যে কারণে সাদা চুল তুলে ফেলা উচিত নয়
সেই আদিকাল থেকে একটা কথা বেশ প্রচলিত— 'মাথা থেকে একটা সাদা চুল উঠিয়ে ফেললে সেই স্থানে আরও কিছু চুল পেকে যায়'। বিশ্বের বহু বিশেষজ্ঞ দেখেছেন এই ধারণাটির কোনো সত্যতা নেই।
এ ছাড়া এমনিতেই দিনে ১৫৯টির মতো চুল পড়ে যেতে পারে। চুল পড়ে যাওয়ার সঙ্গে নতুন করে চুল গজানোর কোনো সম্পর্ক নেই।
প্রশ্ন হলো ক্ষণিকের জন্য সাদা চুল থেকে মুক্তি পেতে যে চুলগুলো উঠিয়ে ফেলা হয় তার প্রভাব কী? বিশেষজ্ঞদের মতে, একটি চুল উঠিয়ে ফেলার পরে সেটি ৩ মাস পর্যন্ত রেস্টে থাকে। ৩ মাস পরে সেই নির্দিষ্ট হেয়ার ফলিকল থেকে আবারও চুল গজানোর প্রক্রিয়া শুরু হয়।
সাধারণত ২০ বছর বয়সের পর নতুন গজানো চুল কিছুটা সরু বা চিকন হয়। সেই চুলের সময়কালও কিছুটা কম থাকে। অর্থাৎ চুল পড়ে যায় তাড়াতাড়ি। আর যখন কোনো চুল টেনে উঠানো হয় তখন চুলের গোড়ায় এক ধরনের শক সৃষ্টি হয়। চুলের ফলিকলগুলোতে ইনফেকশন তৈরি হয়ে সেখানে আর চুল গজায় না। ফলে ধীরে ধীরে তালু দেখা দিতে থাকে। তাই সাদা চুল উঠিয়ে লাভের চেয়ে নিজেদের ক্ষতিই বেশি হয়।
তবে, প্রশ্ন জাগতে পারে আমাদের চুল আসলে সাদা বা ধূসর বর্ণের হয় কেন। এর বৈজ্ঞানিক কারণ কিছুটা সহজ ভাষায় বলতে গেলে, আমাদের চুল সাদা হবার পেছনে দায়ী মূলত মেলানিনের অভাব। চুলের রঙ তৈরি হয় মেলানিন থেকে। ২৮ থেকে ৪০ বছর বয়সে শরীর থেকে ধীরে ধীরে এই মেলানিনের পরিমাণ কমতে থাকে। ফলে আমাদের চুল স্বচ্ছ হতে থাকে। পরবর্তীতে চুলের যতটুকু রঙ অবশিষ্ট থাকে সেখান থেকে মূলত সাদা, ধূসর এবং আরও অনেক ধরনের শেড তৈরি হতে থাকে।
তাহলে উপায়?
বয়সের সঙ্গে চুলও ধীরে ধীরে সাদা হবে এটাই স্বাভাবিক। তবে, জীবনযাপনের ধরণ ও বায়োলজিক্যাল বিষয় বিবেচনায় অনেক সময় কিছুটা তাড়াতাড়ি চুল সাদা হয়। এতে ঘাবড়ে যাবার কিছুই নেই। চুলের এই সাদা অংশসহ কীভাবে সর্বোচ্চ সুন্দর থাকা যায় সেটা বিবেচনা করা বেশি উত্তম।
তাই চুলের সাদা হওয়া থামিয়ে না রেখে বরং এর সঙ্গে সামঞ্জ্যস্যপূর্ণ্য হেয়ার স্টাইল নির্বাচন করা বেশি উত্তম। বার্ধ্যকের এই সময়টাকে আরও বেশি করে উপভোগ করতে হবে। সাদাচুলও যে সুন্দর সেটা মাথায় রেখে সেভাবেই নিজেকে উপস্থাপন করতে হবে। সাদা চুল নিয়ে অতিরিক্ত স্ট্রেস নেওয়া থেকে বিরত থাকতে হবে। তবে, বয়সের আগেই যদি চুল সাদা হতে শুরু করে তাহলে ভালো একজন হেয়ার স্পেশালিস্টের শরণাপন্ন হওয়াই উত্তম।
তথ্যসূত্র: হাফপোস্ট, বেস্ট হেলথম্যাগাজিন.কম, আরডি.কম
গ্রন্থনা: আরউইন আহমেদ মিতু
Comments