ব্রণ হলে যা করবেন, যা করবেন না

ব্রণ
ছবি: সংগৃহীত

ব্রণ মুখের স্বাভাবিক সৌন্দর্য অনেকখানি কমিয়ে দেয়। ব্রণের কারণে হতাশায় ভোগেন অনেকে। ব্রণ কেন হয় এবং ব্রণ হলে কী করবেন আর কী করবেন না সেই সম্পর্কে জেনে নিন নর্দান ইন্টারন্যাশনাল মেডিকেল কলেজ অ্যান্ড হসপিটালের চর্ম ও যৌন রোগ বিভাগের সহযোগী অধ্যাপক ও বিভাগীয় প্রধান ডা. আসমা তাসনীম খানের কাছ থেকে।

ব্রণ কী ও কেন হয়

ডা. আসমা তাসনীম বলেন, ব্রণ হচ্ছে মাল্টিফ্যাক্টোরিয়াল ডিজিজ। অর্থাৎ এটি একক কোনো কারণের জন্য নয় বরং জিনগত, হরমোন, পরিবেশ ও জীবনযাপনের ধরন- বিভিন্ন কারণে হয়।

ত্বকের মধ্যে তেল উৎপাদনের জন্য যে সেবাসিয়াস গ্রন্থি আছে ব্রণ ওই গ্রন্থির একটি রোগ। ত্বককে আর্দ্র রাখতে সেবাসিয়াস গ্রন্থি থেকে তেল নিঃসৃত হয় যেটাকে সেবাম বলা হয়। কোনো কারণে যদি সেবাসিয়াস গ্রন্থির নালি বন্ধ হয়ে যায় তাহলে সেবাম নিঃসৃত হয়ে ভেতরে জমা হয়ে ব্যাকটেরিয়া সৃষ্টি করে এবং ত্বকে প্রদাহ তৈরি করে। যার কারণে ব্রণ হয়।

ইস্ট্রোজেন, প্রজেস্টেরন বা টেস্টোস্টেরন হরমোনের তারতম্য হওয়ার কারণে ব্রণ হয়। পলিসিস্টিক ওভারি সিনড্রোম থাকলে এবং বয়ঃসন্ধিকালে হরমোনের প্রভাবে ব্রণ হয়। জেনেটিক বা বংশগত কারণেও ব্রণ হতে পারে।

মেয়াদ উর্ত্তীণ ও নিম্নমানের বিভিন্ন মেকআপ, প্রসাধনীর ব্যবহার এবং ধুলাবালি, ত্বকের মৃত কোষ জমে ত্বকের ছিদ্র বন্ধ হয়ে যাওয়ার কারণে ব্রণ হতে পারে। স্টেরয়েডাল ক্রিম বা রং ফর্সাকারী ক্রিম ব্যবহার করলে স্টেরয়েডের সংক্রমণ থেকে ব্রণ হতে পারে। এছাড়া স্ক্যাল্প বা মাথার ত্বকে তেল বেশি থাকলে তা মুখে চলে আসার কারণে অনেক সময় ব্রণ হতে পারে। ব্যাকটেরিয়া ও ফাঙ্গাল সংক্রমণ থেকেও ব্রণ হয়।

ধরন

ব্রণ বিভিন্ন ধরনের হয়ে থাকে। যেমন- অ-প্রদাহজনিত ব্রণ হোয়াইটহেডস ছোট ছোট দানার মত হয়, ব্ল্যাকহেডস সেবাম, মৃত কোষ ও ময়লা জমে কালো দেখায়। প্রদাহজনিত ব্রণ পুঁজের মত হয়, লালচে এবং ব্যথাযুক্ত। কিছু আছে সিভিয়ার, বড় বড় ব্যথাযুক্ত শক্ত ব্রণ যেগুলো দীর্ঘদিন সময় লাগে ভালো হতে এবং ত্বকে গর্ত হয়ে যায়, দাগ সৃষ্টি করে। একেক ধরনের ব্রণের প্যাটার্নও ভিন্ন।

ব্রণ হলে কী করবেন

১. মুখ পরিষ্কার-পরিচ্ছন্ন রাখতে হবে, বাইরে থেকে এসে ভালোভাবে মুখ ধুতে হবে। মেকআপ ব্যবহার করলে সঠিক উপায়ে মুখ পরিষ্কার করে ধুয়ে নিতে হবে।

২.মুখ পরিষ্কার করার পর ত্বকের ধরন অনুযায়ী ময়েশ্চারাইজার ব্যবহার করতে হবে।

৩. মাথার ত্বকে অতিরিক্ত তেল বা খুশকি থাকলে ব্রণ হওয়ার প্রবণতা বেশি দেখা যায়, তাই নিয়মিত শ্যাম্পু করতে হবে।

৪. পর্যাপ্ত পরিমাণে পানি পান করতে হবে, ভিটামিন সমৃদ্ধ ও আঁশযুক্ত খাবার খেতে হবে।

৫. যাদের ব্রণের সমস্যা আছে তাদের চিনি, দুধ ও দুগ্ধজাত খাবার কম পরিমাণে খেতে হবে।

৬.  কোষ্ঠকাঠিন্য থাকলে ব্রণ হওয়ার প্রবণতা দেখা যায়। তাই কোষ্ঠকাঠিন্য দূর করতে হবে। সেক্ষেত্রে চিকিৎসকের পরামর্শে প্রোবায়োটিক ওষুধ খাওয়া যেতে পারে।

৭. অতি মাত্রায় ব্রণ হলে, ব্রণ থেকে ত্বকে গর্ত বা দাগ হলে চিকিৎসকের পরামর্শ নেওয়া উচিত। চিকিৎসক ব্রণের ধরন অনুযায়ী চিকিৎসা নির্ধারণ করবেন।

ব্রণ হলে কী করবেন না

১. ব্রণ হলে সেখানে হাত দেওয়া যাবে না, ব্রণ খোঁটাখুঁটি করা যাবে না।

২. ব্রণের ভেতরে থাকা পুঁজ বের করা যাবে না, পুঁজ বের করলেই দাগ বেশি হয়, গর্ত হয়, বিভিন্ন সমস্যা হতে পারে ত্বকে।

৩. আয়নায় বার বার মুখ দেখা যাবে না। এতে হতাশা তৈরি হয়।

 

Comments

The Daily Star  | English

Bangladesh continues to perform poorly in budget transparency

Bangladesh has continued to showcase a weak performance in the open budget rankings among its South Asian peers, reflecting a lack of transparency and accountability in the formulation and implementation of fiscal measures.

15h ago