সুমন ভাইয়ের দিলবাহার: পুরান ঢাকার নতুন স্পেশাল শরবত

সুমন ভাইয়ের দিলবাহার
ছবি: স্টার

ঢাকার খাবারের দৃশ্যপটে দিলবাহার আজওয়া বাদাম শরবত তুলনামূলক নতুন হলেও, এর জনপ্রিয়তা দ্রুতই স্থানীয় গণ্ডি ছাড়িয়ে পুরো ঢাকায় ছড়িয়ে পড়ছে। যদিও স্থানীয়রা এই শরবতকে শুধু বাদাম শরবত নামেই চেনেন।

পুরান ঢাকায় এই শরবতের স্বাদ নিতে গিয়ে এর জনপ্রিয়তা আঁচ করা গেল। অবাকই হলাম যে, গিয়েই সেখানে সরাসরি অর্ডার করা যায় না। প্রথমে একটি টোকেন সংগ্রহ করতে হবে এবং সেই টোকেনের সিরিয়াল আসলেই কেবল শরবত অর্ডার করতে পারবেন।

পুরান ঢাকার আলুবাজারের ফুটপাতে এই শরবত প্রতিদিন সকাল ৯টা থেকে রাত সাড়ে ১২টা পর্যন্ত পাওয়া যায়। আর এটি বিক্রি করেন মোহাম্মদ দোসাই সুমন। তিনি স্থানীয়দের কাছে সুমন ভাই নামেই পরিচিত।

এই শরবতের ব্যবসায়িক সংস্কৃতি ও ভিন্নধর্মী বিপণন কৌশল দেখেই মূলত আগ্রহী হয়ে উঠেছিলাম এর স্বাদ নিতে। মধ্যরাতে পুরান ঢাকার ব্যস্ততম পথগুলো যখন ক্রমেই স্তিমিত হয়ে আসে, তখন সহজেই আলুবাজার যাওয়া যায়। মাজার মিষ্টান্ন ভাণ্ডারের পাশে এবং সুরিটোলা সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের বিপরীত দিকে অস্থায়ী দোকান বসিয়ে এই শরবত বিক্রি চলে। দোকানে মূলত দুজন থাকেন। একজন ক্রেতাদের সিরিয়ালের টোকেন নম্বর দেন আর অন্যজন শরবত তৈরি করেন।

করোনা মহামারির সময় মোহাম্মদ দোসাইয়ের ফাস্টফুডের দোকান বন্ধ হয়ে যাওয়ার পর তিনি এই শরবতের দোকান চালু করেন। শরবতের রেসিপি মূলত তার মায়ের। তবে সুমন এতে কিছু পরিবর্তন এনেছেন। বর্তমানে এটি পুরান ঢাকার অন্যতম জনপ্রিয় শরবতে পরিণত হয়েছে।

দিলবাহার শব্দের বাংলা অনুবাদ হতে পারে 'সুখী', আর আজওয়া এক ধরনের খেজুরের নাম। শরবতটি তৈরির জন্য প্রথমে দুধের সঙ্গে মালাই ও সাবুদানা মিশিয়ে পুরো মিশ্রণটিকে আরও ঘন করা হয়। এরপর বাদাম ও খেজুরযুক্ত গ্লাসে মিশ্রণটি ঢালা হয়। শেষে জাফরানে সেদ্ধ দুধ যোগ করা হয় এবং ওপরে বাদাম দিয়ে সাজানো হয়।

পানীয়টির বিশেষ সংস্করণে ডুমুর, চকলেট, কর্নফ্লেক্স, ওটসবার এবং ভারী দুধের মিশ্রণের সঙ্গে বিভিন্ন শুকনো ফলের টুকরো যোগ করা হয়। এটি মূলত একটি এনার্জি ড্রিংক। স্বাদের কারণে ২০ মিনিট লাইনে দাঁড়িয়েও এই শরবত খেতে আপত্তি করেন না অনেকে।

সাধারণ এক গ্লাস দিলবাহার আজওয়া শরবতের দাম ৮০ টাকা। স্পেশাল গ্লাসের দাম ১৩০ টাকা আর সুপার স্পেশাল গ্লাসের দাম ২০০ টাকা। দিলবাহার শরবতের সবচেয়ে দামি গ্লাসের নাম আলিশান, দাম ৫০০ টাকা।

এই শরবতের চাহিদা এতটাই বেশি যে মানুষ ফোন দিয়ে আগাম টোকেন বুকিং দেয়, যেহেতু টোকেন ছাড়া এটি অর্ডার করা যায় না। শরবত তৈরির সময়ও প্রস্তুতপ্রণালী দেখার জন্য ভিড় করেন অনেকে।

তাই আলুবাজার গেলে সুমন ভাইয়ের দিলবাহার শরবতে চুমুক না দিয়ে ফিরলে কিন্তু আফসোস থেকে যাবে!

অনুবাদ করেছেন আহমেদ হিমেল

 

Comments

The Daily Star  | English
Apparel Buyers Delay Price Increases Post-Wage Hike Promise

Garment exports to US grow 17%

Bangladesh shipped apparels worth $5.74 billion in the July-March period to the USA

5h ago