এবিসি নিউজের বিরুদ্ধে মানহানি মামলায় দেড় কোটি ডলার পাবেন ট্রাম্প

এবিসি নিউজের তারকা উপস্থাপক স্টেফানোপোলাসের সঙ্গে ট্রাম্প। ফাইল ছবি: রয়টার্স (২০২০)
এবিসি নিউজের তারকা উপস্থাপক স্টেফানোপোলাসের সঙ্গে ট্রাম্প। ফাইল ছবি: রয়টার্স (২০২০)

মার্কিন গণমাধ্যম এবিসি নিউজ মানহানির মামলা মীমাংসার জন্য দেশটির নবনির্বাচিত প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পকে ১৫ মিলিয়ন বা দেড় কোটি ডলার দিতে সম্মত হয়েছে।

আজ রোববার এই তথ্য জানিয়েছে এএফপি।

মামলায় অভিযোগ ছিল, মার্কিন গণমাধ্যমের তারকা উপস্থাপক জর্জ স্টেফানোপোলাস রিপাবলিকান দলের নেতা ট্রাম্প প্রসঙ্গে মিথ্যা তথ্য দিয়েছিলেন। তিনি উল্লেখ করেছিলেন, ট্রাম্প এক নারীকে 'ধর্ষণের জন্য দায়ী'।

স্টেফানোপোলাস চলতি বছরের ১০ মার্চ সাক্ষাৎকার নেয়ার সময় বারবার এই মন্তব্য করেন। তিনি এক কংগ্রেসওম্যানকে প্রশ্ন করছিলেন, কেন তিনি ট্রাম্পকে সমর্থন করেন।

গত বছর অপর এক মামলায়, জুরি রায় দেয় যে ট্রাম্প 'যৌন হয়রানির' জন্য দায়ী। তবে নিউইয়র্কের আইনে যৌন হয়রানি ও ধর্ষণের আলাদা সংজ্ঞা রয়েছে।

শনিবারের এই মীমাংসার অংশ হিসাবে এবিসি একটি বিবৃতি প্রকাশ করবে, যেখানে স্টেফানোপোলাসের মন্তব্যের জন্য 'অনুতাপ' প্রকাশ করা হবে।

এই বিষয়টি নিয়ে সবচেয়ে আগে প্রতিবেদন প্রকাশ করে ফক্স নিউজ ডিজিটাল।

আদালতের বাইরের এই সমঝোতা অনুযায়ী, এবিসি নিউজ একটি 'প্রেসিডেন্সিয়াল ফাউন্ডেশন ও মিউজিয়াম' প্রতিষ্ঠার জন্য দেড় কোটি ডলার দান করবে, যা মামলার বাদী ট্রাম্প বা তার পক্ষে প্রতিষ্ঠা করা হবে, যেমনটা আগের মার্কিন প্রেসিডেন্টরা করেছিলেন।

এছাড়া এবিসি আরো ১০ লাখ ডলার দেবে ট্রাম্পের আইনগত খরচের জন্য।

মীমাংসার শর্ত অনুযায়ী, এবিসি চলতি বছরের ১০ মার্চ অনলাইনে প্রকাশিত প্রতিবেদনের নিচে সংশোধনী যোগ করবে।

এই বার্তায় লেখা থাকবে, 'এবিসি নিউজ ও জর্জ স্টেফানোপোলাস প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড জে. ট্রাম্প সম্পর্কে ১০ মার্চ ২০২৪ এবিসি'র 'দিস উইক' অনুষ্ঠানে কংগ্রেস সদস্য ন্যান্সি ম্যাসের সাক্ষাৎকারে মি. ট্রাম্পকে নিয়ে করা মন্তব্যের জন্য অনুতপ্ত।'

সাউথ ক্যারোলাইনার কংগ্রেসওম্যান ন্যান্সি ম্যাস। ফাইল ছবি: রয়টার্স
সাউথ ক্যারোলাইনার কংগ্রেসওম্যান ন্যান্সি ম্যাস। ফাইল ছবি: রয়টার্স

এবিসি নিউজের মুখপাত্র এক বিবৃতিতে বলেছেন, আদালতের শর্ত মেনে মামলার মিটমাট হওয়ায় উভয় পক্ষই সন্তুষ্ট।

২০২৩ সালে, নিউ ইয়র্কের এক আদালত অভিযোগ তুলেছিলো যে, ট্রাম্প ১৯৯৬ সালে একটি দোকানের ড্রেসিং রুমে ই. জিন ক্যারলকে যৌন নির্যাতন করেছিলেন। ওই ম্যাগাজিনের কলামিস্টকে মানহানির জন্য দোষী সাব্যস্ত করা হয়েছিল।

পরবর্তীতে এই মামলার বিচারক লুইস ক্যাপলান জুরির সিদ্ধান্ত সম্পর্কে বলেন, 'ক্যারল প্রমাণ করতে পারেননি যে ট্রাম্প তাকে ধর্ষণ করেছিলেন। মূলত নিউ ইয়র্ক দণ্ডবিধিতে ধর্ষণের নির্দিষ্ট সংজ্ঞা রয়েছে।'

১০ মার্চের ওই টেলিভিশন অনুষ্ঠানের সম্প্রচারে স্টেফানোপোলাস সাউথ ক্যারোলাইনার রিপাবলিকান কংগ্রেস সদস্য ন্যান্সি ম্যাসকে প্রশ্ন করেন, (ধর্ষণের এই ঘটনা জেনেও) তিনি কীভাবে ট্রাম্পকে সমর্থন করতে পারেন।

সে সময় স্টেফানোপোলোস বলেন, 'বিচারক ও দুইটি পৃথক জুরি ট্রাম্পকে ধর্ষণের জন্য দায়ী বলেছে।'

তবে এই তথ্য ভুল ছিল।

স্টেফানোপোলাস তার এই অনুষ্ঠানে অন্তত ১০ বার ট্রাম্পের এ বিষয়টি উল্লেখ করেন।

রায়ের আগে, একজন ফেডারেল ম্যাজিস্ট্রেট বিচারক ট্রাম্প এবং স্টেফানোপোলাসকে নির্দেশ দিয়েছিলেন পরের সপ্তাহে শপথ নিয়ে প্রমাণ দিতে।

পাশাপাশি, ট্রাম্প কমলা হ্যারিসের সঙ্গে একটি সাক্ষাত্কার নিয়ে বিবিসির মার্কিন সম্প্রচার অংশীদার সিবিএসের বিরুদ্ধে 'প্রতারণামূলক আচরণের' অভিযোগ এনে মামলা ঠুকেছিলেন।

২০২৩ সালে সিএনএনের বিরুদ্ধে ট্রাম্পের মানহানি মামলা খারিজ করে দেন এক বিচারক। ওই মামলায় ট্রাম্প অভিযোগ করেছিলেন, নেটওয়ার্কটি তাকে অ্যাডলফ হিটলারের সঙ্গে তুলনা করেছিলো।

তিনি নিউ ইয়র্ক টাইমস এবং ওয়াশিংটন পোস্টের বিরুদ্ধে মামলা করেছিলেন। যদিও মামলাগুলো পরে খারিজ হয়ে যায়।

Comments

The Daily Star  | English

DC conference-2025: DCs push to override local reps’ powers

Deputy commissioners yesterday proposed reducing the authority of local representatives while expanding their own administrative powers in various sectors.

8h ago