যেভাবে সাজাবেন ওয়ারড্রোব

সাজানো গোছানো ওয়ারড্রোব মানেই যেনো সাজানো গোছানো, নির্ঝঞ্ঝাট জীবন। ছবি: সংগৃহীত
সাজানো গোছানো ওয়ারড্রোব মানেই যেনো সাজানো গোছানো, নির্ঝঞ্ঝাট জীবন। ছবি: সংগৃহীত

আমাদের দৈনন্দিন জীবনযাত্রার অন্যতম সঙ্গী ওয়ারড্রোব। সাজানো গোছানো ওয়ারড্রোব মানেই যেনো সাজানো গোছানো, নির্ঝঞ্ঝাট জীবন।

চট করে কোথাও বের হওয়া কিংবা সময় বাঁচাতে পরিপাটি ওয়ারড্রোবের কোনো বিকল্প নেই।

বাসা থেকে বের হওয়ার জন্য রেডি হওয়ার আগে যদি দেখেন আপনার পরিপাটি ওয়ারড্রোবটি খুললেই পেয়ে যাচ্ছেন পছন্দসই কাপড়গুলো, তখন আপনার মনটাই ফুরফুরে হয়ে উঠবে। হাতের নাগালেই পেয়ে যাওয়া, যত্ন করে ধুয়ে ইস্ত্রি করে রাখা কাপড়গুলো আপনার দিনের শুরুটাই অন্যরকম করে দেবে।

আবার যদি ওয়ারড্রোব খুলে দেখেন এলোমেলোভাবে রাখা সব কাপড় উপচে পড়েছে, তাহলে দিনের শুরুতে আপনার মন বিরক্তিতে ভরে ওঠবে!

তাই প্রতিদিনের ঝামেলা থেকে মুক্তি পেতে সঠিক নিয়মে কাপড় গুছিয়ে রাখা খুবই জরুরি। কীভাবে শুরু করবেন এই মহাপরিকল্পনা? কীভাবেই বা সাজাবেন আপনার ওয়ারড্রোব, যাতে করে প্রতিদিন সেগুলো গুছানো অবস্থাতেই থাকবে?

সেটাই আজকের আলোচনার বিষয়।

অপ্রয়োজনীয় পোশাক ছাঁটাই করা

আপনার ওয়ারড্রোব গোছানোর আগে সবচেয়ে প্রথম যেটা করতে হবে, সেটা হচ্ছে সম্পূর্ণ ওয়ারড্রোব থেকে সব ধরনের অপ্রয়োজনীয়, পুরনো, ছেঁড়া অথবা পড়ার অযোগ্য কাপড়গুলো বাদ দিতে হবে। মনে রাখবেন, গুছিয়ে রাখার মানেই এই না যে সবকিছুই রেখে দিতে হবে। তাই, কেবল সে পোশাকগুলোই আপনার ওয়ারড্রবে রাখুন, যেগুলো আপনি প্রতিনিয়ত ব্যবহার করবেন। বাকিগুলো হয় রিসাইকেল করে ফেলুন অথবা অল্টার জাতীয় কোনো কাজ থাকলে সেগুলোর জন্য অন্য কোথাও আলাদা করে রেখে দিন। তাহলে ওয়ারড্রোব গুছানোর পরে তেমন কোনো অপ্রয়োজনীয় পোশাক আপনার সামনে থাকবে না।

চোখের সামনে রাখা

আপনার পোশাক আপনি যতই গুছিয়ে রাখুন না কেন, সেগুলোকে ওয়ারড্রোব খুলে এক নজরে খুঁজে না পেলে সেটা খুব একটা উপযোগী হবে না। পোশাকগুলো সুন্দর করে গুছিয়ে এমনভাবে রাখতে হবে, যেনো ওয়ারড্রোব খুললেই তা আপনার চোখে পড়ে। কেননা একসঙ্গে যদি সুশৃঙ্খলভাবে পুরো পোশাকের সংগ্রহ আপনার চোখের সামনে থাকে, তাহলেই আপনি মনে মনে ঠিক করে নিতে পারবেন কোন প্যান্টের সঙ্গে কোন জামা কিংবা টপ পরবেন। অথবা, কোন অনুষ্ঠানে কোন শাড়িটা পরবেন। কথায় বলে, চোখের আড়াল তো মনের আড়াল। অনেক সময় এমন হয় যে কোনো সুন্দর পোশাক অন্য পোশাকের আড়ালে থেকে যায় এবং এভাবে আপনিও ভুলে যেতে পারেন অনেক পোশাকের কথা। তাই এমনভাবে সেগুলো রাখা উচিৎ যাতে খুব সহজেই সবগুলো পোশাক দেখা যায়।

সাজান নিজের প্রয়োজন অনুযায়ী

প্রথমত, আপনি যে পোশাকগুলো পরতে বেশি পছন্দ করেন, সে অনুযায়ী আপনার ওয়ারড্রোব সাজান। আপনি যদি কোনো পোশাক সপ্তাহে অন্তত ১ বার পরেন, তাহলে সেগুলো সামনের দিকে রাখুন। এতে করে আপনি সেগুলো খুব সহজে খুঁজে নিয়ে পরতে পারবেন। আবার যদি এমন হয়, আপনার অদলবদল করে পরতে বেশি ভালো লাগে, তবে অন্তত কোন জামার সঙ্গে কী পরবেন, সেটি একসঙ্গে মিলিয়ে রাখার চেষ্টা করুন।

