ফিস্টুলা কেন হয়, চিকিৎসা কী
ফিস্টুলা মলদ্বারের আশেপাশের একটি সংক্রমণ। ফিস্টুলা সম্পর্কে বিস্তারিত জানিয়েছেন কলোরেকটাল সার্জন ও বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব মেডিক্যাল বিশ্ববিদ্যালয়ের কলোরেকটাল সার্জারি বিভাগের প্রতিষ্ঠাতা চেয়ারম্যান অধ্যাপক ডা. একেএম ফজলুল হক।
ফিস্টুলা কী ও কেন হয়
অধ্যাপক একেএম ফজলুল হক বলেন, ফিস্টুলা মলদ্বারের আশেপাশের একটি সংক্রমণ। মলদ্বারের ভেতর থেকে সংক্রমণ শুরু হয়ে একটি নালীর মাধ্যমে মলদ্বারের বাইরে গিয়ে এটার ডিসচার্য বা নিঃসরণ হয়। এটি সাধারণত পুঁজ, রক্ত বা অন্যান্য তরল পদার্থ আকারে দেখা যায়, যা ফিস্টুলার এক্সটারনাল ওপেনিং দিয়ে বাইরে আসে।
ফিস্টুলার ইন্টারনাল ওপেনিং শুরু হয় মলদ্বারের ভেতরের দিকে এবং এক্সটারনাল ওপেনিং হয় মলদ্বার থেকে ১ কিংবা ৩ ইঞ্চি দূরে। বাইরের এবং ভেতরের যে দুটি মুখ থাকে এর সাথে একটি ট্র্যাক্ট বা নালী হয়, ফিস্টুলাকে বাংলায় নালী বলে। সংক্রমণের কারণে এই নালী তৈরি হয়। মানুষের মলের ভেতর অসংখ্য জীবাণু থাকে, সেইসব জীবাণু কারো কারো ক্ষেত্রে মলদ্বারের ভেতরে সংক্রমণ তৈরি করে। এই নালীর মাধ্যমে সংক্রমণ বা পুঁজ মলদ্বারের ভেতর থেকে বাইরে বের হয়।
ফিস্টুলা হওয়ার মূল কারণ অজানা। তবে ডায়রিয়ার কারণে সংক্রমণ হতে পারে, কোষ্ঠকাঠিন্য বেশি হলে, ডায়াবেটিস বেশি থাকলে সংক্রমণের ঝুঁকি বেশি থাকে বা যক্ষ্মাসহ বিভিন্ন সংক্রমণের কারণে হতে পারে।
যেকোনো বয়সেই ফিস্টুলা হতে পারে। সাধারণত ২০ থেকে ৫০ বছর বয়সের মধ্যে বেশি হয়।
লক্ষণ
ফিস্টুলার লক্ষণ ৩টি-
১. মলদ্বারের ভেতরে বা মলদ্বারের আশপাশে ব্যথা হবে
২. মলদ্বারের পাশে ফুলে যাবে
৩. পুঁজ বা রক্ত বের হবে
চিকিৎসা
অধ্যাপক একেএম ফজলুল হক বলেন, ফিস্টুলাকে ২ ভাগে ভাগ করা হয়। যেমন- সাধারণ ফিস্টুলা ও জটিল ফিস্টুলা। এই ২ ধরনেই ফিস্টুলার একমাত্র চিকিৎসা হচ্ছে অস্ত্রোপচার। রোগীকে অ্যান্টিবায়োটিক ওষুধ দেওয়া যেতে পারে, সেক্ষেত্রে একটা নির্দিষ্ট সময় পর আবার সংক্রমণ দেখা দেবে। ফিস্টুলার জন্য কোনো অ্যান্টিবায়োটিক কার্যকর নয়। কোনো কারণে রোগীর যদি অস্ত্রোপচার করতে দেরি হয় কিংবা সাময়িক উপশমের জন্য অ্যান্টিবায়োটিক দেওয়া যেতে পারে। সাধারণ ও জটিল ফিস্টুলা অস্ত্রোপচার করার পরেও কারো কারো ক্ষেত্রে পুনরায় ফিস্টুলা হতে পারে।
পুঁজ বের হয়ে যাওয়ার পর রোগী ২ থেকে ৩ মাস ভালো থাকে। পরে আবার মলদ্বারে ব্যথা, ফুলে যাওয়া এবং রক্ত বা পুঁজ পড়ার উপসর্গ দেখা দিবে। অস্ত্রোপচার না করলে এভাবে চলতেই থাকবে এবং ধীরে ধীরে রোগের তীব্রতাও বাড়তে থাকবে।
Comments