শিক্ষক নিয়োগে দুর্নীতির কারণে শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানগুলো পঙ্গু হওয়ার পথে: শিক্ষা উপদেষ্টা

ওয়াহিদউদ্দিন মাহমুদ। স্টার ফাইল ছবি

শিক্ষা উপদেষ্টা ড. ওয়াহিদউদ্দিন মাহমুদ বলেছেন, শিক্ষক নিয়োগের ক্ষেত্রে অনেক দুর্নীতি হয়েছে যার কারণে শিক্ষা-প্রতিষ্ঠানগুলো পঙ্গু হওয়ার পথে।

আজ সোমবার প্রথম বাংলাদেশ উচ্চশিক্ষা সম্মেলনে প্রধান অতিথির বক্তব্যে এ কথা বলেন তিনি।

শিক্ষা উপদেষ্টা বলেন, 'আমাদের বিশ্ববিদ্যালয়গুলোতে অনেক আন্তর্জাতিক মানের গবেষকরা শিক্ষকতা করছেন। আন্তর্জাতিক ওয়েবসাইটগুলোয় সেসব গবেষণাকর্ম এবং সেগুলোর সংখ্যা রয়েছে। উচ্চশিক্ষা সংক্রান্ত আলোচনায় আমাদের গবেষকদের সাইটেশন নিয়েও আলোচনা হতে দেখা যায় না। আমাদের বিশ্ববিদ্যালয়ের অভ্যন্তরে শুধু রাজনৈতিক আলাপ হয়। ফলে মেধাবী শিক্ষকরা আড়ালে পড়ে থাকেন। তাই সেসব শিক্ষকদের আড়ালে থাকা বা কোনঠাসা হওয়ার সঠিক কারণ অনুসন্ধান করতে হবে।'

তিনি বলেন, 'বাংলাদেশের উচ্চশিক্ষা নিয়ে ঢালাওভাবে কিছু বলা মুশকিল। দেশে সরকারি-বেসরকারি বিভিন্ন মানের বিশ্ববিদ্যালয় আছে। এছাড়া জাতীয় বিশ্ববিদ্যালয়ের অধীনে থাকা কলেজগুলোতেও উচ্চশিক্ষা দেয়া হয়। সব মিলিয়েই একটা বড় সমস্যা হলো, এইচএসসি পাস করার পর বেশিরভাগ মেধাবী ও সামর্থ্যবান পরিবারের ছাত্ররা বিদেশ চলে যেতে চায়, যা আগে দেখা যেত না। র‍্যাংকিং নিয়ে বারবার কথা হচ্ছে। কিছু সরকারি বিশ্ববিদ্যালয়ের র‍্যাংকিংয়ে স্থান পাওয়ার ক্ষেত্রে প্রতিবন্ধকতা রয়েছে।' 

ড. ওয়াহিদউদ্দিন মাহমুদ বলেন, 'বিশ্ববিদ্যালয়গুলোতে শিক্ষকদের লেজুড়বৃত্তিক দলীয় রাজনীতি, ছাত্ররাজনীতির নামে ক্ষমতার প্রদর্শন ইত্যাদি চলে। শিক্ষক নিয়োগেও রয়েছে অনিয়ম যা আমি ছাত্রাবস্থায় থাকার সময় ছিল না। এই অনিয়মগুলো নিয়ে কথা বলার মাঝে আমি একটা বিষয়ে দৃষ্টি আকর্ষণ করতে চাই। শিক্ষক নিয়োগের ক্ষেত্রে অনেক দুর্নীতি হয়েছে যার কারণে শিক্ষা প্রতিষ্ঠানগুলো পঙ্গু হওয়ার পথে। এত অসুবিধা ও সমস্যার মাঝেও আমাদের বিশ্ববিদ্যালয়গুলোতে এখনও অনেক শিক্ষক আছেন যারা আন্তর্জাতিক মানের উচ্চ পর্যায়ের গবেষক।'

তিনি আরও বলেন, 'সম্প্রতি আন্দোলনের পর প্রায় সব সরকারি বিশ্ববিদ্যালয়ই অভিভাবকহীন হয়ে গিয়েছিল। উপাচার্য, কোষাধ্যক্ষ—কাউকেই পাওয়া যাচ্ছিল না। এ থেকেই বোঝা যায়, নিয়োগের ক্ষেত্রে কেমন রাজনৈতিক দলীয়করণ হয়েছে যে সরকার পরিবর্তনের ফলে সবাইকে চলে যেতে হয়েছে। এমনকি অনেক প্রতিবেদক পত্রিকা ও মিডিয়ায় রিপোর্টও করেছে নিয়োগের অনিয়ম নিয়ে। তবে কেউই লক্ষ্য করেনি। যারা এসব উচ্চপদে যান তাদের গবেষণায় যদি পাঁচ থেকে দশ হাজার সাইটেশন থাকে সেক্ষেত্রে এই মানুষগুলো রাজনীতি করার আদৌ সময় পেতেন না। শিক্ষকদের দলীয় রাজনীতি মুদ্রার এক পিঠ। মেধার অবমূল্যায়ন মুদ্রার অন্য পিঠ। শিক্ষকদের প্রশাসনিক দক্ষতারও প্রয়োজন আছে। কারণ বিশ্ববিদ্যালয়ের ভিসিরা একাডেমিক নেতৃত্বের পাশাপাশি প্রশাসনিক নেতৃত্বও দেন।'

বণিক বার্তা আয়োজিত প্রথম বাংলাদেশ উচ্চশিক্ষা সম্মেলনের বিষয় '‌উচ্চশিক্ষায় বৈশ্বিক মান: বাংলাদেশের করণীয়'। 

Comments

The Daily Star  | English

Drone crash triggers commotion on Ijtema ground, 40 injured

It was not immediately known how the drone fell or who it belonged to

28m ago