ট্রাম্পের নতুন স্বাস্থ্যমন্ত্রী কেনেডি ভ্যাকসিনে বিশ্বাসী নন

ট্রাম্প ও কেনেডি জুনিয়র। ফাইল ছবি: রয়টার্স
ট্রাম্প ও কেনেডি জুনিয়র। ফাইল ছবি: রয়টার্স

যুক্তরাষ্ট্রের ঐতিহ্যবাহী কেনেডি পরিয়াব্রের সদস্য রবার্ট এফ কেনেডি জুনিয়রকে বৃহস্পতিবার স্বাস্থ্য ও মানবিক সেবা (এইচএইচএস) দপ্তরের মন্ত্রী হিসাবে নিয়োগ দিয়েছেন দেশটির প্রেসিডেন্ট-ইলেক্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প।

আজ শুক্রবার ডয়চে ভেলে, সিএনএনসহ অন্যান্য গণমাধ্যমে তার নিয়োগের বিষয়টি উল্লেখ করা হয়েছে।

আরএফকে জুনিয়র হিসাবেই বেশি পরিচিত তিনি। ভ্যাকসিনের কার্যকারিতা নিয়ে প্রশ্ন তুলে একাধিকবার আলোচনায় এসেছেন তিনি।

যুক্তরাষ্ট্রের স্বাস্থ্য ও মানবিক সেবা দপ্তর ওষুধ, ভ্যাকসিন, খাদ্য নিরাপত্তা থেকে গবেষণা ও স্বাস্থ্যে সামাজিক নিরাপত্তার বিষয়টি দেখে। এই দপ্তরের জন্য দায়িত্বশীল মন্ত্রীকেই স্বাস্থ্যমন্ত্রী বলা হয়। 

প্রেসিডেন্ট নির্বাচনে স্বতন্ত্র প্রার্থী হিসাবে লড়তে চেয়েছিলেন আরএফকে জুনিয়র। কিন্তু গত আগস্টে তিনি দৌড় থেকে সরে যান এবং ট্রাম্পকে সমর্থন করেন। তখনই ঠিক হয়েছিল, ট্রাম্প প্রেসিডেন্ট হলে তার প্রশাসনে থাকবেন আরএফকে জুনিয়র।

তবে সরে গেলেও অনেক অঙ্গরাজ্য কেনেডিকে ব্যালট থেকে বাদ দিতে অস্বীকার করে। তিনি কোনো ইলেক্টোরাল ভোট না পেলেও সার্বিকভাবে পপুলার ভোটের শুন্য দশমিক পাঁচ শতাংশ পেয়েছেন, যা সংখ্যায় সাত লাখ ২৪ হাজার ৬০৯। তার চেয়ে ভোট বেশি পেয়েছেন গ্রিণ পার্টির জিল স্টেইন, কমলা হ্যারিস ও ডোনাল্ড ট্রাম্প।

কার্যত, নির্বাচনে না থেকেও কেনেডি পেছনে ফেলেছেন চেইস অলিভার ও অন্যান্য প্রার্থীদের।  

আরএফকে জুনিয়রকে এইচএইচএস দপ্তরের মন্ত্রী করার পর ট্রাম্প তার সামাজিক মাধ্যম ট্রুথ সোশ্যালে বলেছেন, 'অনেকদিন ধরে অ্যামেরিকাকে ধ্বংস করছে ওষুধ কোম্পানি ও ইন্ডাস্ট্রিয়াল ফুড কমপ্লেক্সগুলো। তারা জনস্বাস্থ্য নিয়ে মিথ্যা তথ্য ছড়াচ্ছে। কেনেডি আবার অ্যামেরিকাকে মহান ও স্বাস্থ্যবান করবেন।'

আরএফকে জুনিয়র সম্পর্কে যা জানা যায়

মার আ লাগোর এক অনুষ্ঠানে ভক্তদের সঙ্গে সেলফি তুলছেন কেনেডি জুনিয়র। ফাইল ছবি: রয়টার্স
মার আ লাগোর এক অনুষ্ঠানে ভক্তদের সঙ্গে সেলফি তুলছেন কেনেডি জুনিয়র। ফাইল ছবি: রয়টার্স

তিনি অ্যামেরিকার বিখ্যাত কেনেডি পরিবারের সদস্য। পরিবেশ আইনজীবী হিসাবে তিনি সুনাম অর্জন করেছেন।  

তিনি বেশ কয়েকটি বড় সংস্থার বিরুদ্ধে সফল আইনি লড়াই করেছেন।

গত দুই দশক ধরে তিনি বেশ কিছু ভ্যাকসিনের বিরোধিতা করে এসেছেন। এর মধ্যে কোভিড ১৯ এর ভ্যাকসিনও অন্তর্ভুক্ত। এই ভ্যাকসিনকে তিনি 'ভয়ংকর' বলে উল্লেখ করেছেন।

আরএফকে জুনিয়র অবশ্য দাবি করেন, তিনি ভ্যাকসিন বিরোধী নন। তিনি কখনো মানুষকে ভ্যাকসিন নিতে মানা করেন না। কিন্তু ভ্যাকসিন নিয়ে নিজের বিরোধিতার কথা জানান। তিনি এটাও বলেছেন, কোনো ভ্যাকসিনই সম্পূর্ণ নিরাপদ ও কার্যকর নয়। বাচ্চাদের ভ্যাকসিন দেয়ার ক্ষেত্রে জাতীয় নীতিমালা না মানার কথাও তিনি বলেছেন।

বিশ্ব স্বাস্থ্যসংস্থা অবশ্য দাবি করে, ভ্যাকসিনের জন্য প্রতিবছর ৫০ লাখ মৃত্যু ঠোকানো যায়।

কেনেডি বলেছেন, তিনি খাওয়ার পানি (বাংলাদেশে মিনারেল ওয়াটার নামে পরিচিত) সরবরাহকারীদের বলবেন, তারা যেন পানিতে ফ্লোরাইড না মেশান। তবে কেন মানা করবেন, তা জানাননি তিনি।

ফ্লোরাইড দাঁতকে শক্ত করে এবং সুস্বাস্থ্যের ক্ষেত্রে এই উপকরণের উপকারিতা আছে মনে করা হয়।

তিনি আরো এমন অনেক দাবি করেন, যা বিজ্ঞান সমর্থন করে না।

যেমন, তিনি তিনি প্রশ্ন তুলেছেন আদতে এইচআইভি ভাইরাসই এইডসের কারণ কি না?

তিনি এটাও দাবি করেছেন অ্যান্টিডিপ্রেশন পিল খাওয়ার জন্য স্কুলে গুলি চালানোর ঘটনা বাড়ছে।

সব মিলিয়ে, কেনেডির নিয়োগ প্রত্যাশিত হলেও ট্রাম্পের এবারের প্রশাসনের অন্যান্য নিয়োগের মতো তাকে নিয়েও অনেক আলোচনা-সমালোচনা চলছে।

Comments

The Daily Star  | English

Yunus returns home completing 4-day Japan tour

A flight of Singapore Airlines, carrying the CA landed at Hazrat Shahjalal International Airport at 12:15am on Sunday

3h ago