ছোট জামাকাপড় খুব সহজেই অন্য কাপড়ের ভিড়ে হারিয়ে যায়। তাই এগুলোকে আলাদা রাখা উচিৎ। ছবি: সংগৃহীত
ছোট জামাকাপড় খুব সহজেই অন্য কাপড়ের ভিড়ে হারিয়ে যায়। তাই এগুলোকে আলাদা রাখা উচিৎ। ছবি: সংগৃহীত

আপনার আন্ডারগার্মেন্টস ও অন্যান্য সামগ্রী আলাদা রাখার চেষ্টা করুন, কারণ এ ধরনের ছোট জামাকাপড় খুব সহজেই অন্য কাপড়ের ভিড়ে হারিয়ে যায়। সাজানোর ক্ষেত্রে প্রত্যেকের নিজস্ব স্টাইল থাকে। আপনি আপনার স্টাইল অনুযায়ী ওয়ারড্রোব সাজান।

হ্যাঙ্গার রাখার জায়গা করুন

অনেকসময় এমন কিছু পোশাক থাকে যেগুলো আমরা একবার পরার পরেই ধুতে দেই না। যেমন স্যুট, জ্যাকেট, কোটি, ওড়না বা মাফলার। এসব পোশাক যাতে ঝুলিয়ে রাখা যায়, সেরকম একটি জায়গা তৈরি করতে হবে। এখন অনলাইনে অনেক ধরনের হুক পাওয়া যায়, যেগুলো আপনার ওয়ারড্রোবের দরজায় লাগিয়ে পোশাক ঝুলিয়ে রাখতে পারেন। আপনি আপনার সুবিধামত হ্যাঙ্গারও ব্যবহার করতে পারেন। এতে করে আপনার জায়গাও অনেক বেঁচে যাবে, জামাকাপড়ের ভাঁজও নষ্ট হবে না।

যেসব পোশাক ঝুলিয়ে ও ভাঁজ করে রাখা উচিৎ

অনেক পোশাক আছে যেগুলো ঝুলিয়ে না রাখলে সেগুলোর ভাঁজ নষ্ট হয়ে যায়। ফলে দেখা যায় ইস্ত্রি করার পরও অগোছালো ভাঁজের কারণে অনেক পোশাক পরার পর আর আগের মতন আকর্ষণীয় লাগে না। আন্ডারগার্মেন্টস, ব্লেজার, জ্যাকেট, স্যুট, অনেক ভালো শাড়ি ঝুলিয়ে রাখলেই বরং অনেকদিন পর্যন্ত ভালো থাকে। এতে করে ইস্ত্রি করার সময় বেঁচে যায় এবং কাপড় অনেক দিন পর্যন্ত পরার যোগ্য থাকে।

অনেক পোশাক আছে যেগুলো ঝুলিয়ে না রাখলে সেগুলোর ভাঁজ নষ্ট হয়ে যায়। ছবি: সংগৃহীত
অনেক পোশাক আছে যেগুলো ঝুলিয়ে না রাখলে সেগুলোর ভাঁজ নষ্ট হয়ে যায়। ছবি: সংগৃহীত

এগুলো ছাড়া প্রায় সব পোশাকই ভাঁজ করে রাখা সম্ভব। তবে ভাঁজ করারও একটি সঠিক নিয়ম আছে। যেকোনো ভাবে ভাঁজ করলে পোশাক নষ্ট হয়ে যেতে পারে। পোশাকে দাগ পড়ে যায়। জামা, স্কার্ট, স্কার্ফ ইত্যাদি সব পোশাকই ভাঁজ করে রাখা সম্ভব। তবে ভাঁজ করতে হবে অবশ্যই যত্নের সাথে।

ড্রয়ারে কাপড় রাখার উপায়:

কাপড় অনেক ভাবেই রাখা সম্ভব, কিন্তু আমরা যদি 'ফাইল ফ্যাশন', অর্থাৎ জাপানের মেরি কোন্ডের ভাঁজ করার পদ্ধতি অনুযায়ী কাপড় ভাঁজ করি, তাহলে ড্রয়ারের জায়গা স্বাভাবিকের চেয়ে দ্বিগুণ মনে হবে।

ম্যারি কোন্ডের কাপড় ভাঁজ করার প্রক্রিয়া। ছবি: সংগৃহীত
ম্যারি কোন্ডের কাপড় ভাঁজ করার প্রক্রিয়া। ছবি: সংগৃহীত

অর্থাৎ, আগের চেয়ে দ্বিগুণ পরিমাণ পোশাক একই ড্রয়ারে রাখা সম্ভব হবে যদি কাপড়গুলোকে ফাইলের মতো করে ভাঁজ করে দাঁড় করিয়ে রাখা হয়।

 

Comments

The Daily Star  | English

Killing of trader in old Dhaka: Protests erupt on campuses

Protests were held on campuses and in some districts last night demanding swift trial and exemplary punishment for those involved in the brutal murder of Lal Chand, alias Sohag, in Old Dhaka’s Mitford area.

3h ago