ঢাকার চমৎকার ৬ বুকশপ ও বুক ক্যাফের খোঁজ

ছবি: সংগৃহীত

বুক ক্যাফে ও বুকশপ বইপ্রেমীদের কাছে যেন স্বর্গের মতো। ঢাকায় বেশকিছু বুক ক্যাফে ও বুকশপ গত কয়েক বছরে বেশ জনপ্রিয় হয়েছে। শহরের যান্ত্রিক কোলাহলের মাঝে এই জায়গাগুলো হয়ে উঠেছে বইপ্রেমীদের স্বস্তির জায়গা। ছুটির দিনগুলোতে বা অবসর সময়ে সুযোগ পেলেই বইপ্রেমীরা ছুটে যান এসব জায়গায়।

চলুন জেনে নিই এমন ৬টি বুক ক্যাফের খোঁজ-

বেঙ্গল বই

ধানমন্ডি ২৭ এর ৪২ নম্বর ভবনটি সারাদিন বইপ্রেমীদের সমাগমে মুখরিত থাকে। ২০১৭ সালে বেঙ্গল বইয়ের যাত্রা শুরু হলেও ২০২০ সালে এই নতুন ঠিকানায় স্থানান্তরিত হয় পাঠকদের প্রিয় 'বেঙ্গল বই'। বেঙ্গল বইয়ে রয়েছে দেশি-বিদেশি নানা বই। আছে বিশাল বইয়ের সংগ্রহ ও শিশু-কিশোরদের জন্য আলাদা কর্নার।

ছবি: বেঙ্গল বই

বিনামূল্যে বই পড়া ছাড়াও এখানে রয়েছে বই বদলের সুযোগ। যেকোনো পুরোনো ২টি বই দিয়ে তাদের সংগ্রহ থেকে পছন্দমতো একটি পুরোনো বই নেওয়ার ব্যবস্থা আছে এখানে। বেঙ্গল বইয়ের উঠানে রয়েছে চা-নাশতার আয়োজন, উপরে রয়েছে একটি ক্যাফে। বইয়ের পাশাপাশি তাই চা-কফির আড্ডাও জমে সেখানে।

বুকওয়ার্ম বাংলাদেশ

বুকওয়ার্ম ঢাকার সবচেয়ে পুরোনো বইয়ের দোকানগুলোর মধ্যে অন্যতম। ১৯৯০ সালে এর যাত্রা শুরু হয়। এটি এখন গুলশান ২ এর বিচারপতি শাহাবদ্দিুন পার্কে অবস্থিত। পার্কের গাছগাছালির মাঝে ছোট্ট ছিমছাম এই বইয়ের দোকানটি ইতোমধ্যেই সবার প্রিয় হয়ে উঠেছে। পার্কে প্রবেশ করার পরপরই দোকানটি চোখে পড়ে।

ছবি: বুকওয়ার্ম বাংলাদেশ

পার্কে আসা মানুষ অথবা বইপ্রেমীদের পদচারণায় সবসময় মুখরিত থাকে এই স্থান। গত ৩ দশক ধরে বুকওয়ার্ম বহু ইংরেজি বইয়ের পাঠক তৈরি করেছে ও পাঠকদের মনে বিশেষ স্থান করে নিয়েছে। শাহাবদ্দিুন পার্কে বুকওয়ার্মের পাশেই আছে নর্থ এন্ড ক্যাফে। চাইলে সেখানে কফির কাপে চুমুক দিতে পারেন।   

পাঠক সমাবেশ কেন্দ্র

রাজধানীর শাহবাগে অবস্থিত পাঠক সমাবেশ কেন্দ্র গত ৩৪ বছর ধরে পাঠকদের বাংলা ও ইংরেজি বই পড়তে উৎসাহিত করে আসছে। এখানে রয়েছে রিডার্স ক্লাব, শিশু কর্নার। পাঠকরা এখানে চাইলে বসে বই পড়তে পারেন।

