নতুন মায়ের পুষ্টি
সন্তান প্রসবের পর বেশিরভাগ সময়ই মা ও পরিবারের অন্যান্য সদস্যরা বাচ্চাকে নিয়েই বেশি ব্যস্ত হয়ে পড়েন। এ সময় মা নিজেও নিজের যত্ন নিতে ভুলে যান৷ অথচ এ সময়টা নতুন মায়ের পুষ্টিকর খাবার প্রয়োজন।
সন্তান প্রসবের পর মায়েরা স্বাভাবিকভাবেই বেশিরভাগ সময় ক্লান্ত ও ব্যস্ত থাকেন। তারা সময়মতো বা পর্যাপ্ত পরিমাণে খেতে ভুলে যান। আবার যখন খাবার খান, অনেক দ্রুত খান। ফলে অনেক পুষ্টি উপাদান খাবার থেকে বাদ পড়ে যায়। তাই অনেক মা কিছু পুষ্টি উপাদানের ঘাটতিতে ভুগতে পারেন।
নতুন মায়ের খাবারে কী কী পুষ্টি উপাদান থাকা জরুরি তা নিয়ে আমরা কথা বলেছি পুষ্টিবিদ তাসনিম আশিকের সঙ্গে।
তাসনিম আশিকের পরামর্শ হলো-
● আপনার প্রতিদিনের খাদ্য তালিকায় মাছ রাখুন। খাদ্যতালিকায় থাকবে দেশি মাছ, ছোট মাছ। সপ্তাহে ২-১ দিন সামুদ্রিক মাছ রুপচাঁদা, লইটা, টুনা ইত্যাদি খেতে পারেন। এতে প্রোটিনের পাশাপাশি ওমেগা-৩ পাওয়া যাবে।
● দুধ বা দুধের তৈরি খাবার, মুরগির মাংসের তরকারি, মুরগির স্যুপ, সবজি দিয়ে মাছ, ডাল, সবজি মিশ্রিত ডাল-তরকারি মিল্ক ফ্লো বৃদ্ধিতে সাহায্য করে, সেইসঙ্গে পুষ্টি চাহিদা মিটিয়ে থাকে। অনেকেই শর্করা একেবারে এড়িয়ে চলেন, আবার অনেকেই বেশি গ্রহণ করেন। ২টির একটিও করা যাবে না। শর্করা অবশ্যই গ্রহণ করতে হবে, তবে পরিমাণ ঠিক রেখে। ভাত, রুটি, মুড়ি, চিড়া, খই, সুজি, সেমাই, সাগু ইত্যাদি খাওয়া যেতে পারে। নানা রকমের রঙিন সবজি ও শাকের মতো পর্যাপ্ত ভিটামিন ও মিনারেলস সমৃদ্ধ খাবার খেতে হবে।
● সবসময় হাইড্রেটেড থাকার চেষ্টা করুন। সারাদিনে অন্তত ৮ গ্লাস পানি বা তরল পান করুন। যেহেতু বাচ্চাকে দুধ পান করাচ্ছেন তাই এ সময় নিজেকে হাইড্রেটেড রাখা জরুরি।
● বিভিন্ন তরল যেমন - মিল্কশেক, লাচ্ছি, স্যুপ, ডাবের পানি, তাজা ফলের শরবত পান করতে পারেন৷ তবে চিনির পরিমাণ অবশ্যই কম রাখতে হবে। অতিরিক্ত ঠান্ডা পানীয় এড়িয়ে চলুন।
● বুকের দুধ পান করানোর সময় মায়েরা অনেক ক্যালরি খরচ করেন৷ তাই এ সময় ক্যালরি সমৃদ্ধ খাবার খান। এ সময় একজন মায়ের দিনে অন্তত ৫০০ ক্যালরি অতিরিক্ত গ্রহণ করা প্রয়োজন।
● গর্ভকালীন অতিরিক্ত ওজন কমাতে অনেক সময় নতুন মায়েরা প্রসবের পরপরই ডায়েট শুরু করে দেন। ওজন কমাতে তাড়াহুড়ো না করে একজন বিশেষজ্ঞের পরামর্শ নিয়ে খাদ্যতালিকা তৈরি করা উচিত।
● বাচ্চাকে বুকের দুধ পান করানোর ফলে এ সময় মায়ের বারবার ক্ষুধা লাগতে পারে৷ মৌসুমি ফল, কটেজ চিজ, হোল গ্রেইন ক্র্যাকার,সেদ্ধ ছোলা, টক দই ইত্যাদি স্বাস্থ্যকর খাবার বেছে নিন।
● কোনো খাবারে যদি এলার্জি থাকে বা কোনো খাবার খাওয়ার পর বাচ্চার ডায়রিয়া বা এলার্জির মতো উপসর্গ হলে সেটি খাওয়া থেকে বিরত থাকতে হবে।
Comments