জীবন থেকে ঈর্ষা বাদ দেবেন যেভাবে

ঈর্ষা
ছবি: সংগৃহীত

'ঈর্ষা' শব্দটির সঙ্গে আমরা সবাই পরিচিত। ধরুন এক বিকেলে আপনি জানালার ধারে বসে আছেন। বাইরে ঝুম বৃষ্টি। খুব সুন্দর আবহাওয়া। আপনার জীবনে সবই ঠিকঠাক। কিন্তু আপনার মনটা ভারী।

কারণটা জানেন না, আবার হয়তো জানেন- আপনার খুব কাছের এক বন্ধু চাকরিতে প্রমোশন পেয়েছেন। সোশ্যাল মিডিয়ায় তার হাস্যোজ্জ্বল ছবি দেখে যেন আপনার দিনটিই নষ্ট হয়ে গেছে। এরকম অভিজ্ঞতা অনেকের জীবনেই আছে। এর নামই 'হিংসা'।

হিংসা অনেক সময় মানুষের জীবনে ভয়ানক প্রভাব ফেলে। অনেক ক্ষেত্রে এই ঈর্ষা মানুষকে অনেক পিছিয়ে দেয়। সবাই বোঝে এটি ঠিক নয়, তবে এটি অনেক সময় নিজে থেকেই মনের মধ্যে বাসা বানায়। এটি আপনার আত্মবিশ্বাসে প্রভাব ফেলবে, সম্পর্ক নষ্ট করবে, মানসিক স্বাস্থ্যে ক্ষতিকর প্রভাব ফেলবে। এই ঈর্ষা থেকে কীভাবে বেরিয়ে আসা যায় তাই জানব আজ।

নিজের কাছে স্বীকার করা

অনেক ক্ষেত্রে নিজের বৈশিষ্ট্যে তেমন নজর দেওয়া হয় না। আমরা অনেক সময় নিজেরাই নিজের কাছে লুকোই। মনে হিংসা বাসা বাঁধলে প্রথমে নিজের কাছে স্বীকার করুন। খেয়াল করুন আপনি কারো আনন্দ বা অর্জনে দুঃখ পাচ্ছেন কী না। আপনার কাছের কারো অর্জনে আপনার আনন্দ পাওয়া উচিত। কিন্তু তা না হয়ে কি আপনার মনে হয় কেন সে এটি অর্জন করল? এটা আমারও পাওয়া উচিত? যদি এরকম মনে হয় তাহলে বুঝতে হবে আপনার এই বিষয়টি নিয়ে কাজ করার সময় এসেছে।

ঈর্ষার উৎপত্তি

আপনার কি মনে হয় আপনি কম যোগ্য? আপনি কি ভয় পাচ্ছেন যে আপনি কখনোই পারবেন না? অনেক সময় ঈর্ষা অন্য কারো জন্য নয়, নিজের না-পাওয়া স্বপ্নের জন্য হয়ে থাকে। চিন্তা করুন কী কারণে আপনার মনে এমন ধারণা সৃষ্টি হচ্ছে। তারপর ভাবুন অন্যকে নিয়ে নেতিবাচক চিন্তা করা কি আপনার জন্য ঠিক হচ্ছে? ঈর্ষার উৎপত্তি কোথায় এটি চিন্তা করলেই আপনি ব্যাপারটি নিয়ে গভীরভাবে চিন্তা করতে পারবেন। আপনার মানসিক স্বাস্থ্যের ওপর এটি কী পরিমাণ ক্ষতিকর প্রভাব ফেলছে তা জানতে পারবেন।

অন্যের জীবন থেকে শিক্ষা নেওয়া

আপনার যাকে দেখে হিংসে হয়, সে কি নিখুঁত? না। তারও হয়তো নিজের ব্যর্থতা আছে, অজস্র না-পাওয়ার গল্প আছে, যা সে কাউকে বলে না। তাকে মানুষ হিসেবে দেখুন, প্রতিদ্বন্দ্বী নয়। তাতে আপনার কাছে অন্যের দুঃখটাও পরিষ্কার হয়ে যাবে। অন্যের প্রতি সহমর্মিতা ও সাহায্যের মনোভাব রাখলে মনে হিংসা দানা বাঁধে না। মনে রাখুন, জীবন কোনো প্রতিযোগিতা নয়। এখানে সবাই নিজেদের যোগ্যতা ও চেষ্টায় এগিয়ে যায়। তাই অন্যের খারাপ সময়ে যেমন সাহায্যের হাত বাড়িয়ে দেবেন, তেমনি ভালো সময়েও তাকে অভিনন্দন জানান। তার অর্জনের গল্প জানুন।

নিজেকে ভালোবাসুন

আপনি নিজেকে কীভাবে দেখছেন সেখান থেকেই ঈর্ষার উৎপত্তি হয়। যে নিজেকে ভালোবেসে আত্মবিশ্বাসী থাকে সে অন্যের জীবন নিয়ে অত মাথা ঘামায় না। কেনই বা অন্যকে নিয়ে এত চিন্তা করবেন যখন আপনার সবকিছুই করার সামর্থ্য আছে? নিজের ভালো দিক সম্পর্কে জানার চেষ্টা করুন। নিশ্চয়ই আপনার মধ্যে অনেক ভালো কিছু আছে যা অন্যের নেই। সেগুলো নিয়ে আত্মবিশ্বাসী হয়ে উঠুন এবং প্রতিনিয়ত নিজেকে গড়ে তুলুন, নিজেকে সময় দিন।

নিজের লক্ষ্য নির্ধারণ করুন

নিজের লক্ষ্যে স্থির থাকলে অন্যকে নিয়ে চিন্তা করার অবকাশ থাকবে না। অন্যের থেকে আপনি শিক্ষা নিতে পারেন, তারা কীভাবে লক্ষ্যে পৌঁছাতে পেরেছে সেই গল্প জানতে পারেন। অন্যের অর্জন নিয়ে ভাবনায় বিভোর থাকলে নিজেকে সময় দেওয়া হবে না। নিজের জীবন হতাশা আর ব্যর্থতায় ডুবে যাবে। একটি লক্ষ্য নির্ধারণ করুন এবং সেই পথে আগান। নিজের যোগ্যতা অনুযায়ী পরিশ্রম করুন। একটি মানুষ নিশ্চয়ই একইসঙ্গে সব বিষয়ে পারদর্শী হতে পারে না। তাই আপনি যা ভালো পারেন তাই নিয়ে এগিয়ে যান।

 

Comments

The Daily Star  | English

Khaleda Zia returns home from London

The ambulance provided by Qatar's Emir, Sheikh Tamim bin Hamad Al Thani, touched the tarmac at Hazrat Shahjalal International Airport

15m ago