ্যুত্থানে ছড়া সাহিত্যের ভূমিকা' শীর্ষক প্রবন্ধ পাঠ করেন মনসুর আজিজ। প্রবন্ধ পাঠে তিনি বলেন, যুগে যুগে সমাজের নানা অসঙ্গতি ত্রুটি বিচ্যুতি ছড়ার মাধ্যেমে তুলে ধরেছেন ছড়াশিল্পীগণ। সমাজ, রাজনৈতিক অধিকার ও ভূমিকা পালন করেছে ছড়া। শাসকের রোষাণল থেকে বাঁচতে প্রথম দিকের রাজনৈতিক ছড়ায় কিছুটা আড়াল ছিলো। যেমন- 'খোকা ঘুমালো, পাড়া জুড়ালো, বর্গী এল দেশে' নবাব আলীবর্দী খাঁর শাসনামলে বর্গীদের হামলা ও লুটতরাজের কথা প্রকাশিত হয়েছে উল্লেখ্য ছড়াটিতে। 

স্বাধীনতা উত্তর বাংলা ছড়াসাহিত্যে রাজনৈতিক নীতি ও দর্শন, আবেগ ও অধিকার, জুলুম ও স্বাধীকার প্রশ্নে ছড়াশিল্পীগণ কোনোরকম রাখঢাক ছাড়াই লিখেছেন সমাজ বদলের ছড়া। এমনিভাবে জুলাই গণঅভ্যুত্থানেও স্বৈরাচারের বিরুদ্ধে ছাত্ররা ছড়ায় ছন্দে ক্ষুব্ধ স্লোগান তোলেন, "তুমি কে? আমি কে? রাজাকার, রাজাকার!/ কে বলেছে, কে বলেছে/ স্বৈরাচার, স্বৈরাচার।" এবং "চাইতে গেলাম অধিকার/ হয়ে গেলাম রাজাকার।" এরপরই ছাত্রদের উপর হাসিনার নির্বিচারে গুলি শুরু হলে আমাদের ছড়াকাররাও কলম ধরেন স্বৈরাচের বিরুদ্ধে। সেই দুঃশাসনে চিত্র আমরা দেখতে পাই কবিতা, ছড়া ও কালজয়ী গানে।

ফারুক হোসেন বলেন, আমার কর্মজীবনে ১৬ বছর ফ্যাসিবাদ সরকারকে পেয়েছি। এই সময়ে আমি সরকারের অন্যায়ের কথা অনিয়মের কথা লিখেছি। আজকে আমরা এই অভ্যুত্থানের মধ্য দিয়ে যদি সঠিক জায়গায় পৌঁছাতে না পারি তাহলে কিন্তু খুবই দুর্দশাগ্রস্ত অবস্থায় পড়ে যাবো। যত কষ্ট করে ফ্যাসিবাদকে তাড়িয়েছি তার চেয়েও অনেক কষ্ট করে দেশকে গড়ে তুলতে হবে।

মুহাম্মদ আসাদুজ্জামান বলেন, বৈষম্যবিরোধীদের যদি আমরা সত্যিকার অর্থে ভালোবাসি তাহলে দুটো কথা থাকে, প্রথমতঃ যারা শরীরে বিভিন্ন অঙ্গ হারিয়ে পঙ্গুত্ব বরণ করেছে অন্তবর্তী সরকারের পক্ষ থেকে তাদের সঠিক হিসাব করে মুক্তিযোদ্ধ হিসেবে কেন আর্থিক প্রণোদনা দেয়া হচ্ছে না, যারা হাসপাতালে আছে তাদের সঠিক চিকিৎসা কেন হচ্ছে না। 

কাজল রশীদ শাহীন বলেন, গণঅভূত্থানের পর আমরা যে বাংলাদেশ চেয়েছিলাম সে বাংলাদেশের পথে আমরা কিন্তু হাঁটছি না। এ দায় হলো লেখক-কবি সমাজের। ছড়া শুধু শব্দ বা ছন্দ মেলানো না। আদিকাল থেকে যে ছড়াশক্তি দেখেছি সেটি অভূত্থানে আমরা পাইনি। আমাদের ছড়ার ভেতরে ইতিহাস-ঐতিহ্য, সমাজ-সংস্কৃতিসহ দেশ নির্মাণের প্রেরণা পেতে হবে। কিন্তু এই জায়গা আমরা নেই। 

Comments

The Daily Star  | English

57pc graduates struggle to get jobs: study

Around 57 percent graduates in Public Health discipline face significant challenges in finding jobs in relevant fields, according to a new study by Bangladesh Health Watch (BHW)

3h ago