পাঠক সমাবেশ ঢাকার অন্যতম বড় এবং পুরোনো গ্রন্থবিপণী। অরিজিনাল বাংলা ও ইংরেজি বই পেতে বইপ্রেমীরা এখানে আসেন। বর্তমানে শাহবাগ ও কাঁটাবনে পাঠক সমাবেশ কেন্দ্র অবস্থিত।

পিবিএস

রাজধানীর শান্তিনগরে অবস্থিত পিবিএসে বাংলা ও ইংরেজি ২ ভাষার বই পাওয়া যায়। এটিও বেশ অনেক বছর ধরে পাঠকদের পড়ার চাহিদা পূরণ করে আসছে। এখানে বসে আপনি চাইলেই বিভিন্ন বই পড়তে পারেন। এটি একইসঙ্গে বুক স্টোর ও বুক ক্যাফে। বাচ্চাদের জন্য বই পড়ার ও খেলার ব্যবস্থা রয়েছে এখানে। পিবিএসের মূল আকর্ষণ হলো বাচ্চাদের কর্নারটি। তাই বাচ্চাদের পড়ার প্রতি আগ্রহী করতে চলে যেতে পারেন পিবিএসে।

দ্য রিডিং ক্যাফে

দ্য রিডিং ক্যাফের যাত্রা শুরু হয় ২০১৪ সালে। বর্তমানে ঢাকায় রয়েছে এর ৩টি শাখা। বনানী, গুলশান ও ধানমন্ডিতে অবস্থিত এর ৩টি শাখা। এখানে আপনি চা-কফি খাওয়ার পাশাপাশি পছন্দের বই পড়তে পারেন। ইংরেজি, বাংলা অরিজিনাল বই ও বাচ্চাদের বই পাওয়া যায় এখানে।

বাতিঘর, ঢাকা

২০১৭ সালে ঢাকার বাংলামোটরে বিশ্বসাহিত্য কেন্দ্রের ৭ তলায় যাত্রা শুরু করে বাতিঘর, ঢাকা। এটি বাতিঘরের দ্বিতীয় শাখা। নান্দনিক এই গ্রন্থবিপণী বইপ্রেমীদের শুরু থেকেই টানছে। এর নকশা করা হয়েছে মোঘল সাম্রাজ্যের ইতিহাসের আদলে। শুধু এর চমৎকার ইন্টেরিয়র নয়, বাতিঘরের বইয়ের বিশাল সংগ্রহ সবাইকে মুগ্ধ করে। বাতিঘরে রয়েছে ইংরেজি ও বাংলা ২ ভাষার বইয়ের বিশাল সম্ভার। কথাসাহিত্য, গল্প, প্রবন্ধ, কবিতা, শিল্প-দর্শন-ইতিহাস-রাজনীতি, মনোবিজ্ঞান-নাট্যতত্ত্ব এসব বিষয়ের বই রয়েছে এখানে। এ ছাড়া শিশু-কিশোর ও কমিকস ভক্তদের জন্য রয়েছে আলাদা কর্নার।

এখানে আপনি বই না কিনেও উল্টেপাল্টে দেখতে পারেন, চাইলে পড়তেও পারেন। বাতিঘরের এক কোণায় রয়েছে একটি ছোট কফি কর্নার, যেখানে আপনি চায়ে চুমুক দিতে দিতে ডুবে যেতে পারেন বইয়ের পাতায়।

নতুন প্রজন্মকে বই পড়ায় উৎসাহিত করতে বুকশপগুলো বিশেষ ভূমিকা রাখছে। অবসরে সময় কাটানোর জন্য এই বুকশপগুলো হয়ে উঠুক সবার প্রিয় ঠিকানা।

Comments

The Daily Star  | English
The Indian media and Bangladesh-India relations

The Indian media and Bangladesh-India relations

The bilateral relationship must be based on a "win-win" policy, rooted in mutual respect, non-hegemony, and the pursuit of shared prosperity and deeper understanding.

3h ago