গরমে শিশুর আরামদায়ক পোশাক

আজকাল যা আবহাওয়া, তাতে গরম আর বৃষ্টি পালা করে তাদের রাগ দেখাচ্ছে। এমন অবস্থায় নিজেদেরই ফ্যাশন যখন ঝুঁকির মুখে, তখন বাচ্চাদের নিয়ে চিন্তা হওয়াটা স্বাভাবিক। তবে বাচ্চাদেরকে তো বাইরে যাওয়া থেকে থামানোর কোনো উপায় নেই।
তাই এই সময়টাতে তাদের পোশাক-আশাক নিয়ে একটু সচেতন থাকা উচিত, যাতে ফ্যাশন আর আরাম– কোনোটাতেই সমঝোতা না করতে হয়। তবে বাবা-মায়ের চিন্তার কোনো কারণ নেই। কারণ ফ্যাশন জগতে এখন শুধু 'দেখতে সুন্দর' পোশাকই নয়, 'পরতে আরাম' পোশাকও ভীষণ প্রাধান্য পাচ্ছে। আর বাচ্চাদের ফ্যাশনের ক্ষেত্রে তো এ কথা আরও সত্যি।

ডুঙ্গারিস ও কো-অর্ড
ডুঙ্গারিস আর জাম্পস্যুটে একইসঙ্গে আরাম ও ফ্যাশনের মেলবন্ধন হয়। দেখতে ভীষণ ফ্যাশনেবল আর পরতে আরাম এই পোশাকগুলো সাধারণত সুতি কাপড় ও লিনেনের তৈরি হয়। পারিবারিক অনুষ্ঠান কিংবা ঘরোয়া আবহের আয়োজনে বাচ্চাদের পরার জন্য বাজারে এখন বিভিন্ন মজার মজার ডিজাইন আর অভিজাত স্টাইলের প্রিন্ট পাওয়া যাচ্ছে। আর জাম্পস্যুটে যেহেতু একাধিক পোশাক নেই, তাই একটি পোশাকেই বাচ্চাদেরকে সামলে নিতে পারছেন বাবা-মায়েরা। আগের মতো ঝক্কি পোহাতে হচ্ছে না মোটেও।
একই ধরনের আরেকটি পোশাক হচ্ছে কো-অর্ড। একই রঙ কিংবা প্রিন্ট কাপড়ে এই টু-পিস পোশাকটিতে সাধারণত বেল বটমের মতো প্যান্ট আর ক্রপ টপ থাকে। টপের ক্ষেত্রে স্লিভলেস থেকে শুরু করে ওয়ান-স্লিভ, স্প্যাগেটি স্ট্র্যাপ ইত্যাদি বিভিন্ন ধরনের স্টাইল আনা হয়েছে— ছোট্ট ফুটফুটে পটের বিবিদের সাজগোজটা এই গরমেও বহাল থাকবে।
ঢাকা কলেজ বা এর আশপাশের এলাকায় পাওয়াটা কঠিন হলেও বসুন্ধরা সিটি ও যমুনা ফিউচার পার্কের শপিং মলগুলোতে খুব সহজেই বাচ্চাদের জন্য কো-অর্ড ও জাম্পস্যুট পাওয়া যাবে। এছাড়া বিভিন্ন অনলাইন শপের কাস্টমাইজড অপশন থেকেও বেছে নিতে পারেন আপনার বাচ্চার জন্য পছন্দের পোশাকটি।
এ ধরনের পোশাক সেট হিসেবে ১৫০০ থেকে ২০০০ টাকার মধ্যে পাওয়া যায়। তবে ডিজাইনভেদে দামের তারতম্য থাকতে পারে।
সান ড্রেস, কামিজ ও থোব
হাঁসফাঁস এই গরমে মেয়ে বাচ্চাদের মাঝে ভীষণ পছন্দের পোশাক হচ্ছে সানড্রেস ও কামিজ। হালকা সুতি বা লিনেন দিয়ে তৈরি এই পোশাকগুলোত বাতাস আসা-যাওয়া করে এবং সহজে পরা যায়। প্যাস্টেল ও উজ্জ্বল রঙে আঁকা বিভিন্ন প্যাটার্ন ও ছিমছাম কাটিংয়ের এই সান ড্রেস এবং কামিজগুলো বেশ ট্রেন্ডি এবং আরামদায়ক।

অতিরিক্ত গরম ও ত্বকের জ্বালাপোড়া এড়াতে স্লিভলেস বা ছোট হাতার পোশাক বেছে নেওয়া যায়। তবে গরম বলে কিন্তু খুদে রাজকুমারদের সাজগোজের বিষয়টিও ভুলে যাওয়া যাবে না। তাদের জন্য এ সময় সবচেয়ে মানানসই থোব বা পাঞ্জাবি। তবে আরামের কথা মাথায় রাখলে পাঞ্জাবি না পরে থোব বেছে নেওয়াই বুদ্ধিমানের কাজ হবে।
বাচ্চাদের এই পোশাকগুলো মান, ব্র্যান্ড ও দোকানের উপর ভিত্তি করে ৫০০ থেকে ২০০০ টাকার মধ্যে পাওয়া যাবে।
হালকা শার্ট ও ব্লাউজ
পারিবারিক আয়োজন বা একটু বেশি আনুষ্ঠানিক পরিসরে ছেলে বাচ্চাদের জন্য সুতি শার্ট আর মেয়ে বাচ্চাদের জন্য বেলুন হাতার ব্লাউজে সামনে ফিতা দিলে খুব সুন্দর মানাবে।
বিভিন্ন উপলক্ষের ওপর নির্ভর করে প্যাস্টেল শেড ও ছিমছাম প্রিন্টে স্কার্ট, প্যান্ট, শর্টস সবই মানিয়ে যাবে। সাদা বা নীলের মতো হালকা রঙে এই পোশাকগুলোতে ছেলে বা মেয়ে, সব বাচ্চাকেই দেখাবে দারুণ ফ্যাশনেবল। নূরজাহান মার্কেট বা ঢাকা কলেজে এই পোশাকগুলো প্রতি পিস ৩০০ থেকে ৫০০ টাকার মধ্যে পাওয়া যাবে।
ছোট হোক বড় হোক, ফ্যাশনের দুনিয়ায় সবাই সমান। তাই শিশুদেরকে সারা বছর ফ্যাশনেবল রাখতে চাইলে বাবা-মাকে নজর রাখতে হবে আরামদায়ক ফ্যাশনের দিকে। কোনো পোশাকে যাতে শরীর বা মনে অস্বস্তি তৈরি না হয়।
মডেল: আমায়রা, শেহরান, ইব্রাহীম, যাজিলা ও সঞ্জয়
স্টাইলিং: সোনিয়া ইয়াসমিন ইশা
ওয়ার্ড্রোব: শিশু পরিবহন, ফাইকা জাবীন সিদ্দিকা
মেকআপ ও কেশসজ্জা: পিয়াস ও তার দল
অনুবাদ করেছেন অনিন্দিতা চৌধুরী
Comments