অবসরের পর…

জীবনযাপন, অবসর,
ছবি: সংগৃহীত

রাফি আহমেদ অবসর নেওয়ার পর থেকে সবসময় মনমরা থাকেন। বাড়ির কারো সঙ্গে খুব একটা কথা বলেন না। এমনকি কোনো কাজে মনোযোগী হতে পারেন না। কিন্তু, অবসর যে নিতেই হবে তাতো আগেই জানা ছিল। আবার সময় অনুযায়ী অবসর নিয়েছেন রাফি আহমেদ। তাই কোনো অভিযোগও থাকার কথা নয়।

কিন্তু, মন খারাপ আরও বাড়ে যখন সুমনা ও দুই ছেলে অফিস কিংবা কলেজে চলে যায়। বাড়িতে এভাবে একা থাকাকে কোনোভাবেই মেনে নিতে পারছেন না তিনি। সুমনা রাফি আহমেদের স্ত্রী। তাকেও চাকরি ছেড়ে দেওয়ার অনুরোধ করছেন কয়েকদিন ধরে। সুমনার চাকরির মেয়াদও বছরে দুয়েক বাকি। তাই এসময় তার চাকরি ছেড়ে দেওয়াটা উচিত হবে না। কিন্তু, রাফি আহমেদ আবার এটা মানতে নারাজ। শুরুতে এ নিয়ে ঝগড়াও করতেন। কিন্তু, এখন নিজেকে নিজের মধ্যে গুটিয়ে নিচ্ছেন। তার মনে হয় সবকিছু থেকেও যেন নেই। এক ধরনের নিঃসঙ্গতা সবসময় তাকে তাড়া করে বেড়াচ্ছে। আগে বই পড়তে ও গান শুনতে পছন্দ করতেন। এখন সেগুলোও ভালো লাগে না। সারাক্ষণ একা চুপচাপ বসে থাকেন।

যারা অবসর নেন তাদের অনেকেরই এ ধরনের সমস্যা হয়। এখান থেকে সমাধানেরও কিছু উপায় আছে। এজন্য প্রয়োজন যতটা সম্ভব তার পাশে থাকা। তাকে উৎসাহ দেওয়া।

সাধারণত অনেকদিন টানা চাকরি করে বাড়িতে থাকতে সবারই একটু খারাপ লাগে। তাই তাদের মানসিক অবস্থা বোঝার চেষ্টা করতে হবে। তাকে সময় দিতে হবে। অন্তত প্রথম কয়েকটা দিন ছুটি নিয়ে হলেও তাকে সময় দেওয়া উচিত। তাকে বলুন, পরিবারের সবাই তার সঙ্গে আছে। আর একবার মানিয়ে নিতে পারলে সব ঠিক হয়ে যাবে।

তাকে নতুন কিছু করতে উৎসাহ দিন। কাজের চাপে যেসব ইচ্ছে বা শখ পূরণ করতে পারেনি। সেগুলো এখন শিখতে বলুন। তাহলে এসব করতে করতে দিনের অনেকটা সময় কেটে যাবে। ফলে, আর একা লাগবে না।

তাকে বোঝাতে হবে, এই সময়টা মূল্যবান। এত বছর কাজ করার পর এই সময়টুকু উপভোগ করতে তাকে নানাভাবে উৎসাহ দিতে হবে। প্রয়োজনে পুরনো বন্ধুদের সঙ্গে যোগাযোগ করিয়ে দিন।

তিনি যদি আবার কাজ করতে চান, তাহলে পার্ট-টাইম বা চাপ কম এমন কাজে উৎসাহ দিতে পারেন। প্রয়োজনে ইন্টারনেট বা বিজ্ঞাপন দেখে কাজ খুঁজে পেতে সাহায্য করুন।

আবার মাঝে মাঝে সিনেমা দেখতে নিয়ে যেতে পারেন। কখনো কখনো তার অফিসের সহকর্মীদের বাড়িতে দাওয়াত দিয়ে চমকে দিতে পারেন। তাহলে অবসরে যাওয়া মানুষটি ধীরে ধীরে স্বাভাবিক হয়ে উঠবেন। পরিস্থিতির সঙ্গে নিজেকে মানিয়ে নিতে পারবেন।

Comments