ইরান বিষয়ে ট্রাম্প-তুলসীর ‘এই বিরোধ, এই ঐকমত্য’

মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পের সঙ্গে তার জাতীয় গোয়েন্দা পরিচালক তুলসী গ্যাবার্ড। ছবি: রয়টার্স

ইরান বিষয়ে মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পের সঙ্গে তার জাতীয় গোয়েন্দা পরিচালক তুলসী গ্যাবার্ডের 'এই বিরোধ, এই ঐকমত্য' অবস্থা চলছে।

কেননা ট্রাম্প বলেছেন, ইরানের পারমাণবিক অস্ত্র তৈরির বিষয়ে তুলসী ভুল বলেছেন।

সম্প্রতি মার্কিন সিনেটের ইন্টেলিজেন্স কমিটির শুনানিতে তুলসী বলেছিলেন, 'আইসি এখনো মনে করে, ইরান পারমাণবিক অস্ত্র তৈরি করছে না এবং সর্বোচ্চ নেতা খামেনি ২০০৩ সালে স্থগিত করা পারমাণবিক অস্ত্র কর্মসূচির অনুমোদন দেননি।' 

আল জাজিরা বলছে, গত ২৫ মার্চ কংগ্রেসে জমা দেওয়া তুলসীর প্রতিবেদনের ওপর সন্দেহ প্রকাশ করেন ট্রাম্প এবং তা পুনর্মূল্যায়ন করতে বলেন।

গত মঙ্গলবার ট্রাম্প সাংবাদিকদের বলেন, তিনি মনে করেন না যে, গোয়েন্দাদের মূল্যায়ন তার দাবির সঙ্গে সাংঘর্ষিক। একইসঙ্গে দাবি করেন, ইরান এখন পারমাণবিক অস্ত্র উন্নয়নের চূড়ান্ত পর্যায়ে রয়েছে।

গতকাল শুক্রবার ট্রাম্প আরও এক ধাপ এগিয়ে যান। সেদিন এক সাংবাদিক তাকে জিজ্ঞেস করেন, 'আপনার কাছে কী গোয়েন্দা তথ্য আছে, যা প্রমাণ করে ইরান পারমাণবিক অস্ত্র বানাচ্ছে? আপনার গোয়েন্দারা বলছে, তাদের কাছে কোনো প্রমাণ নেই।'

ট্রাম্প উত্তরে বলেন, 'তাহলে আমার গোয়েন্দারা ভুল।'

গোয়েন্দা কর্মকর্তাদের মধ্যে কে এটা বলেছেন?- প্রশ্ন করেন ট্রাম্প।

সাংবাদিক জবাব দেন, 'আপনার জাতীয় গোয়েন্দা পরিচালক তুলসী গ্যাবার্ড।'

ট্রাম্প বলেন, 'তিনি ভুল।'

এর দুই ঘণ্টার মধ্যেই তুলসী ট্রাম্পের পক্ষে অবস্থান নেন।

তিনি সামাজিকমাধ্যমে লেখেন, 'আমেরিকার কাছে এমন গোয়েন্দা তথ্য আছে যে, ইরান এমন এক পর্যায়ে পৌঁছেছে, যেখানে তারা চাইলে কয়েক সপ্তাহ থেকে কয়েক মাসের মধ্যে পারমাণবিক অস্ত্র তৈরি করতে পারে। প্রেসিডেন্ট ট্রাম্প স্পষ্ট করে বলেছেন, এটা ঘটতে দেওয়া যাবে না এবং আমি তার সঙ্গে একমত।'

গার্ডিয়ান বলছে, এই সপ্তাহে দুবার ট্রাম্পকে সাংবাদিকরা কংগ্রেসে তুলসীর গত মার্চের সাক্ষ্য নিয়ে প্রশ্ন করেন, যেখানে তিনি বলেছিলেন, '১৮টি গোয়েন্দা সংস্থার সমন্বয়ে গঠিত মার্কিন গোয়েন্দা বিভাগ এখনো এই মূল্যায়নেই রয়েছে।'

উভয় ক্ষেত্রেই ট্রাম্প তুলসীর ওই বক্তব্যকে খারিজ করে দেন, যদিও সেটি তুলসীর ব্যক্তিগত মত নয়, গোয়েন্দা বিশ্লেষকদের সম্মিলিত মূল্যায়ন।

শুক্রবার ট্রাম্প যখন সাংবাদিকদের বলেন 'তিনি ভুল', তখন তুলসী এক্সে (সাবেক টুইটার) লেখেন যে- 'অসাধু মিডিয়া' তার সাক্ষ্যকে 'প্রসঙ্গের বাইরে টেনে নিয়ে গেছে এবং বিভাজন তৈরির উদ্দেশ্যে ভুয়া খবর ছড়াচ্ছে'।

তুলসী তার ইরান সংক্রান্ত সাক্ষ্যের একটি দীর্ঘ ভিডিও শেয়ার করেন, যেখানে উল্লেখ ছিল- ইরান ২২ বছর আগে পারমাণবিক অস্ত্র তৈরির চেষ্টা ত্যাগ করেছে।

সাক্ষ্যে তুলসী আরও বলেন, গোয়েন্দা বিভাগ ঘনিষ্ঠভাবে পর্যবেক্ষণ করছে যে- ইরান পারমাণবিক অস্ত্র কর্মসূচির অনুমোদন পুনরায় দেয় কি না। গত এক বছরে ইরানে পারমাণবিক অস্ত্র নিয়ে প্রকাশ্য আলোচনা করার দীর্ঘদিনের নিষেধাজ্ঞার ব্যত্যয় লক্ষ্য করা গেছে, যা ইরানের সিদ্ধান্ত গ্রহণকারী মহলে পারমাণবিক অস্ত্রপন্থিদের সাহস জোগাচ্ছে বলেই ধারণা। ইরানের সমৃদ্ধ ইউরেনিয়াম মজুদ এখন সর্বোচ্চ পর্যায়ে এবং এটি এমন একটি দেশের জন্য নজিরবিহীন, যার পারমাণবিক অস্ত্র নেই।

তুলসীর ইউটিউব চ্যানেলে ১০ দিন আগে প্রকাশিত একটি ভিডিওতে তিনি হিরোশিমায় তার সাম্প্রতিক সফরের কথা বলেন এবং 'পারমাণবিক ধ্বংসযজ্ঞের' ব্যাপারে সতর্ক করেন।

এ বিষয়টিও সম্ভবত ট্রাম্পকে ক্ষুব্ধ করে তোলে বলছে গার্ডিয়ান।

Comments

The Daily Star  | English

Remittance-rich Sylhet ranks poorest in new index

Long seen as the “London of Bangladesh” for its foreign earnings and opulent villas, Sylhet has been dealt a sobering blow. The country’s first Multidimensional Poverty Index (MPI) has revealed that the division is, in fact, the poorest in Bangladesh when measured by access to education, healthc

3h ago