ঘরের জায়গা কমিয়ে দিচ্ছে আসবাব? জেনে নিন ৫ সমাধান

ছবি: সংগৃহীত

দিন দিন পৃথিবীতে মানুষ বাড়ছে, আর কমে যাচ্ছে মানুষের থাকার জায়গা। খালি মাঠ জুড়ে যেখানে বিকেলবেলা খেলার আনন্দে মেতে উঠত শিশুরা, সেখানেও আজ বহুতল ভবন-অট্টালিকা, আর তার মধ্যেই বাক্সবন্দী থাকে মানুষ। এসব বাক্সই হয়ে ওঠে একেকটি ঘর, একেকটি গল্প।

নিজেদের মতো করে কম জায়গাকেও সাজিয়ে নেওয়া হয়, কিছুটা মানিয়ে নেওয়ার ফাঁকে থাকে নান্দনিকভাবে বেঁচে থাকার ইচ্ছা ও চেষ্টা। তবে আসবাবপত্র বাছাইয়ের ক্ষেত্রে কিছু ভুলের কারণে এই ইচ্ছেপূরণে ঝামেলা বাঁধে, ছোট ঘরকে মনে হয় আরও ছোট। জায়গা কমে যায় আরও, না কমলেও অন্তত দেখলে মনে হয় কমে গেছে।

ভুলগুলো কীভাবে এড়িয়ে যাওয়া যায়, তা নিয়েই এই লেখাটি। থাকছে ৫টি কৌশল–

পরিমাপ জানা জরুরি

বাসস্থানের সঙ্গে আসবাবের আকার অনুপাতে ঠিক না হলে ঘরের কম জায়গা আরও কম, আরও আঁটসাট মনে হওয়াটা স্বাভাবিক। ঘরের সীমানার অনুপাতে আসবাবের আকার কোনোভাবে বেশি মনে হলে, সেটি রাখা যাবে না। আসবাব ও দেয়ালের মাঝখানে কিছুটা জায়গা রেখে দিতে হবে, এটিকে বলে 'ফার্নিচার ব্রিদিং স্পেস'। ঠিক তাই, মানুষের মতো মানুষের এই জড়সঙ্গীদেরও শ্বাস-প্রশ্বাসের জন্য কিছু জায়গা দিতে হয় বৈকি!

ছিমছাম সাজগোজ

জাঁকালো বিষয় সব জায়গায় মানায় না। আর ঘরে যখন জায়গার অভাব, তখন তো একেবারেই নয়। এক্ষেত্রে ছিমছাম আসবাব ও সাজসজ্জাই সবচেয়ে ভালো পছন্দ। যা দরকার, তা বেশ ভেবেচিন্তে কিনে আনুন। আলো, আসবাবের ধরন, দেয়ালের রং সবকিছুতেই ছিমছাম ভাব বজায় রাখলে বসবাসেও এক ধরনের প্রশান্তি কাজ করে।

স্পেস-সেভিং ফার্নিচার

বিজ্ঞান ও প্রযুক্তির নিত্যনতুন ব্যবহারের আরেক সেরা প্রয়োগ হচ্ছে আধুনিক আসবাবের ক্ষেত্রে। যেহেতু দিন দিন মানুষের বাসস্থান ছোট হয়ে যাচ্ছে, সেক্ষেত্রে জায়গা বাঁচানোর সঠিক পদ্ধতির মাধ্যমে আবির্ভাব ঘটেছে স্পেস-সেভিং ফার্নিচারের মতো 'লাইফ-সেভিং' পণ্যের।

ধরুন, ছোট্ট বেডরুমে একটি কফি টেবিল রাখতে চাইছেন কিন্তু কফি টেবিলের সঙ্গে  চেয়ার রাখার জায়গা নেই একেবারেই। সেক্ষেত্রে যদি এমন কফি টেবিল পাওয়া যায়, যার নিচে চারটি টুল ঢুকিয়ে রাখা যায় এবং শুধু প্রয়োজনের সময়ই বের করতে হয়?

এতে করে স্বাভাবিক চলাচলের জন্য জায়গাও থাকছে, আবার বিনোদনের সময়টাতেও এটিকে কাজে লাগানো যাচ্ছে। এমনই আরেকটি আসবাব হচ্ছে সোফা কাম বেড, দিনের বেলায় যেটিকে অতিথি বা নিজেদের বসার কাজে সোফা হিসেবে ব্যবহার করা যায়, আবার রাতে প্রয়োজন হলে শোবার খাটে রূপ দেওয়া যায়। এ জাতীয় আসবাব ঘরে রাখলে ঘরের জায়গাও বাঁচবে, ঘরও পাবে একটি 'মিনিমাল লুক'।

বিছানার অবস্থান ঠিক আছে তো

অপেক্ষাকৃত কম জায়গার শোবার ঘরগুলোতে সাধারণ পছন্দ হচ্ছে ঘরের এক প্রান্তে বা দেয়ালের সঙ্গে ঠেস দিয়ে বিছানা রাখা। এতে করে ঘরে অনেকটা জায়গা পাওয়া যায় বলে মনে হয়। কিন্তু ঘরের ইমেজের ক্ষেত্রে কিন্তু এটি খুব একটা কার্যকর নয়। বরং ঘরের মাঝখানে খাট রাখলে সেটির উপর আলাদা নজর পড়ে। তাই সম্ভব হলে এক কোণে বিছানা রাখার বিষয়টি এড়িয়ে গেলেই ঘর আরেকটু বড় মনে হবে। এ ছাড়া বিছানার আশেপাশে চলাচলের জন্যও বেশি জায়গা পাওয়া যাবে, সংকীর্ণ বা কোণঠাসা ভাবটা দূর হবে।

'আয়নাতে ওই মুখ দেখবে যখন'

কপোলের কালো তিল নজরে পড়ুক বা না পড়ুক, ঘরের দেয়ালে রাখা বড় আয়না কিন্তু সহজাতভাবেই ঘরের মধ্যে একটা খোলামেলা আবহ নিয়ে আসে। ঘরের জানালা দিয়ে যদি বেশ খানিকটা আলো আসে, তবে জানালার বিপরীতে আয়না রাখলে সেই আয়নায় পড়া জানালার বাইরের দৃশ্য দেখে মনে হবে, বাহিরটা যেন ঘরে চলে এসেছে! এ ছাড়াও কৃত্রিম আলো যেমন এনার্জি বাল্বের বিপরীতে আয়না রাখাটাও ভালো পদ্ধতি। এতে করে ঘর আরও আলোকময় হয়ে ওঠে।

আসবাবের ক্ষেত্রে এমন আরো খুঁটিনাটি অনেক পদ্ধতিই আছে, যা প্রয়োগে বাসস্থানটির সংকীর্ণ ভাব কেটে যাবে এবং জীবনযাপনে আসবে আরও খোলামেলা স্বভাব। নতুন ঘর বা পুরোনো ঘরে নতুন সাজ আনার সময় তাই মাথায় রাখতে হবে– কিছু না ভেবে, না বুঝে যাতে কোনোভাবেই শুধু বাজেট অনুযায়ী সব আসবাব না কিনে ফেলা হয়। এক্ষেত্রে আসবাবের প্রয়োজনীয়তা, মানানসই হবার শর্তাবলী সবার আগে প্রযোজ্য।

 

Comments

The Daily Star  | English
CSA to be repealed

Govt will scrap CSA within a week

The Cyber Security Act will be repealed within a week and all cases filed under the act will be withdrawn, Nahid Islam, adviser to the posts, telecommunications, and information technology ministry, said yesterday.

15m ago